Saturday, August 23, 2025

হাতে তৈরি পেনের সম্ভার! শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাস মনে করালো পেন উৎসব ২০২৫

Date:

Share post:

বাঁশ বা খাগের শলাকা কেটে পেন বানিয়ে কালিতে ডুবিয়ে লেখার ইতিহাস তৈরি করেছিলেন প্রাচীন মিশরের (Egypt) মানুষ। আজ সেই খাগের কলমও নেই, লেখার প্যাপিরাসও নেই। কিন্তু সেই খ্রীষ্টপূর্ব সাড়ে তিন হাজার বছরের ইতিহাসকে ধরে রাখার নেশা রয়ে গিয়েছে মানুষের মধ্যে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে – ইউরোপ থেকে আমেরিকা, চিন – সব দেশের কয়েক শতাব্দী ধরে হাতে তৈরি পেনের কদর করে এসেছেন মানুষ। সেই পেন তৈরিতে প্রস্তুতকারকদের উৎসাহও কম ছিল না। ভারতে হাতে তৈরি পেনের প্রতি মানুষের আকর্ষণটা অনেকটাই নতুন হলেও আজ সেই ইতিহাসও শতাব্দী প্রাচীন। দেশের ঐতিহ্যের ধারক হ্যান্ড মেড পেনের (hand made pen) বিপুল সম্ভার নিয়ে হাজির পেন উৎসব ২০২৫। উত্তর ভারত থেকে দক্ষিণ ভারত – প্রত্যেক সভ্যতার নিদর্শন তুলে ধরে নিজেদের তৈরি কলম নিয়ে হাজির পেন প্রস্তুতকারকরা।

ভারতে হ্যান্ড মেড পেন তৈরি শুরু হয় ১৯২০-র দশকে। সূচনায় মূল ভূমিকা নিয়েছিল তৎকালীন মাদ্রাজ। সেই শহরে যে আজও হাতে পেন তৈরির প্রতি আবেগ থাকবে মানুষের তা বলাই বাহুল্য। সেই চেন্নাই থেকে নিজেদের হাতে তৈরি পেনের সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছিল রাঙ্গা পেন্স। কর্ণধার কন্যা পদ্মা জানান, প্রায় ৬০ বছর ধরে হাতে পেন তৈরির ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন এম পান্ডুরঙ্গন। রাঙ্গা পেন্স-এর (Ranga Pens) খ্যাতি ভারত জোড়া। কলকাতার ভক্তদের জন্য প্রথমবার পেনের পসরা সাজিয়ে তাঁরা এসেছেন কলকাতায়। সেই পসরায় যেমন রয়েছে অ্যাক্রিলিক পেন, তেমনই রয়েছে তামা, অ্যালুমিনিয়ামের পেনও। রয়েছে শিংয়ের তৈরি পেনও।

দক্ষিণ ভারতের ঐতিহ্যের সম্ভারের পাশাপাশি পেন উৎসব ২০২৫-এ এসেছেন উত্তর ভারতের হাতে তৈরি পেন প্রস্তুতকারকরাও। দিল্লি (Delhi) থেকে হ্যান্ড মেড পেন (Hand made pen) নিয়ে এসেছেন রবি তেওয়ারি। উত্তর ভারতের হাতে তৈরি পেনের ইতিহাস যে দক্ষিণের থেকে কিছুটা নতুন, তা জানালেন রবি। তাঁর সংগ্রহের পেন গুলির মধ্যে গালার উপর সোনা, রুপোর কাজের দেখা মিলল। তাক লাগিয়ে দেবে ডিমের খোসা দিয়ে তৈরি হাতে কাজ। পেনের গায়ে ভারতীয় শিল্পীদের অসামান্য় হাতের কাজ ফুটে উঠেছে। কোনও পেন তৈরি করতে ২০দিন, তো কোনও পেন তৈরি করতে ৩০ দিন সময়ও লাগে বলে জানালেন রবি।

তবে দেশের যে প্রান্ত থেকেই শিল্পী ও কারিগররা এই পেন উৎসব ২০২৫-এ এসেছেন, তাঁদের সকলেরই দাবি, কলকাতাই শিল্পের কদর করে। পেন উৎসবে আসা পেন অনুরাগীদের প্রশ্নের মধ্যে দিয়েই সেটা প্রমাণিত। তাঁরা যে দীর্ঘদিন ধরেই এই সব পেন প্রস্তুতকারকদের খোঁজে ছিলেন, তাও জানালেন তাঁরা। প্রস্তুত কারকরা জানাচ্ছেন, তাঁরা কলকাতায় নিজেদের সামগ্রী তুলে ধরে লাভের মুখ যেমন দেখছেন, তেমনই ভরছে তাদের মনও।

বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পী ও তাঁদের সামগ্রীকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসা যে কষ্টকর ছিল, স্বীকার করছেন উদ্যোক্তা সায়ক আঢ্য। তিনি জানাচ্ছেন, সকলকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসা কষ্টকর হলেও এটাই তিনি ভালোবাসেন। পেনের প্রতি আকর্ষণ থেকেই এই দায়বদ্ধতা অনুভব করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে বহু মানুষের উৎসাহ তাঁকে আরও এগিয়ে দিয়েছে। এবছরই আবার পেন উৎসব আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন উদ্যোক্তা ও তাঁর সহযোগীরা।

spot_img

Related articles

পুজোর আগে প্রায় দ্বিগুণ দুধ উৎপাদনে বাংলার ডেয়ারি 

কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে প্যাকেটজাত দুধের জোগান বাড়াতে রাজ্য সরকারি ব্র্যান্ড বাংলার ডেয়ারি বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। পুজোর...

পিছনে দৌড়! স্নাতক স্তরে বৈদিক গণিত আনার চেষ্টা UGC-র

গোটা বিশ্ব গণিতের ক্ষেত্রে যেখানে নতুন উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে আসছে, সেখানে ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছন দিকে হাঁটা শুরু...

হালিশহর ও কাঁচরাপাড়া পেল স্বচ্ছ ভারত মিশনের ‘ওডিএফ প্লাস’ সার্টিফিকেট 

বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের প্রান্তিক দুই শহর হালিশহর ও কাঁচরাপাড়া এবার স্বচ্ছ ভারত মিশনের ‘ওপেন ডিফেকেশন ফ্রি প্লাস’ (ওডিএফ প্লাস)...

ফের ডুরান্ড কাপ জয় নর্থইস্টের

প্রতিযোগিতায় দুরন্ত শুরুটা করলেও শেষরক্ষা করতে পারল না। একটানা ম্যাচ। নর্থইস্ট ইউনাইটেডের(North East United) বিরুদ্ধে খানিকটা ক্লান্তিটাই যেন...