বিদেশের মাটিতে বসে ভারতের ভাবমূর্তিতে কালি লেপন করলেন মোদির দলের এক নেতা। বালেশ ধনকড় নামের এই ব্যক্তি পাঁচ কোরীয় নারীকে ধর্ষণের দায়ে ৪০ বছর কারাবাসের সাজা পেয়েছেন। একাধিক নারী ধর্ষণে দোষী প্রমাণিত বালেশ ধনকড় ‘ওভারসিজ ফ্রেন্ডস অব বিজেপি’ সংস্থার অস্ট্রেলিয়া শাখার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর ছবিও রীতিমতো ভাইরাল। আদালতের সাজায় বলা হয়েছে, পাঁচ কোরীয় নারীকে সুনিপুণভাবে পরিকল্পনা করে ধর্ষণ করা হয়। শিকারি প্রকৃতির এই প্রতারককে ধর্ষণের জন্য ৪০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বিদেশে বিজেপির হয়ে গলা ফাটানো এই ধনকড়ের বিরুদ্ধে ১৩টি ধর্ষণের অভিযোগ, ৬টি নেশাজাত দ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে অক্ষম করার অভিযোগ, ১৭টি অনুমতি ছাড়া ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও রেকর্ড করার অভিযোগ এবং ৩টি অশ্লীল নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়। সবমিলিয়ে মোট ৩৯টি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল মোদির দলের এই নেতার বিরুদ্ধে। এই অপরাধগুলি ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।


২০২৩ সালের এপ্রিলে, সিডনির এক জুরি তাঁকে ৩৯টি অভিযোগেই দোষী সাব্যস্ত করেন। তথ্য অনুযায়ী, ধনকড় সেই নারীদের সঙ্গে দেখা করতেন যাঁরা সিডনির হিলটন হোটেলের বারে তাঁর প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনের উত্তর দিয়েছিল। হোটেলটি ধনকড়ের অ্যাপার্টমেন্টের কাছেই অবস্থিত। তদন্তে উঠে আসে টার্গেট করা নারীদের নেশাগ্রস্ত করে ধর্ষণ করতেন এবং অপরাধের দৃশ্য ভিডিও করতেন কীর্তিমান ধনকড়। তদন্তকারীরা তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বিপুল পরিমাণ ভিডিও রেকর্ডিংয়ের প্রমাণ পেয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ মাধ্যম ‘৯নিউজ’ অনুযায়ী, জেলা আদালতের বিচারক মাইকেল কিং বলেন, তিনি নিউ সাউথ ওয়েলসে এমন অপরাধের সঙ্গে তুলনীয় কোনও মামলা খুঁজে পাননি। বিচারক বলেন, অপরাধীর আচরণ ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং সুনিপুণভাবে বাস্তবায়িত। প্রতারক অত্যন্ত শিকারি প্রকৃতির। পুলিশ তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ‘ডেট রেপ’ ড্রাগ উদ্ধার করেছিল।

অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমে ধনকড়ের বিজেপি যোগ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি ফলাও করে উঠে এসেছে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে গ্রেফতারের আগে পর্যন্ত ধনকড় ভারতীয়-অস্ট্রেলীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে অত্যন্ত সমাদৃত ছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দলের একটি স্যাটেলাইট গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং অস্ট্রেলিয়ার হিন্দু কাউন্সিলের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতেন। ‘ওভারসিজ ফ্রেন্ডস অব বিজেপি’ ২০১৪ সালে সিডনিতে মোদির সংবর্ধনার আয়োজন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে যখন ধনকড়ের অপরাধের খবর প্রথম প্রকাশ্যে আসে, তখন দায় ঝাড়তে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ অস্বীকার করে গেরুয়া দল।


আরও পড়ুন- নারী সুরক্ষায় নয়া ভাবনা রেলের! এবার মহিলা আরপিএফ কর্মীদের হাতে থাকবে ‘রক্ষাকবচ’ লঙ্কার গুঁড়ো

_

_

_

_

_

_

_