মধ্যরাতে যুদ্ধের আশঙ্কা করে ভিডিও বার্তা পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী আতাউল্লা তারারের। মঙ্গলবার থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) টানা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক করার পরে পাকিস্তানে যে যুদ্ধের আশঙ্কায় জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে, তা মধ্যরাতে আচমকা এই বার্তাতেই স্পষ্ট। তবে যেভাবে প্রকাশ্যে সবকিছু জানান দিয়ে বৈঠক করেছেন মোদি, তাতে ভারত যে কোনও সার্জিকাল স্ট্রাইকের (surgical strike) পথে যাচ্ছে না, তা বিশ্বাস করা সম্ভব হয়নি পাকিস্তানের পক্ষে। তড়িঘড়ি বার্তা দিয়ে কোনও ধরনের হামলা হলে তাতে যে দায় ভারতের থাকবে, তা-ই বার্তা দিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন পাক মন্ত্রী।

যুদ্ধজিগির ভারতের পক্ষ থেকে যে প্রতিদিন নরেন্দ্র মোদি তুলেছেন, তাতে পাকিস্তান ক্রমাগত প্রত্য়াঘাতের বার্তা দিয়েছে। মঙ্গলবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, তিন সেনা প্রধান ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকও পহেলগাম হামলার পাল্টা উত্তর দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। বুধবার ফের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক ডাকা হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতেই মঙ্গলবার মধ্যরাতে বার্তা দেন আতাউল্লা তারার (Ataullah Tarar)। সেখানে তিনি দাবি করেন, ভারত ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালাতে পারে। যে কোনও ধরনের প্ররোচনাবিহীন হামলার নিন্দা করা হচ্ছে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পেহেলগামে হামলার (Pahalgam attack) যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন বলে আবারও দাবি করেন মন্ত্রী।

যে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী নিজে ৩০ বছর ধরে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে, সেই পাকিস্তানেরই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবার দাবি করলেন, পাকিস্তান নিজেই সন্ত্রাসবাদের শিকার। সন্ত্রাসবাদের কুফল দীর্ঘদিন ধরে তাঁরাই ভোগ করে চলেছে। পহেলগাম হামলায় নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও স্বতন্ত্র তদন্ত দাবি করেছিল পাকিস্তান। তা মেনে না নিয়ে ভারত ঝুঁকিপূর্ণ সংঘাতের পথই বেছে নিয়েছে। যেখানে পহেলগামের ঘটনার পর থেকে প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে বিনা প্ররোচনায় গুলি চালানোয় অভিযুক্ত পাকিস্তান, সেখানে তারাই ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধজিগিরের অভিযোগ তুলছে। নিজেরাই অভিযোগ তুলে হুমকি দিতেও বাকি রাখেননি পাক মন্ত্রী তারার। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, কোনও এই ধরনের হামলা হলে পাকিস্তান তার প্রত্যুত্তর দেবে।

একদিকে ভারতের পক্ষ থেকে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিদিন একবার করে শোধ নেওয়ার কথা বলছেন। নিজে কাশ্মীরে বা নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা না করলেও বিদেশ সফর বাতিল করেছেন তিনি। আগামী মাসের প্রথমেই রাশিয়া যাওয়ার কথা ছিল মোদির। সেই সফর বাতিলের কথা জানিয়েছে ক্রেমলিন। অন্যদিকে পাকিস্তানের তরফ থেকে প্রতিদিনই লাইন অফ কন্ট্রোলে হামলা চালিয়ে চলেছে পাকিস্তান। হুমকি দিচ্ছেন একের পর এক পাক মন্ত্রীরা। এই পরিস্থিতিতে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কায় দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বকে ফোন করলেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুয়েতরেজ।

পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shahbaz Sharif) দাবি করেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের (United Nations) মহাসচিবের (Secretary General) সঙ্গে পহেলগাম হামলা (Pahalgam attack) নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। সেখানেই পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সেক্রেটারি জেনারেল স্তরের আলোচনা সাপেক্ষে সমাধানের আবেদন জানান শাহবাজ। অন্যদিকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গেও কথা বলেন গুয়েতরেজ। সেখানেও তিনি আইনি পথে হামলার প্রত্যাঘাতের দাবি জানান।

–

–

–

–

–

–

–
