২০২১-এর পর ২০২৪-এও ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির (BJP)। সামনেই ২০২৬-এর বিধানসভা ভোট (Assembly Election 2026)। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো বিকল্প মুখ কই বঙ্গ বিজেপিতে! সংশয় তৈরি হয়েছে আরএসএসের (RSS) অন্দরেই। বিজেপির বর্তমান বঙ্গ নেতৃত্বের উপর আর ভরসা রাখতে পারছেন না গেরুয়া শিবির। সম্প্রতি আরএসএসের মুখপত্র ‘স্বস্তিকা’য় বঙ্গ বিজেপির মুখ শীর্ষক একটি নিবন্ধ প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে কি বঙ্গ বিজেপিতে নতুন মুখ আসছে?

দিলীপ ঘোষ (Delip Ghosh) থেকে শুরু করে সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) এবং শুভেন্দু অধিকারীও (Suvendu Adhikari) পরীক্ষিত। কিন্তু কেউই আশাতীত সাফল্য দিতে পারেনি। তবু সাফল্যের নিরিখে দিলীপ ঘোষ ও তৎকালীন সময়ে সাফল্যের ক্ষুদ্র সম্ভবনা দেখিয়েছিলেন মুকল রায় (Mukul Roy)। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপি ব্যর্থ বঙ্গ রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে। ২০২৪–এর লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই এই চর্চা চলছে গেরুয়া শিবিরে। সার্বিকভাবে কেউই বিরোধী মুখ হয়ে উঠতে পারেননি, তার ফলে সাফল্য আসছে না বলেই মনে করছে আরএসএস।

আরএসএসের মুখপত্র ‘স্বস্তিকা’র সাম্প্রতিকতম সংখ্যায় যে নিবন্ধ নিয়ে এত জল্পনা, সেটি ছিল ‘পশ্চিমবঙ্গে আদৌ কি মিটবে প্রকৃত বিরোধী মুখের অভাব?’ শীর্ষক। সেখানে স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে, সারা দেশেই মুখের রাজনীতি চলছে। একজন মুখ না থাকলে সে রাজ্যে সাফল্য আসেনি। মহারাষ্ট্র আর হরিয়ানায় প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বিজেপি জয় ছিনিয়ে এনেছে শুধু মুখ-রাজনীতির উপর ভর করে। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি বাংলার ক্ষেত্রেও। সম্ভব হয়নি ঝাড়খণ্ডের ক্ষেত্রেও। সেখানেও রাজনীতি স্লোগানধর্মী হওয়ায় বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাই আরএসএস মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে সাফল্য পেতে গেলে এমন একজন চাই, যিনি সার্বিকভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প মুখ হয়ে উঠতে পারবেন। ওই নিবন্ধে স্পষ্টভাবেই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিরোধী বিকল্প মুখ না থাকাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত বিরোধীহীন শাসন চালিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছেন বা হচ্ছেন। প্রকৃত রাজনৈতিক লড়াইয়ের সম্মুখীন তিনি হননি। আগামী দিনেও হবেন এমন সম্ভাবনা কার্যত নেই, তাও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। কেননা প্রকৃত বিকল্পের সন্ধান দিতে পারেনি আরএসএসের সেই নিবন্ধ।

ওই নিবন্ধে এমনও লেখা হয়েছে যে, সিপিএমের বিকল্প হয়ে উঠতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে তিলে তিলে তৈরি করেছেন। ২০ বছরের অদম্য লড়াই তাঁকে সেই জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। সেই আগুন যে বঙ্গ বিজেপির কারও মধ্যে নেই, তাও মেনে নিয়েছে আরএসএস। শুভেন্দু অধিকারী সেই জায়গা নেওয়ার চেষ্টা করলেও, এখনও সে অর্থে সাফল্য পাননি বা মুখ হয়ে উঠতে পারেননি। পারেননি আন্দোলনকে তুঙ্গে তুলে ধরে বিরোধিতায় সরব হতে। জ্বলন্ত সব ইস্যু হাতে পেয়েও ব্যর্থ হয়েছে বঙ্গ বিজেপির কুশীলবরা। তার ফলে ২০২৬-এও তেমন কোনও সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়নি বিজেপির সাফল্যের মুখ দেখার। বাংলা জানে, রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প মুখ নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে আশা-ভরসা, সেই বিশ্বাস তিনি তুলে ধরতে পেরেছেন বঙ্গবাসীর মনে।



আরও পড়ুন- কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণে শোকবার্তা মমতার

