ট্যাংরার বাড়ি গিয়ে স্ত্রী-কন্যার ছবির সামনে কান্না প্রসূনের, ঘটনার পুনর্নির্মাণে জানালেন ভয়ঙ্কর তথ্য

ট্যাংরা হত্যাকাণ্ডে খুনি কজন? এটাই এখন ভাবাচ্ছে তদন্তকারী আধিকারিকদের। আর সেই দেখতেই বুধবার দুপুর অভিযুক্ত প্রসূন দে-কে নিয়ে তাঁর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ (Police)। জেরায় প্রসূন (Prasun De) জানান, তিনিই তাঁর কন্যা, স্ত্রী ও বৌদিকে খুন করেন। কীভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়, সেটা জানান তিনি। এখন সেই বয়ানের সঙ্গে তথ্য প্রমাণ মিলিয়ে দেখতেই ঘটনাস্থলে তাঁকে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে স্ত্রী ও কন্যার ছবির সামনে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করেন প্রসূন।

জেরায় প্রসূন (Prasun De) জানিয়েছেন, ১২ ফেব্রুয়ারি খুন করে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রসূন ও প্রণয় দে-র এই পরিকল্পনায় সমর্থন করেন দুই বউ সুদেষ্ণা ও রোমি। এদিন বাড়ি গিয়ে প্রথমে স্ত্রী ও কন্যার ছবির সামনে গিয়ে কাঁদেন অভিযুক্ত প্রসূন। এর পরে বাড়িতে ঘুরে দেখান ঘটনার দিন কোথায়, কী ভাবে গিয়েছিলেন।

পুলিশ (Police) সূত্রে খবর, ১৭ ফেব্রুয়ারি ‘প্ল‌্যান এ’ অনুযায়ী দে বাড়ির ছোট বউ রোমি পায়েস রান্না করেন। সেটা নিয়ে তিনি ও প্রসূন তিনতলার ঠাকুরঘরে যান। সেখানেই পায়েসে ওষুধ মিশিয়ে ঠাকুরঘরে ক্ষমা চান। বড় ভাই প্রণয় দের স্ত্রী সুদেষ্ণা তাঁর স্বামী ও ছেলে প্রতীপকে পায়েস দেন। রোমি দেন প্রসূন ও মেয়ে প্রিয়ংবদাকে।

১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে প্রথমে প্রসূনের ঘুম ভাঙে। একে একে সবার ঘুম ভাঙে। দেখা যায় কারওই মৃত্যু হয়নি। তখন আবার আলোয়চনায় বসেন চারজন। ঠিক হয়, শিরা কেটে চারজনকে খুন করে আত্মঘাতী হবেন ভাইয়েরা। প্রসূনের দাবি, তিনি ও স্ত্রী রোমি মেয়ে প্রিয়ংবদার ঘরে যান। ঘুমন্ত প্রিয়ংবদার নাক ও মুখে বালিশ চেপে ধরেন প্রসূন। মেয়ে ছটফট করে উঠলে রোমি তার পা চেপে ধরেন। শ্বাসরোধের কারণে মৃত্যু হয় কিশোরীর।

কাগজ কাটার ছুরি দিয়ে নিজের হাত কাটেন। কিন্তু তাতে কিছু না হওয়ায় নিজেই রোমির হাতের শিরা কাটেন প্রসূন। স্ত্রী যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠলে তাঁর মুখে বালিশ চাপা দেন প্রসূন।
আরও খবর: স্ত্রীর দিকে কুদৃষ্টি! যুবকের চোখ উপড়ে নেওয়ার ‘শাস্তি’ গণপিটুনিতে মৃত্যু

সুদেষ্ণাও শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে, সুদেষ্ণার হাত কাটেন প্রসূনই। প্রসূন তাঁর নাবালক ভাইপো প্রণয়ের ছেলে প্রতীপকেও খুনের চেষ্টা করেন। সব কাজ মিটিয়ে তিনতলায় গিয়ে ফের ঘুমের ওষুধ খান প্রসূন। সন্ধ‌্যার পরে ঘুম ভাঙলে গাড়ি করে বাইরে গিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার ছক কষেন বলে পুলিশকে জানান প্রসূন। তাঁর বয়ান এবার মিলিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রণয়। তিনি ছাড়া পেয়ে তাঁকেও গ্রেফতার করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।