হাত-পা বেঁধে জলসমাধি! অযোধ্যার পুরোহিতের অন্তিম পরিণতিতে ‘দূষিত’ সরযূ

শুক্রবার বিকালে তাঁর নশ্বর দেহ কাপড়ে মুড়ে, দড়ি দিয়ে বেঁধে, পাঁজাকোলা করে রীতিমত সরযূর (Sarayu) জলে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়

প্রধানমন্ত্রী ঘটা করে পালন করছেন ‘নমামি গঙ্গে’ (Namami Gange)। উদ্দেশ্য গঙ্গার জলদূষণ বন্ধ করা। আর সেখানেই যোগীরাজ্যে আড়ম্বর করে কারো মৃতদেহ হাত-পা বেঁধে সরযূর (Sarayu) জলে ভাসিয়ে দেওয়ার দৃশ্যে কার্যত আঁৎকে উঠেছে গোটা দেশ। তিনি আবার আর কেউ নন, অযোধ্যার রামমন্দিরের (Ram temple) প্রধান পুরোহিত। প্রশ্ন উঠেছে, নদীদূষণের এতবড় ঘটনা দেখেও কেন চুপ যোগী আদিত্যনাথ। কোনও সতর্কতা ছাড়াই প্রশাসনিক নজরদারিতে শুক্রবার এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। যেভাবে তাঁর ‘শেষকৃত্য’ সম্পন্ন করে হাত ঝেড়েছে যোগী প্রশাসন, তাতে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এভাবেই অবহেলা কী তাঁর প্রাপ্য ছিল মৃত্যুর পরে।

বুধবার লক্ষ্ণৌয়ের একটি হাসাপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রামমন্দিরের দীর্ঘদিনের প্রধান পুরোহিত সত্যেন্দ্র দাস (Satyendra Das)। শুক্রবার বিকালে তাঁর নশ্বর দেহ কাপড়ে মুড়ে, দড়ি দিয়ে বেঁধে, পাঁজাকোলা করে রীতিমত সরযূর (Sarayu) জলে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়। শরীরের (dead body) সঙ্গে বাঁধা ভারী পাথর। কোথাও কোথাও শরীর থেকে সরে গিয়েছে কাপড়ের আস্তরণও। সেই প্রথায় না ছিল কোনও শ্রদ্ধা, না কোনও আন্তরিকতা। তা সত্ত্বেও এভাবেই ‘জলসমাধি’র পথ বেছে নেওয়া হয়।

যেখানে প্রতিটি ধর্মের নিজস্ব সৎকার পদ্ধতি রয়েছে, সেখানে পঞ্চভূতে বিলীন হওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু সামাজিক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই সব ধর্মের প্রথা। দাহ বা কবর দেওয়া হলেও শরীর পঞ্চভূতে বিলীন হতে পারে। আবার ইহুদি মতে টাওয়ারের উপর শরীর রেখে আসা হলেও তার থেকে দূষণ বা জীবাণু ছড়ানোর বিষয়গুলিতে থাকে নজর। সেখানে সজ্ঞানে কোনও মৃতদেহকে (dead body) ইচ্ছাকরে নদীতে ফেলে দিয়ে যেভাবে সরযূকে (Sarayu) দূষিত করা হচ্ছে, তা নিয়ে নিন্দার ঝড় দেশ জুড়ে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) গঙ্গাদূষণ (Ganges pollution) নিয়ন্ত্রণের নামে প্রতি বছর ঘটা করে নিজের প্রচার চালাচ্ছেন। ঢালা হচ্ছে প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা। অন্যদিকে ডবল ইঞ্জিন উত্তরপ্রদেশ থেকেই নদীতে ফেলা হচ্ছে মৃতদেহ! মন্দির কমিটির দাবি, এটাই তাঁদের প্রথা। সেখানেই প্রশ্ন উঠেছে, তবে এভাবেই বাকি মোহন্তদের জলে ফেলে সরযূকে (Sarayu) দূষিত করার প্রথা মেনে চলেছে অযোধ্যা মন্দির কর্তৃপক্ষ? আর সব জেনেশুনেও কীভাবে সেই প্রথাতেই অনুমতি দিল যোগী প্রশাসন, উঠেছে প্রশ্ন।