আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর পর শুরু হওয়া আন্দোলনের নামে তোলা টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে, তা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্যজুড়ে। আন্দোলনের অফিস ভাড়া বাবদ ২৫ হাজার, লিফলেট ছাপাতে ১ লক্ষ ১২ হাজার, আর জল-বিস্কুট-ডিনার প্যাকেট কিনতে ব্যয় ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা—এই হিসাব সামনে আসতেই উঠেছে প্রশ্ন: ‘‘এ কোন আন্দোলন?’’

বুধবার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্ট (জেডিএফ)-এর দেওয়া ‘অসম্পূর্ণ’ হিসাব দেখে বিস্মিত নাগরিক সমাজ। চিকিৎসকদের প্রগতিশীল সংগঠন প্রোগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ডা. করবী বড়াল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘একজন মেয়ে মারা গিয়েছে, সেই বিচারের দাবিতে আন্দোলন চলছে—সেখানে খিচুড়ি, বিরিয়ানি খাওয়া কিসের ইঙ্গিত দেয়?’’

জানা গেছে, আন্দোলনের সময় কিউআর কোড ও নগদ—দুই উপায়ে টাকা তোলা হয়েছিল। আর জি কর, মেডিক্যাল কলেজ, এবং জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্ট মিলিয়ে প্রায় ৩ কোটি ৬৭ লক্ষ ২১ হাজার টাকা উঠেছে। তবে অন্যান্য সরকারি মেডিক্যাল কলেজের রেসিডেন্ট ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের তোলা টাকার কোনও হিসাব মেলেনি।

আবার অভয়ার নামে প্রার্থনা অনুষ্ঠানে ৫৫ হাজার টাকা খরচ, আর জি করের বাইরে মূর্তি তৈরিতে আরও ৫৫ হাজার টাকা ব্যয়, নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। যেখানে আগে বলা হয়েছিল মূর্তিটি শিল্পী বিনামূল্যে তৈরি করেছেন।


এই ‘বেহিসাবি’ খরচের জন্য জুনিয়র চিকিৎসকদের নয়, বরং কিছু ‘সিনিয়র’ চিকিৎসকের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভূমিকাকে দায়ী করেছে প্রোগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশন। অন্যদিকে, আন্দোলনের সময় চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর বিতর্কিত মন্তব্য—‘‘দেড়শো গ্রাম বীর্য’’—নিয়ে নিজেরাই এখন মুখ বাঁচাতে ব্যস্ত জেডিএফ নেতৃত্ব।

বুধবারের গণকনভেনশনে অভয়ার বাবা-মাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, আগামী নবান্ন অভিযানে যোগ দেবেন। জেডিএফ-এর পক্ষ থেকে এদিন সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে—এই আন্দোলন সম্পূর্ণ ‘অরাজনৈতিক’ ছিল না।

নাগরিক সমাজের প্রশ্ন, ‘‘জনগণের টাকা তোলার পরে এমন খরচ দেখিয়ে দায় এড়ানো যায়?’’ আরও স্পষ্ট হিসাব ও দায়িত্বের দাবি তুলেছে গোটা সমাজ।

আরও পড়ুন – নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগের আশঙ্কা! ফের বাতিল একগুচ্ছ ব্যান্ডেল-কাটোয়া লোকাল

_

_

_

_