Saturday, August 23, 2025

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বিরুদ্ধে সিবিআই এবং ইডির বহু অভিযোগ আছে। কিন্তু প্রেসিডেন্সি জেলের ভিতরে তার আলাদা একটি জগৎ গড়ে উঠেছে। সেখানে তিনি সম্পূর্ণ অন্য ভূমিকায়। একেবারে ক্রিকেটারের ভূমিকায় তাকে দেখা যায়।তিনি রীতিমতো ক্রিকেট খেলেন। শুধুমাত্র তাই নয়, তিনি জেলের ক্রিকেট দলের ‘ক্যাপ্টেন’!গত কয়েক দিন অবশ্য শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাঠে নামতে পারেননি। তবে তিনি ছিলেন নিজের দলের ‘মেন্টর’। তার সেই দল মঙ্গলবার বিপক্ষকে চার উইকেটে হারিয়ে লিগের ফাইনালে উঠেছে।যদিও, দীর্ঘ চেষ্টার পর সে দিনই তাকে নিজেদের হেফাজতে পেয়েছে সিবিআই।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মে মাসে সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন। সংশোধনাগারের ভিতরেই সেখানকার আবাসিকদের নিয়ে প্রতি বছর শীতকালে একটি ক্রিকেট লিগের আয়োজন করেন জেল কর্তৃপক্ষ। আইপিএলের ধাঁচে সেই লিগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পিপিএল’ (প্রেসিডেন্সি প্রিমিয়ার লিগ)। অংশগ্রহণকারী দলগুলির নামও আইপিএলের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়েছে। জেলের ক্রিকেট লিগের সেমিফাইনালে মঙ্গলবার মুখোমুখি হয়েছিল কেকেআর (কলকাতা নাইট রাইডার্স) এবং সিএসকে (চেন্নাই সুপার কিংস)। সুজয়কৃষ্ণর দল কেকেআর। তারা রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে পৌঁছে গিয়েছে ফাইনালে।

জানা গিয়েছে, ক্রিকেটের প্রতি বরাবরই ঝোঁক সুজয়কৃষ্ণের। বয়স ৬০ পেরোলেও সেই ঝোঁকে ভাটা পরেনি। এলাকার মানুষ জানেন, সুজয়কৃষ্ণ পাড়ার ক্লাবে চলে যেতেন সন্ধ্যার পরেই। ক্রিকেটে তো আগ্রহ ছিলই। ক্যারাম, তাস নিয়েও সময় কাটাতেন। প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে মনের মতো ক্রিকেট দল পান। তার আগ্রহ এবং দক্ষতা বিবেচনা করে তাকেই দলের অধিনায়ক নির্বাচন করা হয়। কিছু দিন খেলার পর অবশ্য তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। জেলের হাসপাতালে ছিলেন দীর্ঘ দিন।

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির মামলায় কিছু দিন আগে সুজয়কৃষ্ণকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু তাকে হেফাজতে নিতে চেয়ে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল সিবিআই। নিম্ন আদালত তাকে সশরীরে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছিল একাধিক বার। কিন্তু তিনি অসুস্থ থাকায় তাকে হাজির করানো যায়নি। জেল কর্তৃপক্ষ আদালতে তার মেডিক্যাল রিপোর্টও জমা দেন। সুজয়কৃষ্ণর জামিন এবং হেফাজত নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার বিচার ভবনের বিচারক সুজয়কৃষ্ণর চার দিনের সিবিআই হেফাজত মঞ্জুর করেন। রাতেই তাকে জেল থেকে বার করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। নিয়ে যাওয়া হয় জোকায় কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর রাত আড়াইটে নাগাদ তাকে নিজাম প্যালেসে সিবিআই হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগামী চার দিন সেখানেই থাকতে হবে তাকে।

ফাইনাল ম্যাচ আপাতত নির্ধারিত ২৪ ডিসেম্বর। বড়দিনের আগের দিন। আর সুজয়কৃষ্ণর সিবিআই হেফাজত ২১ তারিখ পর্যন্ত। হেফাজত শেষে তিনি জেলে ফিরে ফাইনাল কেকেআর-কে ট্রফি জেতাতে পারবেন? এখন দেখার শেষ হাসি কে হাসে।

 

 

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...
Exit mobile version