রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তৈরি হওয়া অ্যাপ-নির্ভর ক্যাব পরিষেবা ‘যাত্রী সাথী’ ইতিমধ্যেই ১ কোটিরও বেশি সফল যাত্রা সম্পূর্ণ করেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্বোধনে শুরু হওয়া এই পরিষেবা আজ রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় পরিবহণ বিকল্প হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে ১ লক্ষেরও বেশি চালক এবং ৩৭ লক্ষেরও বেশি রেজিস্টার্ড যাত্রী এই অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত। পরিষেবা চালু রয়েছে কলকাতা, শিলিগুড়ি, আসানসোল ও দুর্গাপুরে। বেসরকারি ক্যাব অ্যাপগুলোর থেকে এই অ্যাপের অন্যতম বড় পার্থক্য—কোনও কমিশন কাটা হয় না। শুধুমাত্র ১০ টাকার নির্ধারিত সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য, ফলে চালকদের হাতে রাইডের পুরো ভাড়াটাই আসে।

পরিবহণ দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত যাত্রী সাথী অ্যাপের মাধ্যমে চালকরা প্রায় ২৮০ কোটি টাকা আয় করেছেন। রাজ্য ট্রাফিক পুলিশের আইজি সুকেশ কুমার জৈন জানান, অন্যান্য অ্যাপে চালকদের ২০–৩০ শতাংশ কমিশন কেটে নেওয়া হত, যাত্রী সাথীর ক্ষেত্রে সেই বোঝা অনেকটাই কমেছে। একইসঙ্গে যাত্রীরাও পাচ্ছেন স্বল্পমূল্যে মানসম্মত পরিষেবা।

পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এই অ্যাপ চালকদের কাছে এক নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। অনেকে বেসরকারি প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে এখন পুরোপুরি যাত্রী সাথীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন কলকাতায় গড়ে ২৫,০০০-এরও বেশি রাইড হচ্ছে যাত্রী সাথীর মাধ্যমে।

অ্যাপে রয়েছে বাইক ট্যাক্সি, পার্সেল ডেলিভারি, ও জনপ্রিয় গন্তব্যস্থলের (যেমন—আলিপুর চিড়িয়াখানা, ইকো পার্ক, নিপ্পো পার্ক) টিকিট বুকিং-এর সুবিধা। সম্প্রতি যোগ হয়েছে ‘হোয়্যার ইজ মাই বাস’ নামের রিয়েল-টাইম বাস ট্র্যাকিং সুবিধা ও অনলাইন বাস টিকিট বুকিং।
ভবিষ্যতে অ্যাপে ফেরি পরিষেবা সহ আরও মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে, যার মাধ্যমে যাত্রী সাথী হয়ে উঠতে চলেছে রাজ্যের পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পরিবহণ প্ল্যাটফর্ম।

আরও পড়ুন – রেকর্ড রূপান্তরকামীদের! সিবিএসই দশম-দ্বাদশের ফল প্রকাশ, এগিয়ে মেয়েরাই

_

_

_


_

_

_

_

_