চিরকাল মা-মাটি-মানুষ গোত্রে পুজো করি: দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে মহাযজ্ঞে পূর্ণাহুতি দিয়ে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

আমার গোত্র মা-মাটি-মানুষ। চিরকাল আমি মা-মাটি-মানুষ গোত্রে পুজো করি। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে মহাযজ্ঞের পরে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, মা মাটি মানুষ গোত্রে পুজো হয়েছে। মা মাটি মানুষ ভালো থাকলে, আমি ভালো থাকি। সবার হয়েই এটা অর্পণ করা হল। দিঘার জগন্নাথ মন্দির (Jagannath Temple) উদ্বোধনের সূচনা পর্বের শুরু হল। মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব নিধারিত সূচি মেনে মহাযজ্ঞে পূর্ণাহুতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথম ধ্বজা তোলা হয়। তার পরে সওয়া চারটে নাগাদ পূর্ণাহুতি দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইত রাজেশ দ্বৈতাপতি ও ইসকনের কর্মকর্তা রাধারমণ দাস-সহ অন্যান্য পুরোহিত-সেবাইতরা। মমতা বলেন, ধর্ম কারও একার নয় ধর্ম সকলের। সব তীর্থস্থানে সবাই যেতে পারে। বিষয়টিকে হৃদয় দিয়ে অন্তর দিয়ে ছুঁয়ে যেতে হয়। ধর্মের অধিকার কারও একার নয়। ধর্ম হল মানুষের আস্থা-ভরসা, ভালবাসা-বিশ্বাস।

বিকেল তিনটের কিছু পরেই দিঘার জগন্নাথ মন্দির (Jagannath Temple) চত্বরে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে গিয়ে প্রথমে মঙ্গলপুজো করেন মমতা। সেখানে তুলসীগাছ বসানো হবে। এর পরে ধ্বজা তোলা হয়। পূর্ণাহুতির পরে মমতা বলেন, “সমস্ত ধর্ম-বর্ণের মানুষ এসেছেন এখানে। প্রত্যেকেই আমাদের অতিথি। ধর্ম কখনও মুখে প্রচার করে হয় না। ধর্মে হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার জিনিস। মা-মাটি-মানুষ ভাল থাকলে আমি ভাল থাকব। তাই সকলের হয়ে প্রার্থনা করছি।“ এদিন পূজোর সময় পুরোহিত মুখ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, আপনার গোত্র শান্ডিল্য তো? মুখ্যমন্ত্রী উত্তর দেন, আমার গোত্র মা-মাটি-মানুষও। চিরকাল আমি মা-মাটি-মানুষ গোত্রে পুজো করি। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন,  মা মাটি মানুষ গোত্রে  পুজো হয়েছে। মা মাটি মানুষ ভালো থাকলে , আমি ভালো থাকি। সবার হয়েই এটা অর্পণ করা হলো।

মহাযজ্ঞ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জগন্নাথ ধাম, আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হয়েছে। এটা বাংলার গর্ব দেশের গর্ব। আমরা সকলে গর্বিত।  এত সুন্দর আর্কিটেকচারের কাজ হয়েছে। এত সুন্দর ভাবে পূজা হচ্ছে। পুরী থেকে দয়িতাপতিরা টিম নিয়ে এসেছেন। ইসকন দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছে।  টোটাল টিম আছে ওদের। আদ্যাপীঠের মুরাল ভাই এসেছেন। দক্ষিণেশ্বর থেকে কুশলরা এসেছেন। বেলুড় মঠ-কামারপুকুর থেকে শুরু করে সনাতন ধর্মের লোকেরা এসেছেন। সব ধর্মের সব বর্ণের লোকেরা এসেছেন। জয়রামবাটি থেকে এসেছেন।

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, যতটা সম্ভব অন্তর দিয়ে হৃদয় দিয়ে আমরা চেষ্টা করেছি। এরপরই তিনি বলেন, ধর্ম মুখে প্রচার করে হয় না। ধর্ম হৃদয় দিয়ে ছুঁয়ে যায় মানুষের আস্থা- ভরসা ও বিশ্বাস এবং ভালোবাসা  মহাযজ্ঞ হল।

বুধবারের উদ্বোধনের অনুষ্ঠানসূচি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,

    • বেলা আড়াইটা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে
    • তিনটের সময় দ্বারোদ্ঘাটন
    • তারপরে জনতার জন্য খুলে দেওয়া হবে জগন্নাথ ধাম।
    • সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গায়ক রূপঙ্কর বাগচী, নচিকেতা, অদিতি মুন্সী , ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়,  জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মালিয়া, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবলীনারা এসেছেন। বুধবার দেব আসছে। সায়ন্তিকা আরও অনেকে এসেছে দেখলাম। অনেক  শিল্পপতিও এসেছেন। এদিনের মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পরিচালক অরিন্দম শীল, প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাও। পাঁচমন্ত্রী  ছাড়াও আরেক মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনও এদিন উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন আধিকারিকরাও।

২৫ এপ্রিল থেকে দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরে শুরু হয়েছে হোম যজ্ঞ। রাজেশ দ্বৈতাপতির পাশাপাশি পুজোর আচার অনুষ্ঠানের জন্য পুরী থেকে এসেছেন ৫৭ জন সেবক। এছাড়াও ইসকনের ১৭ জন সন্ন্যাসীর তত্ত্বাবধানে চলছে যজ্ঞ।