যুবরাজের হাতের বন্দুকের গুলি চললে মৃত্যু নিশ্চিত ছিল কাউন্সিলর (councilor) সুশান্ত ঘোষের। শুধুমাত্র এইবার নয়, আগেও খুনের ছক কষেছিল ইকবাল, সেই দাবিই করছে কসবা কাণ্ডের মূলচক্রী ইকবাল ওরফে আফরোজ। তবে হামলার কারণ নিয়ে পুলিশকে বারবার বিভ্রান্ত করার পথে ইকবাল। এই ঘটনায় এখনও সন্দেহভাজন এক যুবকের খোঁজ চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। তবে শহরের কালিন্দির মতো জায়গায় দুষ্কৃতীরা ঘর নিয়ে থাকার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা ঘর ভাড়া দেওয়া নিয়ে নতুন চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।

কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলা চালানোর ঘটনায় শনিবারই গ্রেফতার হয় মূল চক্রী ইকবাল। প্রাথমিকভাবে খুনের উদ্দেশে ভাড়াটে খুনি আনার কথা অস্বীকার করলেও পরে ইকবাল দাবি করে সুশান্ত ঘোষকে সে আগেও দুবার খুনের ছক কষেছিল। কারণ হিসাবে জমি বিবাদের ভুয়ো তথ্যও পুলিশকে পেশ করে ইকবাল। তবে এতবার খুনের ছক কষার জন্য ভাড়াটে খুনি থেকে অস্ত্র কোথা থেকে জোগাড় করেছিল ইকবাল, তা নিয়ে তদন্তে কলকাতা পুলিশ। জেরায় উঠে আসে বন্দুক হাতে হামলা চালানো যুবরাজকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়েছিল ইকবালই। আর এই আগ্নেয়াস্ত্র সে জোগাড় করেছিল বিহারের (Bihar) মুঙ্গেরের (Munger) আরেক ইকবাল নামে ব্যক্তির কাছ থেকে। কলকাতা পুলিশ সেই ইকবালের অনুসন্ধান চালাচ্ছে।

হামলার দিন ব্যবহৃত নাইন এমএম পিস্তলই (9mm pistol) একমাত্র আগ্নেয়াস্ত্র নয় যা ইকবাল ওরফে আফরোজের কাছে ছিল। জেরার সূত্র ধরে রবিবার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ড সংলগ্ন এলাকার খালে ডুবুরি নামিয়ে অনুসন্ধান চালানো হয় আরেকটি আগ্নেয়াস্ত্রের সন্ধানে। তবে কেন হামলা সুশান্তর উপর তা নিয়ে এখনও পুলিশকে বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছে আফরোজ। তার দাবি স্থানীয় হায়দার আলির সঙ্গে একটি গোডাউনের দখলদারি নিয়ে বিবাদে সুশান্তকে টার্গেট করে সে। এরপরই হায়দার আলির দাবি তাঁর সঙ্গে ইকবালের কোনও বিবাদ নেই। অন্যদিকে হায়দারের সঙ্গে বিবাদ হলে কেন টার্গেট করা হবে সুশান্তকে এই প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই ইকবালের কাছে। একদিকে ইকবালের মুঙ্গের যোগ, অন্যদিকে তিন তিনবার হামলার তত্ত্বে বড় মাথার হাত দেখছে রাজনৈতিক মহল।

পুলিশের জেরায় যুবরাজ জানিয়েছে বিহারের জামুই (Jamui) থেকে হাওড়ায় এসে গঙ্গা পার হয়ে লেকটাউনের (Lake Town) কাছে কালিন্দিতে পৌঁছায় সে ও তার দুই সঙ্গী। সেখানে একটি আবাসনের এক কেয়ারটেকারের ঘরে ভাড়া নেয় তারা। আর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরে কালিন্দি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে স্বাভাবিকভাবে। কীভাবে খুনের সুপারি নেওয়া যুবকরা এলাকায় ঘর নিয়ে থাকল, তা নিয়ে খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টাও চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে পুলিশ খোঁজ চালাচ্ছে সেই কেয়ারটেকারেরও।

