Saturday, August 23, 2025

পানিহাটি-কাণ্ডে এক দশক পর রায়, কাউন্সিলর-সহ পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

Date:

পানিহাটি পুরসভার কাউন্সিলর তারক গুহর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ। তারক গুহ এবং তার ভাইপো-সহ পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ আদালতের।কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল ব্যারাকপুর আদালত(barackpore court)।পাঁচজনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাদণ্ড ধার্য করেছে আদালত।

ঘটনার সূত্রপাত ২০১৪ সালে। শম্ভু চক্রবর্তী নামে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। গণপিটুনির সেই ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল।যার মধ্যে নাম ছিল তারকেরও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এর বেশ কয়েক বছর পর সক্রিয় রাজনীতিতে নামেন তারক।ঘটনাচক্রে কাউন্সিলর হন। বর্তমানে পানিহাটি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তিনি। মঙ্গলবার তাকে যাবজ্জীবনের সাজা দিয়েছে আদালত।

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে গণপিটুনির ঘটনায় ব্যারাকপুর আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন তারক গুহ। সেই সময়ই বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন, কাউন্সিলরকে(counsillor) গ্রেফতার করার।এর পর চূড়ান্ত শুনানি শেষে তারক-সহ মোট পাঁচ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। মঙ্গলবার তাদেরই সাজা শোনানো হয়।তারক গুহ, নেপাল গুহ, জয়দেব মুখোপাধ্যায়, শ্যামল দাস-সহ পাঁচজনের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেছে আদালত।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর পানিহাটি(panihati) গান্ধীনগর জনকল্যাণ সমিতির দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল তৈরি হচ্ছিল। শম্ভু চক্রবর্তী নামে এক যুবক মর্নিং ওয়াকে বেরিয়েছিলেন। প্যান্ডেল হচ্ছে দেখে, ভিতরে ঢোকেন তিনি।ওই দিনই প্যান্ডেলের এক কর্মীর ১০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে।সেই চুরির ঘটনায় শম্ভু চক্রবর্তীকে সন্দেহ করা হয়।

এর পরই পানিহাটি গান্ধীনগর জনকল্যাণ সমিতির ঘরে আটকে রেখে শম্ভুকে বেধড়ক মারধর করা হয়। সেই সময় শম্ভুর বয়স ছিল ৪০ বছর। ঘরে স্ত্রী, দুই ছেলে ছিল তার। গণপিটুনির খবর পেয়ে খড়দহ থানার পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে বলরাম স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে পথে নামেন শম্ভুর স্ত্রী এবং পাড়ার লোকজন। তার স্ত্রী জানান, এই ১০ বছর টানা লড়াই করেছেন তিনি। শেষমেশ প্রমাণিত হলে, তার স্বামীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে মারা হয়েছিল। দোষীদের কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।এক দশকের বেশি সময় পর সাজা ঘোষণা হল। পেশায় মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন শম্ভু।শুধুমাত্র কিল, চড়, লাথি নয়, রীতিমতো বাঁশ দিয়ে তাঁকে পেটানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। জানা যায়, মারধরের ফলে তাঁর পাঁজরের হাড় ভেঙে যায়। এমনকি শম্ভুর উপর অকথ্য অত্যাচারের অভিযোগও সামনে আসে। শম্ভুর স্ত্রী হাতে-পায়ে ধরলেও, ধৃতরা তার কথা কানে তোলেননি।যদিও নিম্ন আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন দোষীদের আইনজীবী।

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...
Exit mobile version