মেয়রের নির্দেশ: সচিন সিংকে শোকজ তৃণমূল পুর-দলের

নারকেলডাঙা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তৃণমূল কাউন্সিলরকে শোকজ । ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সচিন সিংকে শোকজ করা হয়েছে।মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে তাকে শোকজ করলেন পুরসভায় শাসক দলের মুখ্যসচেতক বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত। নারকেলডাঙায় তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দিন কয়েক আগে তোলাবাজির অভিযোগ ওঠে । মেয়রের সামনেই বিক্ষোভ দেখান ক্ষতিগ্রস্তরা। অভিযোগ পাল্টা তাদের ওপর চড়াও হন কাউন্সিলর অনুগামীরা । নারকেলডাঙা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কাউন্সিলরও । কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল? ৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিলরের জবাব তলব করা হয়েছে।ইতিমধ্যেই শোকজের চিঠি পাঠানো হয়েছে তাকে।

এরই পাশাপাশি, কাউন্সিলরের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা পাপ্পু খানকেও সতর্ক করা হয়েছে। তাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে বিষয়টি নিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যপমে মুখ খুলতে পারবেন না। জানা গিয়েছে, দু-একদিনের মধ্যেই দুজনকে মুখোমুখি আলোচনায় বসবে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর। তিনি এও জানিয়েছেন, দলকে যা উত্তর দেওয়ার দিয়ে দেবেন।জানা গিয়েছে, নারকেলডাঙার অগ্নিকাণ্ড এবং সচিনকে ঘিরে এলাকার মানুষের অভিযোগ, বিক্ষোভে অসন্তুষ্ট খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বুধবার মেয়রকে পদক্ষেপের নির্দেশ দেন। তারপরই কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয় শচীনের কাছে।

কিছুদিন আগে নারকেলডাঙার একটি ঝুপড়ি এলাকায় আগুন লেগে গিয়েছিল। তাতে পুড়ে ছাই হয়ে যায় অন্তত ৬০টি ঝুপড়ি। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় এক এলাকাবাসীর। ওই ঘটনার পরেই এলাকার মানুষ স্থানীয় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন। তাকে ঘিরে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখানো হয়। ঘটনাস্থলে মেয়র ফিরহাদ হাকিম যান। তার কাছেও কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার একদল যুবক।নারকেলডাঙার ঘটনায় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআরও দায়ের করা হয়েছিল। এক সময়ে দেখা গিয়েছিল, থানার সামনে অবস্থানে বসেছেন সচিন এবং তাঁর অনুগামীরা। অভিযোগ, এর আগে উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের নেতাদের কাছেও শচীনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল।
অভিযোগ, কাউন্সিলরের মদতেই খালপাড়ে ঝুপড়ি ও গুদামঘর তৈরি হয়েছে। আর সেই গুদাম থেকেই আগুন লেগেছে। মেয়র চলে যাওয়ার পর কাউন্সিলরের অনুগামী ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশে দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে এফআইআর করে। পরিস্থিতির জেরে থানার সামনে ধরনায় বসেন কাউন্সিলর। দুই গোষ্ঠীর প্রকাশ্যে লড়াই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব যে আদৌ ভালভাবে নেয়নি তার প্রমাণ মেয়রের নির্দেশে কাউন্সিলরকে শোকজ এবং বিস্তারিত রিপোর্ট তলব।

শোকজের চিঠিতে সচিন সিংয়ের কাছে আসল ঘটনা জানতে চাওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, কেন তিনি থানায় ধরনা বসেছিলেন সেই কারণও দর্সাতে বলা হয়েছে। কেন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ল দুই গোষ্ঠী, কেন দলের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করা হল, সেই কারণও জানতচে চাওয়া হয়েছে।জানা গিয়েছে দলের আর এক নেতা পাপ্পু খানকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনওমতেই নিজেদের বিবাদ নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া যাবে না এবং এর সঙ্গে দলকে জড়ানো যাবে না। কোনও মতপার্থক্যদ থাকলে তা দলীয় ফোরামে জানাতে হবে। দলের মুখ্য সচেতক তথা ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত বলেছেন,বুধবার বিকেলে সচিনকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তাকে চিঠির উত্তর দিতে হবে। আগে সেই জবাব আসুক, তারপর তার বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে দল।

আরও পড়ুন- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুছল মুজিবের নাম! সরল সত্যেন্দ্রনাথ-জগদীশচন্দ্র-জীবনানন্দের নামও

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_