ঐতিহ্য আর ভারত যেন সমার্থক। ভারতের প্রাচীনতম রেলস্টেশনও সেরকম বহু ইতিহাসের সাক্ষী। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি ভারতে রেল ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর কোথায় কোথায় প্রথম গড়ে উঠেছিল রেলস্টেশন, তা অনেকেই জানেন। এই রেলস্টেশনগুলি বর্তমানে নানা ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। এই প্রতিবেদন ভারতের প্রাচীনতম সেইসব রেল স্টেশনগুলি নিয়েই।

ভারতের রেলব্যবস্থা বিশ্বের বৃহত্তম, তা প্রাচীনতম ও ব্যস্ততমও বটে। এই বিশাল নেটওয়ার্কে বেশ কিছু স্টেশন রয়েছে, তাকে ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস, নানা কাহিনির ঘনঘটা। সুবিশাল ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে একযোগে শুরু হয়েছিল রেল-ব্যবস্থা। সেইসব স্টেশন কথা একনজরে।

বারোগ রেলস্টেশন: কালকা ও সিমলা রেললাইনে অবস্থিত বারোগ রেলওয়ে স্টেশন। হিমাচল প্রদেশের পাহাড়ে অবস্থিত ছোট্ট একটি রেলস্টেশন এটি। তা মর্যাদা পেয়েছে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে। স্টেশনটির নামকরণ করা হয়েছে কর্নেব বারোগের নামে। ১৯০৩ সালে উদ্বোধন হওয়া প্রাচীন এই স্টেশনে রয়েছে স্কটিশ শৈলীর ছাপ।

পুরনো দিল্লি রেলস্টেশন: ১৮৬৪ সালে কাজ শুরু হয় পুরনো দিল্লি রেলস্টেশনের। তারপর ১৯০৩ সালে বর্তমান রূপ পায়। দিল্লির চাঁদনি চকের কাছে অবস্থিত পুরনো দিল্লির এই রেলস্টেশনটির পরিকাঠামো লাল কেল্লার আদলে। উত্তর ভারতের ব্যস্ততম রেলস্টেশনগুলির মধ্যে তা অন্যতম। প্রত্যেকদিন ২ লক্ষেরও বেশি যাত্রী পরিষেবা দেয় এই স্টেশন।

হাওড়া জংশন রেলস্টেশন: হাওড়া জংশন দেশের আরও একটি অন্যতম প্রাচীন রেলওয়ে স্টেশন। ১৮৫৪ সালে এই স্টেশনের কাজ শুরু হয়েছিল। এই স্টেশনটি শুধু ভারতের ব্যস্ততম নয়, বিশ্বের ব্যস্ততম রেলস্টেশন। এখানে মোট ২৩টি প্লাটফর্ম রয়েছে। প্রতিদিন ১০ লক্ষেরও বেশি যাত্রী পরিষেবা মেলে এখানে। দৈনিক ৬০০টিরও বেশি ট্রেন চলাচল করে।

ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস: ভারতের প্রাচীনতম রেলস্টেশনের অন্যতম ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাসে রয়েছে গথিক স্থাপত্যের চমৎকার উদাহারণ। এই স্টেশনের কাজ শুরু হয় ১৮৫৩ সালে। ১৮৮৮ সালে বর্তমান রূপ পায়। দেশের সবথেকে বেশি ছবি তোলা রেলস্টেশন হিসেবে তা বিখ্যাত। স্টেশনটি ভিক্টোরিয়া টার্মিনাস হিসেবেও পরিচিত। মুম্বইয়ের ব্যস্ততম রেলস্টেশন ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজে জায়গা করে নেয়।

লখনউ চারবাগ রেলস্টেশন: লখনউ রেলওয়ে স্টেশন শুধু সৌন্দর্যে অতুলনীয়। এটিও প্রাচীনতম রেলস্টেশনের মর্যাদা পায়। ১৯১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল এই সুন্দর রেলস্টেশন। রাজস্থানি ও মুঘল স্থাপত্যের নিদর্শন রয়েছে এই স্টেশনে। চালবাগ রেলস্টেশনে ১৯১৬ সালে জওহরলাল নেহরু দেখা করেছিলেন মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে। উঁচু কোনও জায়গা থেকে চারবাগ রেলস্টেশনটিকে দেখলে দাবা বোর্ডের মতো মনে হয়।
