মুখ্যমন্ত্রীর লন্ডন সফরে বিশৃঙ্খলা তৈরির ষড়যন্ত্র বাম, অতি বাম, বিজেপির! বিস্ফোরক পোস্ট কুণালের

এইসব ষড়যন্ত্র বন্ধ না হলে বাংলার মানুষই তার জবাব দেবে বলে লেখেন কুণাল- "আর যদি হয়, তাহলে বাংলার মানুষ গণতান্ত্রিক পথেই জবাব দেবেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সফরে আপত্তিজনক কাজ করে বিদেশে বাংলাকে অপমান সহ্য করবেন না বাংলার মানুষ।"

বিরোধিতা এতো প্রতিহিংসামূলক যে তার জন্য বিদেশের মাটিতে বাংলাকে ছোট করার, বাংলার বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচার করার ছক কষছে রাম-বাম-অতিবাম! সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh)। অক্সফোর্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Bandopadhyay) লন্ডন (London) সফর নিয়ে বিরোধীরা কুৎসা করেই চলেছে। এখানে সুবিধা না করতে পেরে, এবার ইমেইল বা বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া গ্রুপের মাধ্যমে লন্ডনে মুখ্যমন্ত্রী সফর চলাকালীন বিক্ষোভের নামে অশান্তি পাকানোর ষড়যন্ত্র করছে তারা। শুধু তাই নয়, বাংলার নামে মিথ্যা প্রচার করে ছোট করার অপচেষ্টাও চলছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে লন্ডন যাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সব ঠিক থাকলে ২৪-২৬ মার্চের মধ্যে সেখানে বাংলার মহিলা উন্নয়ন নিয়ে তিনি বক্তৃতা দেবেন। তুলে ধরবেন বাংলার নারী উন্নয়নের কথা। বাংলার সরকার কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো যেসব প্রকল্প নিয়েছে, তা গোটা বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্তস্বরূপ তুলে ধরবেন মুখ্যমন্ত্রী। শোনাবেন নিজের জীবন-সংঘর্ষের কাহিনিও। বিশ্বমঞ্চে তাঁর সেই কাহিনি অনুপ্রেরণা জোগাবে বলেই আমন্ত্রণের পর আমন্ত্রণ আসছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পর ব্রিটেনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি এবং লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সের তরফেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাঁকে। কিন্তু সিপিএম একটি আরটিআইয়ের নাম করে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাগাতার কুৎসা চালাচ্ছে যে, অক্সফোর্ড নাকি জানিয়েছে এরকম তাদের কোনও সফর নেই। পয়েন্ট ধরে সেই কুৎসার জবাব দিয়েছেন তৃণমূল। অভিযোগ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এত সম্মানজনক আমন্ত্রণে হিংসায় জ্বলছে বিরোধীরা।

এবার লন্ডনে ও ষড়যন্ত্র পাকানোর চেষ্টা চলছে। আর জি কর কাণ্ডের সময় যেভাবে বাংলাকে বিদেশের মাটিতে ছোট করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল অতিবাম এবং বিজেপিদের একাংশ। এবারও সেই ছক চলছে। তারই পর্দা ফাঁস করেছেন কুণাল ঘোষ। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি লেখেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর লন্ডনসফর, বিশেষত অক্সফোর্ডের আমন্ত্রণে সেখানে ভাষণ দিতে যাওয়া যারা সহ্য করতে পারছে না, কুৎসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে; তাদের একাংশ এখন তাঁর লন্ডন সফর চলাকালীন বিক্ষোভের নামে বিশৃঙ্খলা করে বাংলা সম্পর্কে মিথ্যা প্রচারের ষড়যন্ত্র করছে। বাম, অতি বাম ও বিজেপির কিছু সমর্থক হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্রে সামিল। তাদের কিছু নিজস্ব প্রস্তুতির ইমেল হাতে এসেছে।”

বাংলাতে বদনাম করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ কুণালের। তিনি লেখেন, “গুটিকতক বিকৃতমস্তিষ্ক ও ভাড়াটে লোক জুটিয়ে এরা বিদেশে বাংলাকে বদনাম করতে চায়। যদি বাংলার মেয়ের বিশ্বের দরবারে উন্নয়নের মডেল তুলে ধরার সফরে কোনোরকম অসভ্যতার চেষ্টা হয়, বাংলায় তার জবাব মিলবে, ভোটে মানুষ বিরোধীদের আরও মুছে দেবেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে থেকে কোনও সফরে যাচ্ছেন না, যেতে চান না। বহু আমন্ত্রণ থাকে। বিদেশি বিশিষ্ট প্রতিনিধিরা বাংলায় আসেন, আমন্ত্রণ করেন যেতে। দুএকটি ক্ষেত্রে সাড়া দিতেই হয়। এই আমন্ত্রণ গর্বের। সেসময় যদি বিকৃত রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে রামবাম কিছু সমর্থক লোক ভাড়া করে, মিথ্যা রটনায় বিশৃঙ্খলা করেন, তা চরম অসৌজন্যের।”

তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মনে করিয়ে দেন বিদেশের মাটিতে বাংলার শাসকদলেরও ভিত রয়েছে। তাঁর কথায়, “মনে রাখবেন, বিদেশে চেনা পরিচিতি সবার আছে, আপনাদের নেতারাও যান, আমরাও এধরণের পরিস্থিতি করতে পারি, কিন্তু করি না। সূত্রের খবর, হাতে গোনা কিছু লোককে দিয়ে বিশৃঙ্খলার চক্রান্ত এখানকার কয়েকজন জানে। তারা এই চক্রে সামিল। বিদেশে গিয়ে থাকা পুরনো বাম, অতিবাম, তৎকাল বিজেপির কিছু লোক এতে যুক্ত। এরা অন্ধ তৃণমূলবিরোধিতা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সময় অশান্তি করতে চাইছে। দশ পনেরোটা লোক নিয়ে ছবি তুলে অপপ্রচার। এরা বাংলা সম্পর্কে মিথ্যার ডালি সাজিয়ে বিভিন্ন গ্রুপে প্ররোচনা দিচ্ছে।”

সম্প্রতি বিজিবিএসে সারা বিশ্ব থেকে প্রতিনিধি দল এসেছিল। বাংলার উন্নয়নের পরিস্থিতি তাদের কাছে স্পষ্ট। সেই কথা উল্লেখ করে কুণাল লেখেন, “বিদেশে প্রবাসী বাঙালিরা বাংলার উন্নয়ন জানেন, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে ভালোবাসেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত অতৃপ্ত আত্মাদের কিছু লোক, কলকাতা ও দিল্লির একাংশের মদতে মুখ্যমন্ত্রীর অক্সফোর্ড ভাষণের সময় অপপ্রচারমূলক ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বাংলার মেয়ের এই আমন্ত্রণ এবং বাংলার উন্নয়ন মডেল নিয়ে বিশ্বের দরবারে ভাষণ তারা সহ্য করতে পারছে না। ঈর্ষা থেকে ষড়যন্ত্রের পথে যাচ্ছে এরা। এসব করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গৌরবসফর তারা থামাতে পারবে না। বিদেশের বুকে পরিকল্পিতভাবে যারা বাংলাকে অসম্মান করার চেষ্টা করছে, তারা বাংলার শত্রু। বাংলার মেয়ের সফরকে ঘিরে কোনো বিশৃঙ্খলা ও নেতিবাচক খবর তৈরির চক্রান্তমূলক অপচেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না। যারা এসব করবে তারা বাংলা তথা দেশের শত্রু। সস্তা প্রচারের জন্য এরা এই নোংরামির চেষ্টা করছে। সূত্রের খবর, এই চক্রান্ত কলকাতা ও দিল্লির একাংশ থেকে প্রশ্রয় যাচ্ছে। বাংলাকে বদনামের এই চক্রান্ত হলে গণতান্ত্রিক ভাষাতেই জবাব হবে। যারা আরজিকর নিয়ে পরের পর কুৎসা করেছে, যারা যাদবপুরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়িতে হামলা করে, তাদের ঘরানার বিকৃত মানসিকতার কিছু লোক এখন লন্ডনে মুখ্যমন্ত্রীর সফরে কিছু করে ছবি তুলে নাটকের পরিকল্পনা করছে। ইমেল, কিছু গ্রুপের মাধ্যমে মিথ্যা বলে প্ররোচনা ছড়ানো হচ্ছে। এসব অপচেষ্টা বন্ধ হোক।”

এইসব ষড়যন্ত্র বন্ধ না হলে বাংলার মানুষই তার জবাব দেবে বলে লেখেন কুণাল- “আর যদি হয়, তাহলে বাংলার মানুষ গণতান্ত্রিক পথেই জবাব দেবেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সফরে আপত্তিজনক কাজ করে বিদেশে বাংলাকে অপমান সহ্য করবেন না বাংলার মানুষ।”