পরিকল্পিতভাবে বাংলায় অশান্তি ছড়িয়ে নির্বাচনী ফায়দা লোটার বিজেপির চক্রান্ত এখন গোটা রাজ্যের কাছে স্পষ্ট। বিধানসভা নির্বাচনের এক বছর আগে থেকে বাংলা দখলে ধর্মীয় তাস ছাড়া যে আর কোনও পন্থা বিজেপির কাছে বাকি নেই, তা বুঝে গিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। তাই কার্যত দিল্লি থেকেই ছক সাজিয়ে আইটি সেলকে মাঠে নামিয়ে সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে বাংলার নির্দিষ্ট কিছু অংশে অশান্তি ছড়ানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumder) সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিলিট করে ফেলা আরও স্পষ্ট করে দিচ্ছে বিজেপির পরিকল্পিত চিত্রনাট্য, দাবি তৃণমূল মিডিয়া ও আইটি সেল রাজ্য সভাপতি দেবাংশু ভট্টাচার্যের। সেই সঙ্গে মুর্শিদাবাদের ঘটনার পর্যায়ক্রমের উল্লেখ করে বিজেপির পরিকল্পনার পর্দাফাঁস করে দিলেন দেবাংশু (Debangshu Bhattacharya)।

গোটা চিত্রনাট্য যে আগে থেকেই তৈরি করা তা তুলে ধরা তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে দেবাংশু বলেন, গোটা ঘটনার একটা প্যাটার্ন (pattern) রয়েছে। তিন চারটি জায়গায় একইভাবে অশান্তি লাগানো হয়েছে। আবার একই রকম সময়ের ব্যবধানে একইভাবে ছবি তুলে সেগুলি পোস্ট হয়েছে। যদিও সেগুলি অশান্তির এলাকার ছবি কি না তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তবে যেভাবে ছবি তুলে ছড়ানো হয়েছে, তাতে প্রশ্ন উঠছে আগে যেন কেউ রেডি ছিল এমন ঘটনা ঘটবে ও তার ছবি তোলার জন্য।

তবে মুর্শিদাবাদে হিংসা-খুনের ঘটনার পরেও বাংলাকে উত্তপ্ত করে তুলতে পারেনি বিজেপি। পুলিশ-প্রশাসন দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামলে নিয়েছে। তাতেই সাজানো পরিকল্পনা মাঠে মারা যেতে মাঠে নেমেছে আইটি সেল। বিজেপি শাসিত রাজ্যের হিংসার ছবি এরাজ্যের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ছবি বলে তুলে ধরে অশান্তি তৈরির চেষ্টা হয়েছে। সেই মরিয়া চেষ্টা নিয়ে এর আগেই তৃণমূল আইটি সেলের পক্ষ থেকে মিথ্যাচারের পর্দাফাঁস করে দেওয়া হয়। বিজেপি প্রকাশিত সেই নয়টি ছবি ধরে ধরে দেবাংশু (Debangshu Bhattacharya) দেখিয়ে দেন কীভাবে আইটি সেল বিজেপি রাজ্যের কুকীর্তির ছবি দিয়ে বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা করেছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder) আবার সেই ছবি পোস্ট করার আবার ডিলিট (delete) করায় আরও স্পষ্ট হয়েছে কুকীর্তি।

নির্বাচনের এক বছর আগে বাংলাকে ধর্মীয়ভাবে উত্তপ্ত করতে না পারলে যে বাংলা দখল সম্ভব হবে না, বুঝেই পরিকল্পিত চক্রান্ত বলে দাবি দেবাংশুর। আর সেই পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে দেবাংশু তুলে ধরেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি মেসেজ ঘুরে বেড়াচ্ছে যেখানে ছোট বস (boss), বড় বস বলা হচ্ছে। কারা এই বস জানা নেই। তবে এই ছোট বসের (boss) নির্দেশেই না কি গোটা ঘটনা ঘটানো হয়েছে।



কার্যত দিল্লি দখলের পরিকল্পনাই যে বাংলার ক্ষেত্রেও যে বিজেপি প্রয়োগ করেছে স্পষ্ট করে দেন দেবাংশু। তথ্য তুলে বলেন, ২০২০ সালে দিল্লি নির্বাচনের (Delhi Assembly Election) আগে দিল্লিতে ধর্মীয় হিংসা পরিকল্পিতভাবে বাঁধিয়েছিল বিজেপি। নির্বাচনের দশ মাস আগে সেই হিংসা বাঁধানো হয়েছিল। এখানেও নির্বাচনের প্রায় এক বছর আগে ধর্মীয় হিংসা ছড়ানোর একই পরিকল্পনা। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পুলিশ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে ধর্মীয় হিংসা বড় আকার নিয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দেবাংশু।


আর সেখানেই তিনি উদাহরণ টানেন, যে বিজেপি নেতারা এখন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী (central force) মোতায়েনকে রাজ্যের ব্যর্থতা বলে প্রচার করার চেষ্টা করছেন, তাঁরা কী ত্রিপুরার কথা ভুলে যাচ্ছেন। ত্রিপুরাতেও (Tripura) ওয়াকফ আন্দোলনের হিংসা বন্ধ করতে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী ডেকেছে বিজেপি প্রশাসন, তা স্মরণ করিয়ে দেন দেবাংশু।

–

–

–
–

–
