বাংলায় ১০০ দিনের কাজ বন্ধ কেন, তিন সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রের রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

একুশের ভোটে বাংলায় গোহারা হওয়ার পর থেকে লাগাতার চলছে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা। বাংলায় ১০০ দিনের কাজে বরাদ্দ বন্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government)। এমনকি গরিব খেটে খাওয়া মানুষের প্রাপ্য বকেয়াও দেয়নি কেন্দ্র। শ্রমিক স্বার্থে সেই টাকা মিটিয়েছে রাজ্য। ১০০ দিনের কাজের প্রশ্নে এবার কেন্দ্রকে প্রশ্নের মুখে ফেলল হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট জানতে চাইল, কেন্দ্রীয় সরকার কেন রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বন্ধ রেখেছে?এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করেছে। তাদের তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে আদালতে।

১০০ দিনের কাজে ‘ডাবল ইঞ্জিন’ রাজ্যগুলিতে বরাদ্দ হচ্ছে। কিন্তু বাংলার জন্য কোনও বরাদ্দ হচ্ছে না। যত বঞ্চনা, প্রতিহিংসা বাংলার সঙ্গেই। এই অবস্থায় কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে কলকাতা হাইকোর্টের এই সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্য সভায় একাধিক বার সরব হয়েছেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। কেন্দ্র শুধু ১০০ দিনের কাজের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলেই ক্ষান্ত। এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায় দাসের ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রের কাছে তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। এর আগে গত ২০ মার্চ নোডাল অফিসার কোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জানান, হাইকোর্ট নিযুক্ত চার সদস্যের কমিটি রাজ্যের চার জেলা পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, মালদা এবং দার্জিলিংয়ে পরিদর্শন করে। কেন্দ্রের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী জানান, মোট ৫ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বণ্টনের ক্ষেত্রে রাজ্যে গরমিল রয়েছে। তার মধ্যে ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যে পুনরুদ্ধার করা গিয়েছে। এবং তা উদ্ধার করেছে রাজ্যই। এখানেই প্রশ্ন বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন ১৫টি রাজ্যে ১০১ কোটির টাকারও বেশি আর্থিক তছরুপ হয়েছে।

সম্প্রতি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের রিপোর্টেই এই দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসে বিজেপি-রাজ্যের। বিজেপিশাসিত ১২ রাজ্য ছাড়াও এনডিএ-শাসিত অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার ও সিকিমেও আর্থিক তছরুপ হয়েছে। তারপরও ২০২২ সালের ৯ মার্চ বাংলার ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকদের প্রাপ্য বকেয়া আটকে রাখা হয়েছে। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশতঃ বাংলাকে ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এদিন আদালত জানায়, কেন ১০০ দিনের প্রকল্প বন্ধ, আগামী ১৫ মের-মধ্যে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে রিপোর্ট দিয়ে তা আদালতকে জানাতে হবে।