অনলাইনে লুডো খেলে প্রেম, অস্ট্রেলিয়া থেকে ভারতে এসে বিয়ে: মধুচন্দ্রিমার পর উধাও

বিয়ের পরে জ্যোতিকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন অনিকেত।

এখন অনলাইনে গেমের ছড়াছড়ি। আর সেই গেমে বুঁদ হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেন অনেকেই। অনলাইনে সব থেকে সহজ খেলা লুডো। তাই এর জনপ্রিয়তাও বেশি। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা তাই লুডো খেলতে পছন্দ করেন। এভাবেই অনলাইনে লুডো খেলতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের এক তরুণীর।প্রথমে আলাপ, ধীরেধীরে বন্ধুত্ব, তারপর রীতিমতো প্রেম। বলা যেতে পারে লুডো খেলার দৌলতে বিশ্বের দুই প্রান্তের দুই মন এক সুতোয় বাঁধা পরেছিল। ভারতে এসে তরুণীকে বিয়েও করেন যুবক।কিন্তু মধুচন্দ্রিমার পরই তাল কাটে। যুবক ফিরে যান অস্ট্রেলিয়ায়। পরে যুবকের খোঁজে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে তরুণী জানতে পারেন, ওই যুবক আগে থেকেই বিবাহিত। স্ত্রী-সন্তানও রয়েছে তার। এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন অযোধ্যার বাসিন্দা ওই তরুণী।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত কোভিড অতিমারির সময় ২০২০ সালে। অনলাইনে লুডো খেলতে গিয়ে অনিকেত শর্মা নামে এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল অযোধ্যার বাসিন্দা জ্যোতি শুক্লের। অনিকেত পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী জ্যোতিকে বলেছিলেন, তিনি পাঞ্জাবের নওয়ানশহরের মোহননগরের বাসিন্দা, কর্মসূত্রে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। ২০২৩ সালের ৬ মে ভারতে এসে জ্যোতিকে বিয়ে করেন ওই যুবক। বিয়েতে জ্যোতির পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বিয়েতে ছিল না অনিকেতের পরিবারের কেউ। অনিকেত জানিয়েছিলেন, তিনি কর্মসূত্রে পরিবারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। বিয়ের পরে জ্যোতিকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন অনিকেত।

স্বাভাবিকভাবেই বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমায় যান দু’জনে। কিন্তু তিন দিন পর হঠাৎ যুবক জানান, অফিসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাকে দ্রুত অস্ট্রেলিয়া ফিরতে হবে। এরপরই অস্ট্রেলিয়াতে ফিরে যান ওই যুবক। এরপর থেকেই নানা অজুহাতে তিনি ‘স্ত্রী’কে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। এর পর ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় অনিকেতের দেওয়া ঠিকানায় পৌঁছান জ্যোতি।সেখানে গিয়ে তরুণী জানতে পারেন, অনিকেত আগে থেকেই বিবাহিত! সন্তানও রয়েছে তার।

তিনি আরও জানতে পারেন, অনিকেতের বাবা-মা আদৌ অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন না। তারা পাঞ্জাবেই থাকেন। জ্যোতির অভিযোগ, এরপর তিনি অনিকেতের বাবা-মাকে ফোন করে গোটা ঘটনা জানালে তারা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত জ্যোতি পাঞ্জাবে অনিকেতের বাড়িতেও চলে যান। কিন্তু সেখানে অনিকেতের পরিবারের সদস্যেরা তাকে রীতিমতো মারধর করে তাড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ। এর পরেই অনিকেত এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই তরুণী। ওই যুবকের বিরুদ্ধে শারীরিক হেনস্থা, পণের জন্য দাবি, প্রতারণা-সহ একাধিক অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যুবকের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। এখন দেখার এই প্রতারণার সুরাহা শেষ পর্যন্ত হয় কিনা।