Sunday, August 24, 2025

ওয়াকফ বিল সংশোধনের নামে ধর্মীয় ঐক্যে আঘাতের ষড়যন্ত্র কেন্দ্রের! প্রতিরোধের ডাক তৃণমূলের

Date:

ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি করা বিজেপি এবার ওয়াকফ বিল (WAQF Bill) সংশোধনের নামে দেশের ধর্মীয় ঐক্যে আঘাতের ষড়যন্ত্র করছে। শনিবার, রানি রাসমণি রোডে ওয়াকফ বিলের সংশোধনীর প্রতিবাদ সভা থেকে গর্জে উঠলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee), কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), মন্ত্রী জাভেদ খান (Javed Khan)-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব।

তৃণমূলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতায় টিকে থাকতে ধর্মীয় বিভাজনের চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তাই ওয়াকফ বিল সংশোধনের নামে দেশের ধর্ম নিরপেক্ষতা ধ্বংস করার খেলায় মেতেছে। দেশের সার্বভৌমত্ব, সংহতি ও ঐক্য ধ্বংসের এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। শনিবার ধর্মতলার (Dharmatala) রানি রাসমণি রোডে ওয়াকফ বিল বিরোধী দলের সংখ্যালঘু সমাবেশ থেকে দেশের সংহতি রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

সংখ্যালঘু সমাবেশের মঞ্চ থেকে একযোগে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন কল্যাণ-ফিরহাদ। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee) অভিযোগ করেন, এবার সংখ্যালঘু মুসলিমদের বাকি সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ধর্মের লড়াই হতে দেবে না। দরকার হলে আমরা রক্ত দেব, কিন্তু হিন্দু-মুসলিম ঐক্য ধ্বংস হতে দেব না। দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ করতে দেব না। প্রাণ দিয়ে তা রক্ষা করব।

ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) বলেন, শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিজেপি ধর্মের বিভাজন তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। কে কী খাবে, কী পরবে তা ঠিক করে দিচ্ছে ওরা। অন্যথায় পিটিয়ে মারছে। বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যে সেটাই ঘটছে বারবার। এ জিনিস আর বরদাস্ত করব না আমরা। ওরা হিন্দু-মুসলিম লড়াই লাগাতে চায়, ওদের প্ররোচনায় কেউ পা দেবেন না।

কল্যাণের কথায়, ওয়াকফ (WAQF) আল্লার সম্পত্তি। তা সংরক্ষণের জন্য সংবিধান একটা সিস্টেম করে দিয়েছে। মোদি সরকার সেটাকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। চাইছে মুসলিম সম্পত্তিগুলির দখল নিতে। ওয়াকফ বিল সংশোধনের নামে সংবিধানের (Constitution of India) ২৬ নম্বর ধারাকে আঘাত করছে।

সম্প্রতি বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়েছিলেন, এই বিল আইনে পরিণত হলে ওয়াকফ (WAQF) ব্যবস্থাই ধ্বংস হয়ে যাবে। কল্যাণ জানান, বহু দরগার (Dargah) কাগজপত্র নেই। তা বছরের পর বছর ধরে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে। এখন আইন করে সেই অধিকার কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এভাবে মুসলিম সম্প্রদায়ের আবেগ নিয়ে খেলছে বিজেপি। তিনি আরও বলেন, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির বা পুরীর মন্দিরের কমিটিতে শুধু হিন্দুরা থাকলে মুসলিমদের কমিটিতে কেন শুধু মুসলিম থাকবে না? নিরপেক্ষতার কথা যদি বলেন, তাহলে বিশ্বনাথ বা পুরীর মন্দিরে কমিটিতে হিন্দু ছাড়া অন্যদের রাখা হয়নি কেন?

ক্ষুব্ধ কল্যাণ বলেন, ওয়াকফ সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ করেছিলাম বলে বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly) আমার মা, বাবা তুলে নোংরা ভাষায় গালাগালি করেছিলেন। এইরকম একটা নোংরা লোক কীভাবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হল, আমি সেটাই ভাবছিলাম।

ফিরহাদ হাকিম বলেন, সংবিধান সবাইকে নিয়ে চলার কথা বলেছে, তা লঙ্ঘন করছে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতের সার্বভৌমত্ব ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দিচ্ছে মোদি সরকার। সব শ্রেণীর মানুষের ধর্ম আচরণ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নিজেদের ধর্ম অধিকার রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। এদিন তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে (Bangladesh) যেটা হচ্ছে সেটা অন্যায় হচ্ছে, সংখ্যালঘুদের (minority) রক্ষা করা সংখ্যাগুরুদের দায়িত্ব। কিন্তু বিজেপি সীমান্ত এলাকায় গিয়ে যেভাবে উসকানি দিচ্ছে সেটাও বরদাস্ত নয়। বিজেপি সর্বত্রই উস্কানি (provocation) দিয়ে বেড়ায়। ক্ষমতায় থাকার জন্য এসব করে। এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার লড়াই চলে যেতে হবে আমাদের।

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...
Exit mobile version