প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু তা পালন করেন না প্রধানমন্ত্রী। নারী ক্ষমতায়ন থেকে শুরু করে শিশুদের কল্যাণে ভুরি ভুরি প্রতিশ্রুতি শুধু ভোট এলেই। ভোটের পরই সবকিছু গতানুগতিক। সবেতেই বঞ্চনা। এটাই এখন রোজনামচা কেন্দ্রের মোদি সরকারের। সম্প্রতি সংসদে ‘ডিমান্ডস ফর গ্র্যান্টস’ নিয়ে রিপোর্ট পেশ করে কেন্দ্রের শাসক শিবির। সেখানেই উঠে আসে আরও এক প্রস্থ বঞ্চনার ছবি।

বাংলাকে নিয়ে তো পরতে পরতে বঞ্চনা। এবার গোটা দেশেই মহিলাদের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করল কেন্দ্রের সরকার। মহিলা সংরক্ষণ বিল থেকে শুরু করে লাখপতি দিদি, উজ্জ্বলা গ্যাস, জনধন যোজনা— কত না নারীশক্তির উন্নয়নের বুলি আওড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মোদি গ্যারান্টি দিয়েছিলেন ভোটের আগে। কিন্তু তিনি কাজে দেখাচ্ছেন— ‘সব প্রতিশ্রুতি পালনের নয়, প্রতিশ্রুতি ভোটেরও হয়’।

মোদি গ্যারান্টির কী নমুনা দেখুন! ২০২৫-২৬ আর্থিক বছরে কেন্দ্রীয় বাজেট অনুযায়ী নারী ও শিশুকল্যাণে বরাদ্দ মাত্র ০.৫৩ শতাংশ। এই তথ্য উঠে এসেছে খোদ সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টে। এই রিপোর্ট মন্ত্রকই প্রকাশ করেছে সংসদে। কোনও বিরোধীদের দাবি নয় এটা। স্বভাবই প্রশ্ন উঠে পড়েছে, মোদি সরকার মহিলাদের জন্য প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দেয়, তাহলে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের জন্য বাজেট বরাদ্দ এত কম কেন?

শুক্রবারই ‘ডিমান্ডস ফর গ্র্যান্টস’ সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করে জানানো হয়েছে, আগামী অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেটে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রককে দেওয়া হয়েছে ২৬ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। বিগত আর্থিক বছরে বরাদ্দ করা হয়েছিল ২৬ হাজার ৯২ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে আবার সেই অঙ্কটাও কমিয়ে ২৩ হাজার ১৮২ কোটি টাকা করা হয়। এই ২৩ হাজার কোটি টাকাও পুরোপুরি ব্যয় করতে পারেনি নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক। তারপর এবারও বাজেট-বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে মাত্র ০.৫৩ শতাংশ। তাহলে অঙ্গনওয়াড়ি, পোষণ ফর চিলড্রেন বা মিড ডে মিল, মিশন বাৎসল্য, মিশন শক্তির মতো প্রকল্পগুলি চলবে কী করে? যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামোন্নয়ন ও নারীসুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি রয়েছে, সেখানে কেন এত গাফিলতি?


এদিকে রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে সুপারিশ করা হয়েছে, এইসব প্রকল্প রূপায়ণকারী মহিলাদের পারিশ্রমিক অত্যন্ত কম। তাদের পারিশ্রমিক বাড়ানো দরকার। তা না হলে কর্মী সঙ্কট তৈরি হবে। কিন্তু সেই সুপারিশে কর্ণপাত করেনি কেন্দ্র। বাজেট বরাদ্দও সে অর্থে বাড়ানো হয়নি। ফের একটি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার দেশের মহিলা ও শিশুরা।


আরও পড়ুন – গরমের চড়া ব্যাটিং! স্কুলের সময় এগিয়ে আনার ভাবনা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ

_

_

_
_

_

_