‘ক্যাজুয়াল’ তদন্ত করেছে CBI: SSC-র চাকরি বাতিল মামলার শুনানিতে সরব আইনজীবী দাভে

যথাযথ তদন্ত হয়নি। হাই কোর্টের বিচারপতির নির্দেশে সিবিআই সাধারণ ভাবে তদন্ত করেছে। ‘ক্যাজুয়াল’ তদন্ত হয়েছে। বুধবার, সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) SSC-র ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট দুষ্মন্ত দাভে। এদিন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৭ জানুয়ারি।
আরও খবর: ভারতের মেটা কর্তৃপক্ষ জুকেরবার্গের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইল!

চাকরি বাতিল মামলায় শেষ শুনানি হয় ১৯ ডিসেম্বর। তখনই ১৫ জানুয়ারির মধ্যে মামলার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে হলফনামা জমা দিতে বলেছিল আদালত। এদিন শুনানিতে সিনিয়র অ্যাডভোকেট দুষ্মন্ত দাভে জানিয়েছেন, কোনও যথাযথ তদন্ত হয়নি। সবটাই হয়েছে পঙ্কজ বনশলের তথ্যের বিবৃতির ভিত্তিতে। তিনি বলেন, “আমি সি ক্যাটাগরির প্রতিনিধি৷ আমাদের চাকরি গিয়েছে৷  আমরা জানি, দুর্নীতি হলে চলে যেতে হবে৷ বিচারপতি সায়ন্ত বলেছিলেন, পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করলে পিছনের দরজা দিয়েই বেরিয়ে যেতে হবে। এখানে কোনও সিরিয়াস তদন্তই হয়নি৷ নো অ্যাকচুয়াল এনকোয়ারি৷ পঙ্কজ বনসলের থেকে যা পেয়েছে, তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত৷ এখানে কারা দোষী, কারা নয়, সেটা স্থির করা হয়নি৷ আর্টিকেল ১৪ মাথায় রাখতে হবে, কয়েকজন দোষীর জন্য সব নির্দোষকে সাজা দেওয়া যায় না৷”

এর পরেই নবম দশম এবং গ্রুপ ডি চাকরিহারাদের হয়ে সওয়াল করেন মকুল রোহাতগি। তিনি যুক্তি দিয়ে প্রশ্ন তোলেন, আসল ওএমআর শিট এখনও পাওয়া যায়নি। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ও ধৃত বেসরকারি সংস্থার কর্মী পঙ্কজ বনসলের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া হার্ড ডিস্কের ফরেনসিক রিপোর্ট এখনও আসেনি হায়দরাবাদ ও কলকাতার সিএফএসএল ল্যাবরেটরি থেকে। এই ফরেন্সিক রিপোর্ট আসার আগেই কিভাবে রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট? প্রশ্ন করেন তিনি।

রাজ্যের পক্ষের আইনজীবী কপিল সিবাল বলেন, অরিজিনাল OMR শিট ম্যানিপুলেশন করা সম্ভব নয়। স্ক্যানড শিট ম্যানুপুলেশন করা সম্ভব৷  বনসলের স্ক্যানড কপিতে CBI এমন লোকেরও সন্ধান পেয়েছে, যাদের ওএমআর শিট ম্যানুপুলেশন করা হয়নি৷  অরিজিনাল ওএমআর তো পাওয়া যাচ্ছে না, তাহলে কীভাবে হাইকোর্ট সবার চাকরি বাতিল করছে? এই পদ্ধতি অবৈধ বলে অভিযোগ বর্ষীয়ান আইনজীবীর।

কলকাতা হাইকোর্টর রায় সঠিক নয় দাবি জানিয়ে অপর প্রবীণ আইনজীবী মানেকা গুরুস্বামী বলেন, ৬ বছর ধরে কাজ করছি আমরা৷ আমাদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই৷ গ্রুপ সি ডিতে ২০ লক্ষ পরীক্ষার্থী৷ অ্যাসিসটেন্ট টিচার্স- পদে তিন লক্ষ প্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল। সব শ্রেণী মিলিয়ে দশ শতাংশের কম নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে, দাবি সিবিআই-র। সরকারি চাকরিতে লক্ষ লক্ষ লোক আবেদন করে৷ এখানে দুর্নীতির সম্ভাবনা থাকে৷ এখানে যোগ্য-অযোগ্যর তফাত করতেই হবে, সমানুপাতিক হারে৷ বনশিকা মামলায় রায় তাই বলছে৷ আমাদের কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি, কোনও দাগ নেই আমাদের উপরে৷ তারপরেও আমাদের চাকরি গেছে, কিভাবে ? হাইকোর্টে আমাদের বক্তব্য শোনা হয়নি৷ রুল ২১, ওয়েস্ট বেঙ্গল সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন কি বলছে দেখুন। প্যানেল প্রকাশের এক বছর পরে ওএমআর শিট ধ্বংস করা হবে, এটাই রুল৷ সেটাই করা হয়েছে৷ মামলার (Supreme Court) পরবর্তী শুনানি ২৭ জানুয়ারি। সেদিন সিবিআইয়ের তরফে তাদের বক্তব্য জানানো হবে।