সম্পত্তির লোভে সুপারি কিলার দিয়ে মা-বাবাকে খুন করল মেয়ে ৷ তাকে সঙ্গ দিয়েছে জামাই ৷ ‘সুপারি কিলার’ দিয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করিয়ে ‘নাটক’ করেও শেষরক্ষা হয়নি ৷ নৃশংস এই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে মেয়ে ও জামাই। গ্রেফতার হয়েছে সুপারি কিলারও।টানা সাড়ে চার বছর মামলা চলার পর সোমবার হারবার সেই ‘জোড়া হত্যা’ মামলায় মেয়ে নিবেদিতা সাধু ও তার স্বামী বান্টি সাধু এবং সুপারি কিলার অজয় দাসের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করল বারাসত জেলা আদালত ৷ সেই সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ছ’মাসের কারাদণ্ডের সাজাও শুনিয়েছেন জেলা আদালতের পঞ্চম অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক ৷

সম্পত্তির লোভে স্বামীর সঙ্গে পরিকল্পনা করে সুপারি কিলার দিয়ে মা-বাবাকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। তারপর দিব্যি ভাল মানুষের অভিনয় করছিল। কিন্তু একটি কল রেকর্ড সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়।খুনের তদন্ত নেমে পুলিশ প্রথমে সুপারি কিলারকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া কল রেকর্ডের সূত্র ধরে গ্রেফতার হয় মেয়ে-জামাই।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে হাবড়ার টুনিঘাটা গ্রামে নিজের বাড়িতে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় প্রাক্তন সেনাকর্মী রামকৃষ্ণ মন্ডল এবং তার স্ত্রী লীলারানির। পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে মাথায় এবং বুকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল দম্পতিকে।ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে কোনও কিনারা করতে পারছিল না। সন্দেহের বশে প্রথমে তন্ময় বর নামে পাড়ার এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে ৷ কিন্তু দিনকয়েকের মধ্যেই পুলিশ বুঝতে পারে, জোড়া খুনের ঘটনায় তন্ময়ের কোনও যোগ নেই। তারপর পুলিশ বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ৷

এরপর পুলিশ অজয় দাস নামে এক সুপারি কিলারকে গ্রেফতার করে। তার সূত্রেই গ্রেফতার হয় নিহত দম্পতির ছোট জামাই বান্টি সাধু ও মেয়ে নিবেদিতা সাধু(মন্ডল)।পুলিশি জেরায় তারা অপরাধের কথা স্বীকারও করে নেয়। জানা যায়, বান্টির প্রায় ৮-১০ লক্ষ টাকার দেনা হয়েছিল এবং পাওনাদারদের টাকার চাপে, শ্বশুর, শাশুড়িকে চাপ দিতে শুরু করে বান্টি। তারা টাকা দিতে অস্বীকার করলে পরিকল্পনা করে খুন করে। প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে চলা মামলায় ২৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছে। সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বান্টি, অজয় এবং নিবেদিতাকে দোষী সাব্যস্ত করে বারাসাত জেলা আদালত।
সোমবার তাদের যাবজ্জীবন সাজার সঙ্গে আরও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। অনাদায়ে আরও ছমাসের জেল-হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। এরই সঙ্গে অজয় দাসের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার হওয়ার কারণে তাকে আরও পাঁচ বছরের জেল এবং ৫০০০ টাকা জরিমানায, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের জেলের নির্দেশ দিয়েচেন বারাসাত জেলা আদালতের ACJM 5th বিচারক দিপালী শ্রীবাস্তব।

–

–

–

–

–

–

–
–