বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে।বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৩ বছর পূর্তি হবে। দিনটি বাঙালি জাতির এক অনন্য গৌরবোজ্জ্বল দিন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দীর্ঘ ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে বাঙালি জাতি।

তিনি বলেন, আসন্ন বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আমি দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতা, ত্রিশ লাখ শহিদ, সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তি যোদ্ধাদের, যাদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সেইসব দেশ ও ব্যক্তিবর্গের প্রতি যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে নানাভাবে সহায়তা দিয়েছেন।

এরই পাশাপাশি, বিজয় দিবসের প্রাক্কালে মহম্মদ ইউনুসকে ফ্যাসিস্ট বলে তোপ দাগলেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বিরোধিতা করছে ইউনুস সরকার। মদত দিচ্ছে উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিকে। বিজয় দিবসের আগে দেশবাসীর উদ্দেশে তোপ দেগেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে। দীর্ঘ বিবৃতিতে হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রতি বিন্দুমাত্র সংবেদনশীল নয় মহম্মদ ইউনুস সরকার।এই সরকার গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণের প্রতি তাদের কোনও দায়বদ্ধতা নেই। তারা স্বাধীনতা-বিরোধী উগ্র-সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদত দিচ্ছে।

শেখ হাসিনা মনে করিয়ে দেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়। আমরা দায়িত্ব নিয়েই বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে গরীব, প্রান্তিক মানুষদের সরকারি ভাতার আওতায় আনা হয়। কৃষি উৎপাদনের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে দেশকে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করি। জলের কর আদায়ে ১৯৯৬ সালে ভারতের সঙ্গে গঙ্গা জল বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি করা হয়। ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ বাতিল করে আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম শুরু করি।


বাংলাদেশে যেভাবে ইউনুস সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেই বিষয়ে তোপ দেগে মুজিব কন্যা বলেন, দেশ বিরোধীরা নানা ষড়যন্ত্র করে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে। জনতার প্রতি ফ্যাসিস্ট ইউনুস সরকারের কোনও দায়বদ্ধতা নেই। ক্ষমতায় এসেই তারা জনকল্যাণকর প্রকল্পগুলোতে বাধা দিচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে কীভাবে বাংলাদেশের আমজনতার জন্য কাজ করেছে তার সরকার, তার বিশদ বিবরণও বিবৃতিতে তুলে ধরেছেন হাসিনা।

তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনীর আওতায় ছিল দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষ। তাদেরকে বিভিন্ন ভাতা দেওয়া হত। অধিকাংশ ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। টিসিবির আওতায় ৪৩ লক্ষ পরিবারের ফ্যামিলি কার্ড বাতিল করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে দেশের মানুষ। ক্ষুধার্ত মানুষ ডাস্টবিন থেকে খাবার তুলে খাচ্ছে। ফ্যাসিস্ট ইউনুসের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে বিষোদগার করা এবং তাদের কণ্ঠরোধ করা। বিপরীতে তারা স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র-সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রচ্ছন্নভাবে মদত দিয়ে যাচ্ছে।

–

–

–

–

–

–