মণীশ কীর্তনিয়া

কাণায় কাণায় পূর্ণ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম। চেয়ারে বসার জায়গা না পেয়ে, অনেকেই বসে পড়েছেন সিঁড়িতে। দলের সেই নেতা-কর্মীদের সামনে দাঁড়িয়ে তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) স্পষ্ট বার্তা, দলে জোড়াফুল প্রতীকই শেষ কথা। এর বাইরে অন্য কোনও বেফাঁস মন্তব্য ও কার্যকলাপ যে বরদাস্ত করবেন না তিনি। মমতার হুঁশিয়ারি, “আজকাল দেখছি অনেকে বলছে, আমি তৃণমূল বুঝি না, ওই দাদা বুঝি। মনে রাখবেন আপনার কেউ নেতা হলে সে হল জোড়াফুল। প্রতীক না থাকলে আপনি কাউন্সিলরও থাকবেন না।“

দলই শেষ কথা। দলের উর্ধ্বে কেউ নয়। এর আগেও বারবার একথা বলেছেন তৃণমূল (TMC) সভানেত্রী। কিন্তু তার পরেও বেফাঁস, বিতর্কিত মন্তব্য শোনা গিয়েছে তৃণমূলের কিছু নেতা-নেত্রীর মুখে। বিশেষ করে স্যোশাল মিডিয়ায় এই প্রবণতা বেশি। সেই কথা উল্লেখ করে এদিন সভা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো জানান, “সোশ্যাল মিডিয়া খুঁটিয়ে দেখি। সবই চোখে পড়ে।“

তৃণমূল সভানেত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, দলে যারা ভাল কাজ করবে তাদের তিনি প্রোমোশন দেবেন। আর খারাপ কাজ করলে কোনও রকম দয়ামায়া দেখাবেন না। নেত্রীর কথায়, “যারা ভাল কাজ করছে তাদের পদোন্নতি করব। যাঁরা শুধু বিবৃতি দেন, দলের সমালোচনা করেন না তাদের জন্য আমাদের কোনও দয়ামায়া নেই। সেই কর্মীর প্রতি আমার দয়ামায়া যে বুক দিয়ে দলকে আগলে রাখে।“


কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ— বাংলার প্রতিটি জায়গায় দলের নেতাদের বিশেষ করে জেলা সভাপতিদের জন্য নেত্রীর নির্দেশ, সকলকে ডেকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করুন। “সারা বছর তো ডাকেন না। এসব করলে চলবে না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলে সকলকে নিয়ে চলতে হবে। যারা পারবে না তাদের বদলে দেব।“

বিজেপিকে তুলোধোনা করে মমতা বলেন, “এরা বিবেকানন্দের হিন্দু ধর্মকে ভুলিয়ে দিচ্ছে। বহিরাগত হিন্দু ধর্মকে আনছে। মিথ্যে কথা বলছে বিজেপি। তাঁর সংযোজন, পঞ্চানন বর্মার জন্মদিন মনে রাখবে না এরা রাজবংশী ভোট চাইবে? আমরা সর্বধর্ম ভালবাসি।“ গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করে মমতা বলেন, “বিজেপি দেশে যা খুশি তাই করছে। গণতন্ত্রের আজ কী দুরবস্থা! দেখবেন, নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে ততই এজেন্সির দাপট বাড়বে।“ তাঁর সংযোজন, সব মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে।
আরও খবর: কোমরে শিকল পরিয়ে দেশে ফেরাচ্ছে, কেন্দ্রের লজ্জাও নেই! মোদিকে নিশানা মমতার

নিজেকে একজন কর্মী হিসেবেই তুলে ধরে মমতা বলেন, “অনেককেই আজ এখানে জায়গা দিতে পারিনি। তাঁরা বাইরে আছেন। বাকিরা টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখছেন। ক্ষুদিরামেও ব্যবস্থা করা হয়েছে।“ দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্য তৃণমূল সভানেত্রীর বার্তা, সভার এদিনের নির্দেশ-বার্তা সারা বাংলার কোণায় কোণায় ছড়িয়ে দিতে হবে।

–

–

–

–
