ইউরিন টেস্টেই জানা যাবে ফুসফুসে ক্যান্সারের উপস্থিতি! যুগান্তকারী গবেষণা কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে

দেশ তথা বিশ্বজুড়ে ফুসফুসের ক্যান্সারে (Lung cancer) আক্রান্তের সংখ্যা। একেবারে প্রথম ধাপে এই সংক্রমণ ধরার কোনও উপায় না থাকায় চিকিৎসা বিজ্ঞানকেও কার্যত সমর্পণ করতে হচ্ছে। এই অন্ধকারের মধ্যেই আশার আলো দেখাচ্ছে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Cambridge) গবেষণার রিপোর্ট। যেখানে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে ইউরিন টেস্টের মাধ্যমে লাং ক্যান্সার (Lung cancer) শনাক্ত করা সম্ভব! গবেষণাপত্র কোনও জার্নালে প্রকাশিত না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে তথ্য আপলোড হতেই আলোড়ন চিকিৎসক মহলে।

ফুসফুসের ক্যান্সারের চিকিৎসা থাকলেও রোগ দেরিতে ধরা পড়ার কারণে ডাক্তারদের কিছুই করার থাকেনা। ততদিনে ফুসফুস তার শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে অন্যান্য অঙ্গে। এইবার কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Cambridge) গবেষকরা রোগীর ইউরিন পরীক্ষার (Urine test) মাধ্যমে প্রাথমিক স্টেজে থাকা ফুসফুসের ক্যান্সার ধরার উপায় বের করেছেন। ইউকে ক্যান্সার রিসার্চের (UK Cancer Research) সহায়তায় এই গবেষণাটি করা হয়। কলকাতা বিশেষজ্ঞরা বলছেন যদি গোড়াতে ফুসফুসের ক্যান্সার শনাক্ত করা যায় তাহলে অনেক অকালমৃত্যু আটকানো সম্ভব। প্রাথমিক স্টেজের লাং ক্যান্সার (Lung cancer)চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়ে তোলা যায় বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। এবার প্রশ্ন, কীভাবে ইউরিন পরীক্ষা থেকে ফুসফুসের ক্যান্সার সম্পর্কে জানা যাবে? কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং জৈব প্রযুক্তি বিভাগের গবেষক লিলানা ফ্রুক এবং ড্যানিয়েল মুনোজ এম্পিনের এই গবেষণার প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল এমন কিছু সুলভ ও সহজ উপায় খোঁজ করা যার মাধ্যমে ফুসফুসের ক্যান্সারের ব্যাপারে আগেভাগেই অবগত হওয়া যায়। তখনই দেখা যায় ইউরিনে জম্বি কোষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই কোষের বংশবৃদ্ধি না হলেও ফুসফুসের ক্যান্সারের নিশ্চিত সূচক তো বটেই। ইনজেকশনের সঙ্গে বিক্রিয়ায় এই কোষ থেকে এক ধরনের পেপটাইট ক্লিভিং প্রোটিন বের হতে দেখা যায়।মূত্রের নমুনা থেকেই এই প্রোটিনকে চিহ্নিত করা সম্ভব। অবশ্যই গবেষণা একেবারে প্রাথমিক স্টেজে রয়েছে। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য প্রয়োজন বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। সেল কালচারের মাধ্যমে ল্যাবেই গবেষণা করা হয়েছে। কিন্তু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই প্রযুক্তি যদি ব্যবহারযোগ্য করতে হয় তাহলে তার আগে অবশ্যই হিউম্যান মডেলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রয়োজন হবে।

চিকিৎসক মহলের বিশেষজ্ঞরা এই গবেষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। প্রত্যেক বছর বিশ্বব্যাপী ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যাটা বেড়েই চলেছে। ভারতে প্রায় প্রত্যেক বছর ৭৩ হাজার মানুষ আক্রান্ত হন। পশ্চিমবঙ্গের পরিসংখ্যানও যথেষ্ট উদ্বেগের। সেক্ষেত্রে গবেষণাটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সাফল্য পেলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিপ্লব ঘটে যাবে বলে এখন থেকেই মনে করা হচ্ছে।