চক্রান্তে পা না দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে যোগ দিন: ডাক ইমাম-মোয়াজ্জেম-বুদ্ধিজীবীদের

ওয়াকফ বিরোধী (WAQF Amendment Act) আন্দোলন দীর্ঘ হবে। সেখানে হিংসা ছড়ালে সেই আন্দোলন কখনও দীর্ঘস্থায়ী হয় না

ওয়াকফ নিয়ে বিজেপি যেভাবে চাপিয়ে দেওয়ার রাজনীতি মুসলিম সমাজের উপর করতে চাইছে তার প্রতিবাদ গোটা দেশজুড়ে চলছে। গোটা দেশে রাজনৈতিক উচ্ছৃঙ্খলতা তৈরি করার কাজ করছে বিজেপিই (BJP), দাবি রাজ্যের ইমাম মোয়াজ্জেম (Imam Muezzin) সংগঠনের। সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিদ্বেষমূলক আইন একের পর এক চাপিয়ে চলেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। আর তার পরেই চক্রান্ত করে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় অশান্তি তৈরি করা হচ্ছে, স্পষ্ট করে দেন সংগঠনগুলির প্রধানরা। মুর্শিদাবাদের ঘটনাও সেই রকমই চক্রান্তের ফল। তাই বিজেপির চক্রান্তে (conspiracy) পা না দিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee) ডাকা বৈঠকে ১৬ এপ্রিল যোগ দেওয়ার ডাক দেন তাঁরা। রাজ্যের মানুষের জন্য় যেভাবে ভাবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, তিনিই এই ওয়াকফ আইনের (WAQF Amendment Act) প্রতিবাদে আন্দোলনের পথ স্পষ্ট করে দেবেন, প্রত্যাশা রাজ্য়ের ইমাম মোয়াজ্জেম সংগঠনগুলির।

রবিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে রাজ্যের ইমাম, মোয়াজ্জেম ও বুদ্ধিজীবীদের সংগঠনের তরফ থেকে একটি সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয় সাম্প্রতিক মুর্শিদাবাদের ঘটনার প্রেক্ষিতে। সেখানেই শীর্ষ ধর্মীয় নেতারা স্পষ্ট করে দেন কীভাবে জোর করে মুসলিমদের ধর্মীয় আচরণের উপর জোর করে নিজেদের আইন চাপিয়ে দিচ্ছে মোদি সরকার। সেই সঙ্গে উল্লেখ করা হয়, কেন্দ্রে মোদি সরকারের জমানায় প্রতিটি আইন প্রণয়ন থেকেই স্পষ্ট সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিদ্বেষমূলক আইন। তাঁদের এই দেশের শত শত বৎসর ধরে চলে আসা প্রথাকে ভেঙে ফেলে নিজেদের মত চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছে মোদি সরকার।

সেই মুসলিমদের বিরোধী ওয়াকফ সংশোধনী আইনের (WAQF Amendment Act) বিরোধিতা গোটা দেশ জুড়ে চলছে। সংগঠিত হচ্ছে আন্দোলন। কিন্তু তারই মধ্যে প্ররোচনা দিয়ে সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা চলছে। মুর্শিদাবাদ থেকে আসা এক সদস্য জানান। বহিরাগত চক্রান্তে মুর্শিদাবাদে অশান্তি ছড়ায়। সেই চক্রান্তে যারা পা দিয়েছিলেন তাঁদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অনুরোধ করেন সদস্যরা। কারণ ওয়াকফ বিরোধী (WAQF Amendment Act) আন্দোলন দীর্ঘ হবে। সেখানে হিংসা ছড়ালে সেই আন্দোলন কখনও দীর্ঘস্থায়ী হয় না। সেই সঙ্গে প্রশাসনের পাশে থাকারও বার্তা দেন তাঁরা। স্পষ্ট করে দেন, ইসলাম অশান্তিকে প্রশ্রয় দেয় না।

কয়েকশো বছর ধরে যেভাবে ভারতে তথা বাংলায় হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সহাবস্থান করছেন সাধারণ মানুষ, তা সম্প্রতি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কিছু পদক্ষেপের ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে, স্পষ্ট করে দেন সংগঠনের সদস্যরা। তার উদাহরণ হিসাবে তাঁরা তুলে ধরেন যে সংসদ থেকে ওয়াকফ আইন পাস হয়েছে সেখানে বিজেপির কোনও মুসলিম সদস্য নেই। তাঁদের রাজনীতি হিন্দু-মুসলিমদের বিরোধ বাঁধিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলা। ওয়াকফ আন্দোলন কোনও একটি ধর্মের অধিকারের আন্দোলন নয় বলেও দাবি করেন তাঁরা। নাহলে আগামীদিন খ্রীস্টানদের (Christian) সম্পত্তিতেও হাত দেবে বিজেপি।

সেই জায়গা থেকেই এই ওয়াকফ বিরোধী আন্দোলনকে কোন পথে চালিত করা হবে, তা নিয়ে বৈঠক ১৬ এপ্রিল। সেখানে তাঁরা গুরুত্ব দিচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কী বার্তা দেন, তাকেই। ইতিমধ্যেই শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় একটি বার্তা দিয়েছেন এই কালা আইন প্রসঙ্গে। তারই বিস্তারিত তাঁরা ১৬ এপ্রিলের বৈঠকে শুনতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বলে জানান।