পিসিশাশুড়িকে বাড়িতে খুন করে গঙ্গায় দেহ লোপাটের চেষ্টা গৃহবধূ ও তার মায়ের। কিন্তু কেন হঠাৎ পিসিশাশুড়িকে খুন হতে হল সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে মৃত সুমিতা ঘোষের সম্পত্তি। সেখান থেকেই পুলিশের অনুমান পিসিশাশুড়ির সম্পত্তির (property) লোভেই তাকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে, জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই উঠে এসেছে দাবি পুলিশের।

মঙ্গলবার রাতে মধ্যমগ্রামের (Madhyamgram) বীরেশপল্লীতে যেখানে খুন হন সুমিতা ঘোষ সেখানে পুনর্নির্মাণে (reconstruction) যায় পুলিশ। প্রায় চারঘণ্টা ধরে সেই প্রক্রিয়া চলে। নিয়ে যাওয়া হয় ফাল্গুনী ঘোষকেও। ঘটনাস্থল থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পুলিশ। প্রতিবেশী ও স্থানীয় ভ্যানচালকদের জিজ্ঞাসাবাদেরও প্রক্রিয়া চালাচ্ছে পুলিশ।

পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, মৃত সুমিতা ঘোষ অসমের (Assam) জোড়হাটে থাকতেন। বিবাহ বিচ্ছিন্না সুমিতার অসমে বিপুল সম্পত্তি (property) রয়েছে। সেইসঙ্গে কলকাতার ব্যাংকেও একাধিক অ্যাকাউন্টে (account) সম্পত্তির পাওয়া গিয়েছে। দুদিন ধরে তিনি ভাইপোর স্ত্রী ফাল্গুনী বাড়িতে আসছিলেন। অবশ্য বীরেশপল্লীর প্রতিবেশীরা ফাল্গুনীদের সঙ্গে কোন সম্পর্ক রাখতেন না। ফাল্গুনির শ্বশুরবাড়ির সঙ্গেও তাঁদের সম্পর্ক ছিল না বলে জানা গিয়েছে। ডিভোর্স মামলায় স্বামীর থেকে বড় অঙ্কের খোরপোশ দাবি করেন ফাল্গুনি। এর আগে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চুরির অভিযোগ ওঠে ফাল্গুনির বিরুদ্ধে।

জেরায় ফাল্গুনী ও তার মা আরতি দাবি করেছেন রবিবার রাতেই বচসার সময় দেয়ালে মাথা ঠুকে গিয়ে মৃত্যু হয় সুমিতার। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় ইট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়। দেহ লোপাটের জন্য নতুন ট্রলিব্যাগ কেনা হয়। সেই ট্রলিতে শক্ত হয়ে যাওয়া মৃতদেহ না আঁটায় বঁটি দিয়ে কেটে ফেলা হয় গোড়ালি থেকে পায়ের অংশ। বঁটিটি বীরেশপল্লীর যে পুকুরে ফেলা হয়েছে সেখানেও তল্লাশি চালাবে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে বীরেশপল্লী থেকে একটি ট্রলিভ্যান ভাড়া করে বারাসাতের (Barasat) দোলতলা মোড়ে যায় মা ও মেয়ে। সঙ্গে ছিল সেই নীল ট্রলি। ভারী ট্রলি হওয়ায় বীরেশপল্লী থেকে চল্লিশ টাকার পথ ১৪০ টাকা দিয়ে যান ফাল্গুনী ও আরতি। সেখান থেকেই ট্যাক্সি ধরে গঙ্গায় দেহলপাটের চেষ্টা করেন তারা। আপাতত ফরেনসিক পরীক্ষা ও জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে দিয়ে খুনের রহস্য সমাধানের পথে পুলিশ।

–

–

–

–

–
