বামশাসিত কেরালার সরকারি মেডিক্যাল কলেজের ভয়াবহ ব়্যাগিং, মুখে কুলুপ বাংলার SFI-এর

0
1

বামশাসিত কেরালার (Kerala) সরকারি মেডিক্যাল কলেজের ভয়াবহ ব়্যাগিং। ঘটনার ভয়াবহতায় শিউরে উঠছে পুলিশ মহলও। আর সেই কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে CPIM-এর ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের পাঁচ ছাত্রের। গ্রেফতার হওয়ার পরে মুখ বাঁচাতে পাঁচ ছাত্রকে মেডিক্যাল কলেজ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। নার্সিং কলেজে নারকীয় অত্যাচারের ভিডিও (সত্যতা যাচাই করেনি বিশ্ববাংলা সংবাদ) ও বর্ণনা শুনে নিন্দার ঝড় উঠেছে। কেরালার কোট্টায়ামের ভয়াবহ ব়্যাগিংয়ের SFI-এর ‘দাদাগিরি’তে ক্ষোভ প্রকাশ করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তবে, মুখে কুলুপ বাংলার সিপিআইএম বা তার ছাত্র সংগঠন।

গত বছরের নভেম্বর মাস থেকেই ভয়াবহ ব়্যাগিং চলছে কেরালার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ। অভিযোগ, শুধু শারীরিক অত্যাচারই নয়, কেড়ে নেওয়া হত টাকাও। প্রতি রবিবার হস্টেলে মদের আসর বসত। জুনিয়র ছাত্রদের থেকে মদ কেনার টাকা তোলা হত। পাশাপাশি, মুখ বন্ধ রাখার জন্য লাগাতার হুমকি দেওয়া হত। আর এর সঙ্গে চলত নির্মম পাশবিক অত্যাচার।

ভাইরাল ভিডিও ক্লিপে (সত্যতা যাচাই করেনি বিশ্ববাংলা সংবাদ) দেখা যাচ্ছে, যৌনাঙ্গ থেকে ডাম্বেল ঝোলানো হয়েছে। স্তনবৃন্তে আটকানো জামাকাপড় টাঙানোর ক্লিপ। অন্য ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, খাটের প্রান্তে এক ছাত্রের হাত-পা বাঁধা রয়েছে। তাঁর শরীরে কম্পাস একে ফুটিয়ে দিচ্ছে সিনিয়র ছাত্ররা। যন্ত্রণায় ছটফট করছেন জুনিয়র ছাত্রটি। আর পৈশাচিক হাসি নির্যাতনকারিদের। এখানেই শেষ নয়, গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ভয় দেখানো হয়েছে। ক্ষতস্থানে লোশন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাতে জ্বালা আরও বাড়ছে।

প্রথম বর্ষের তিনছাত্রকে তিন মাস ধরে শারীরিক ও মানসিক তৃতীয় বর্ষের পাঁচ ছাত্র নির্যাতন চালায় বলে পুলিশ সূত্রের খবর। বামশাসিত কেরালার (Kerala) নার্সিং কলেজের পড়ুয়াদের উপর নির্মম র্যারগিংয়ের ঘটনায় শিউরে উঠেছে দেশ। নির্যাতিত জানিয়েছেন, যখন তখন উলঙ্গ করে চলত মারধর। কখনও যৌনাঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হত ডাম্বল। সে সব মুহূর্তের ভিডিও করে রাখা হত ক্যামেরায়। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি তিন পড়ুয়া পুলিশে অভিযোগ জানান। আর তার জেরেই কোট্টায়াম গান্ধীনগর পুলিশ শুরু করে তদন্ত। অ্যান্টি- ব়্যাগিং অ্যাক্টে পাঁচ অভিযুক্ত পড়ুয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে পুলিশ (Police)।

কলেজের অধ্যক্ষ-ইন-চার্জ ডঃ লিনি জোসেফ বলেন, “ব়্যাগিংয়ের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কলেজকে জানায়নি। অভিভাবকরা ফোন করে বিষয়টি জানান। অভিযোগ পাওয়ার পর, প্রাথমিক তদন্ত করা হয়। এবং ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” গ্রেফতার হওয়া ছাত্ররা হলেন রাহুল রাজ, এনএস জিভা, এনপি বিবেক, রিগিল জিৎ এবং স্যামুয়েল জনসন। এই পাঁচজনকেই বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কেরালার এই ঘটনাকে “নিন্দনীয়” বলে অভিহিত করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দশ দিনের মধ্যে পুলিশকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। বিষয়টি নিয়ে কেরলের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী আর বিন্দু বলেন, “কোট্টায়াম র্যায়গিং মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও খবর: সেনা ছাউনির আবর্জনাস্তূপে বিস্ফোরণ! মধ্যপ্রদেশে হত ১ নাবালক, আহত ২

এদিকে দায় ঝাড়তে রাজ্য কমিটি অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্র তাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয় বলে দাবি করেছে এসএফআই। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল ইউডিএফ অভিযোগ করেছে যে র্যা়গিং মামলায় অভিযুক্তদের বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর সাথে যোগাযোগ রয়েছে। বিরোধী দলনেতা ভিডি সতীসন বলেছেন, “সবাই জানে যে তারা এসএফআইয়ের কর্মী। তবুও তারা এখন তা অস্বীকার করছে।” উচ্চশিক্ষামন্ত্রী বলেন, “যেহেতু ঘটনাটি কেরালা স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি প্রতিষ্ঠানে ঘটেছে, তাই সরাসরি হস্তক্ষেপের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।”

বাংলায় শিক্ষাক্ষেত্রে কোনও ঘটনায় যারা গেলো গেলো রব তোলে, সেই রাজ্য এসএফআই কিন্তু এই ঘটনায় নীরব। নিন্দা তো দূর, কোনও মন্তব্যই করেনি তারা। উল্টে ভ্যালেনটাইস ডে-তে প্রেমে সাড়া দেওয়ার পোস্ট করছে স্যোশাল মিডিয়ায়!