বিকৃত প্রচার! বাম-অতিবামদের লাথি মনে করিয়ে কসবার পাল্টা দিলেন কুণাল

কসবা-কাণ্ডে ফাঁস হয়ে গিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মিথ্যাচার, কুৎসা এবং অপপ্রচার। এক শ্রেণির মিডিয়া যে বিকৃতভাবে প্রচার করে রাম-বামের চক্রান্তে ধুনো দিচ্ছে, সেই পর্দা ফাঁস হয়ে গিয়েছে পুলিশ পুরো ভিডিও প্রকাশ করতেই। বারবার পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলে বিকৃত প্রচার করে দেখানো হয়েছে লাথি মারার দৃশ্য। সেই লাথি-কাণ্ড নিয়েই এবার কবিতা লিখে প্রতিবাদ জানালেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এর আগে কবি সুবোধ সরকার কবিতা লিখে কটাক্ষ করেছিলেন‌। তৃণমূলের মিডিয়া সেলের চেয়ারম্যান দেবাংশু ভট্টাচার্যও দিয়েছিলেন কড়া ভাষায় জবাব। এবার কুণাল ঘোষ।
তাঁর কবিতার নাম ‘বুড়ো খোকাদের জন্যে’। কবিতার ছত্রে ছত্রে তিনি শ্লেষ দেগেছেন বাম-বিজেপিকে। পুলিশের উপর আগে হামলার কথা যেমন বলেছেন, তেমনই যাদবপুরের অধ্যাপককে লাথি মারার ঘটনাও কবিতার ছন্দে তুলে ধরেছেন কুণাল। আবার বাম জমানার অনিয়মের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরি-জট কাটানোর সদিচ্ছার বার্তাও তুলে ধরেছেন।

এ-প্রসঙ্গেই এক ঝলক চোখ বুলিয়ে নিয়ে যাক কুণাল ঘোষের সেই কবিতায়…
পুলিশ যখন পা তুলল
ছবি দেখিয়ে রাগ করো,
ঠিক তার আগে হামলা করে
তোমরা যখন তাকে মারো?
তার বেলা?
কসবা হলে লাথি খারাপ
যাদবপুরের লাথি ভালো,
লাথির বিচার কোন বিবেকে
এইটুকু তো আগে বলো।
বলবে না?
দোষ করলে শাস্তি সে পাক
চাকরি হোক জট খুলে,
বাম জমানার সব অনিয়ম
কমরেড কি গেছো ভুলে??

শুধু এখানেই শেষ নয়। সিপিএম জমানার যত অনিয়ম তা তুলে ধরেও তিনি পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, সিপিএম জমানায় খবর হত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশ আর হার্মাদদের গুলিতে গণহত্যা নিয়ে। যেমন ১৯৯৩-এর একুশে জুলাই, করন্দা, নন্দীগ্রাম, নেতাই, নানুর, কোচবিহার ( ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মীরা খুন) ইত্যাদি পরের পর ঘটনা।এখন খবর হচ্ছে, শিক্ষকদের হামলা, পুলিশ পেটানোর অংশের ভিডিও না দেখিয়ে শুধু পুলিশের পাল্টা প্রতিক্রিয়াজনিত বিচ্ছিন্ন অ্যাকশনের ছবি দেখিয়ে। যাতে গুলির প্রশ্নই নেই, পা তোলার মুহূর্তটি নিয়ে বিতর্ক। আর সেটুকু নিয়েই চলছে বিষ-প্রচার। কুণালের সাফ কথা, তফাৎটা মানুষ দেখছেন, বুঝছেন।

হ্যাঁ তফাৎটা তো বুঝছেনই। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশ পুরো ভিডিও প্রকাশ প্রকাশ করতেই বিকৃত প্রচার ও বিরোধীদের মিথ্যাচারের পর্দাফাঁস হয়ে গিয়েছে। ভিডিও-য় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কীভাবে রাজনৈতিক প্ররোচনা-পুষ্ট চাকরিহারারা উচ্ছৃঙ্খলভাবে পুলিশকর্মীদের উপর চড়াও হয়েছে! পুলিশের উপর এই নজিরবিহীন আক্রমণ ও নিয়ম ভেঙে সরকারি অফিসে ঢোকার চেষ্টাও মানুষ দেখছেন। মানুষ দেখছেন, পুলিশকে কীভাবে বাধ্য করা হয়েছিল প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। শুধু চাকরিহারাদের একাংশ নয়, সেখানে যে রাম-বামের মদতপুষ্ট লোকেরা ছিল তাও প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। পুলিশ সাফ বক্তব্য, প্রথমে আক্রমণের মুখে পড়ে পুলিশই। তার পরেই ‘আত্মরক্ষার্থে’ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে তারা। সেইসঙ্গে কেন শিক্ষকদের ‘লাথি’ মারা হল, জানতে চেয়ে রিপোর্ট তলব করেছেন সিপি। এ-প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার কথাও উঠে এসেছে। যাদবপুর প্রসঙ্গ তুলে বিরোধীদের আক্রমণ করেছেন কুণাল ঘোষ, দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুবোধ সরকাররা। তাঁরা বলেছেন শিক্ষকদের উপর পুলিশ বাধ্য হয়ে অ্যাকশন নিলে খারাপ। আর অধ্যাপককে বাম-রাম ছাত্ররা লাথি মারলে ভাল! উল্লেখ্য, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রকে ‘লাথি’ মারা হয়েছিল।