জয়িতা মৌলিক
শুরুর দিন থেকেই বিনোদিনী থিয়েটারে হাউজফুল ‘বিনোদিনী একটি নটীর উপাখ্যান’। নাম ভূমিকায় মাতিয়ে দিয়েছেন রুক্মিণী মৈত্র। তবে, এইসব ছপিয়ে ‘বিশ্ববাংলা সংবাদ‘-কে ব্রেকিং নিউজ দিলেন পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়। জানালেন এই ছবিকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

কিন্তু হঠাৎ একটা বাংলা ছবি কেন যাবে গিনেসে?
রামকমল মুখোপাধ্যায় (Ramkamol Mukharjee) জানালেন কোনও বায়োপিক সেই ব্যক্তির নামাঙ্কৃতি থিয়েটারে প্রদর্শন এর আগে আর হয়নি। শুধু বাংলায় বা দেশে নয় বিশ্ব কোথাও এই উদাহরণ পাওয়া যায়নি। সেই কারণেই এটিকে গিনেসে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
কীভাবে চিন্তা এলো?
১৪১ বছর আগে যে স্বীকৃতি পাননি সেই স্বীকৃতি এসেছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Bandopadhyay) হাত ধরে। স্টার থিয়েটারের নাম হয়েছে বিনোদিনী থিয়েটার। আর সেখানেই তাঁর জীবনী নির্ভর ছবি ‘বিনোদিনী একটি নটীর উপাখ্যান’ একের পর শো জমজমাট। কাণায় কাণায় পূর্ণ দর্শক। হলে বলে এই ছবি দেখে আরও বেশি করে যেন ইতিহাস ছুঁয়ে দেখছেন তাঁরা। বলেছেন, আমাদের মনে হচ্ছে যেন হলে বলে বিনোদিনীর থিয়েটর দেখছি। পর্দার বিনোদিনী রুক্মিণী মৈত্র (Rukmini Maitra) মজার ছলেই বলেন, এই কারণেই কী ছবিকে গিনেসে পাঠানো যায়, যে যাঁর নামে হল, তাঁর বায়োপিক দেখানো হচ্ছে সেই হলে। এই নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। কীভাবে ছবি পাঠানো যায় তা দেখা হচ্ছে। কারণ বিশ্বের চলচ্চিত্র ইতিহাসে এই উদাহরণ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এই ছবিতে বিনোদিনীর ভূমিকায় রুক্মিণী আর রামকৃষ্ণের ভূমিকায় চন্দন রায় সান্যাল ছিলেন পরিচালকের একমাত্র পছন্দ। শহুরে, আধুনিকার চরিত্রে যেমন রুক্মিণীকে দেখে দর্শক অভ্যস্ত, তেমনই চন্দনকে বলিউডে স্মার্ট যুবা হিসেবে। এই দুজনকে একেবার অন্য চরিত্রে কেন বাছলেন রামকমল? পাল্টা পরিচালকের প্রশ্ন রুক্মিণী ছাড়া আর কে? আর চন্দনকে কাস্ট করা ইচ্ছে আগেই ছিল। এখানে মনে হয়েছিল তিনি রামকৃষ্ণকে যথাযথ ফুটিয়ে তুলবেন।

এ ছবিতে গানও অন্য মাত্রা পেয়েছে
এই ছবির গান লিখেছেন স্বয়ং পরিচালক রামকমল (Ramkamol Mukharjee)। ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিৎ। সেই সময়কার কথা ভেবেই গান। রয়েছে রবীন্দ্রসঙ্গীত- ভানু সিংহের পদাবলী থেকে। রয়েছে হিন্দুস্তানি গান। রাকমল জানাচ্ছেন, সেই সময় ছিল অবিভক্ত বাংলা। সেখানে বাংলা-বিহার-ওড়িষা একসঙ্গে। ফলে হিন্দুস্তানি সঙ্গীত সেখানে ব্রাত্য নয়। বরং অবাঙালিদের কাছে সেটাই ছিল প্রথম পছন্দ। সেই কারণেই গুরমুখের নাচঘরের গানে রয়েছে হিন্দিতে।

আপনার বেশিরভাগ ছবিই তো নারী কেন্দ্রিক
প্রশ্ন শুনে রামকমলের স্মার্ট জবাব পুরুষ কেন্দ্রিক ছবির বেলায় তো এই প্রশ্ন কেউ পরিচালককে করে না। তাহলে কেন নারী নির্ভর গল্প বাছলে এই প্রশ্ন উঠবে। পরিচালকের কথায়, তাহলে কি পুরষেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন? রামকমল বলেন, তিনি নারী-পুরুষ নয় ছবির বিষয়কে গুরুত্ব দেন। তাতে যে প্রাধান্য পায়।

ইতিহাস নির্ভর ছবি আরও বেশি করে তৈরি করতে চান রামকমল। কারণ, এই ঘরানা এসময় বাংলা চলচ্চিত্র থাকলেও, এখন তা বিলুপ্ত প্রায়। কিন্তু এই সব ছবিও বাংলা সিনেমারই অংশ। সেই কারণে ‘বিনোদিনী’র পরে ‘দ্রৌপদী’ও আছে রামকমলের ছবির তালিকায়।

–

–

–

–
