পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলিকে ভারত থেকেই সাহায্য় করা হয়েছে ব্যাপকভাবে। সম্প্রতি পঞ্জাব, হরিয়ানা থেকে ছয় গ্রেফতারিতে পরতে পরতে ফাঁস হয়েছে সেই সত্যি। দেশের তথ্য পাক গুপ্তচরদের হাতে তুলে দেওয়া থেকে ভারত বিরোধী ভিডিও বা পাকিস্তানের সপক্ষে ভিডিও বানিয়ে ক্রমশ ভারতে জঙ্গি নাশকতামূলক কাজে সাহায্য় করেছে আম আদমির ছদ্মবেশে ভারতে ঘুরে বেড়ানো ভারতীয় নাগরিকরাই। সম্প্রতি ভারতীয় ইউটিউবার জ্য়োতি মালহোত্রা বা বিধবা মহিলা গুজালার কার্যকলাপের যতটুকু প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে এই সব সত্যিই প্রমাণিত হয়েছে। এই সব কাজ কেউই বিনা পারিশ্রমিকে করতে না, তা প্রকাশ্যে এলো কৈরানা (Kairana) থেকে গ্রেফতার পাক গুপ্তচর (spy) মদতদাতা নৌমান ইলাহির বয়ানে।

পহেলগাম হামলা পরবর্তীতে প্রত্যেক রাজ্যে পাকিস্তানে তথ্য পাচার সংক্রান্ত নজরদারি শুরু করেছে প্রত্যেক রাজ্য পুলিশ। সেই নজরদারিতেই হরিয়ানা পুলিশ পানিপত থেকে গ্রেফতার করে নৌমান ইলাহি নামে এক যুবককে। তাকে জিজ্ঞসাবাদ করে প্রকাশ্যে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আদতে উত্তরপ্রদেশের কৈরানার বাসিন্দা নৌমান আগে থেকেই পাসপোর্ট এজেন্টের (passport agent) কাজ করত। সেই সূত্রে একাধিক পাক এজেন্টের সঙ্গে তার আগে থেকেই যোগাযোগ ছিল। তারই মধ্যে অন্যতম পাক গুপ্তচর কালা। কারণ কালাও একসময় কৈরানার বাসিন্দা ছিল।

নৌমানের পাকিস্তানে আত্মীয় রয়েছে। সেই সূত্রে সে অন্তত চারবার পাকিস্তানে গিয়েছিল। সেখানেই কালার সূত্রে পাকিস্তানি গুপ্তচরদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় নৌমানের, সন্দেহ তদন্তকারীদের। কালা আদতে অস্ত্র কারবারি ছিল। প্রায় ৩০ বছর আগে ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে চলে যায় এই কালা। পাকিস্তানে গিয়ে কালার সূত্রে আইএসআই এজেন্টদের সঙ্গে যোগ সূত্র তৈরি হয় নৌমানের, প্রকাশ্যে আসে তদন্তে। এরপর থেকেই পাকিস্তানে তথ্য পাচার শুরু করে নৌমান।

মূলত ভারতীয় সেনার স্থানান্তরের খবর পাচার দায়িত্ব ছিল নৌমানের। তার মোবাইল থেকে ভারতীয় সেনার (Indian Army) ট্রেনে সফরের ভিডিও পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যায় গোয়েন্দা সূত্রে। পানিপত সেনাঘাঁটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটি। উত্তরপ্রদেশের কৈরানা ছেড়ে হরিয়ানার পানিপতে এসে কম্বলের কারখানায় নৌমানের কাজ করার পিছনেও আইএসআই-এর (ISI) হাত রয়েছে কি না তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কারণ এখানেই সে ট্রেনে ভারতীয় সেনার (Indian Army) ভিডিও বানিয়ে পাকিস্তানি গুপ্তচরদের (spy) দিত। যার প্রতিটি ভিডিওর বিনিময়ে পাঁচ হাজার টাকা পেত সে।

নৌমানের কাছে পাওয়া ল্যাপটপ, পেন ড্রাইভ ও মোবাইল থেকে অন্যান্য ভারতীয় এজেন্টদের তথ্য পেতে সুবিধা হয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের। পাকিস্তানে টাকার বিনিময়ে নৌমান যেভাবে কাজ করত, ইউটিউবার জ্যোতিও টাকার বিনিময়ে পাকিস্তানি এজেন্টদের জন্য কাজ করত কি না, তা নিয়েও তদন্ত চলছে। তবে এতদিন ধরে যে গুপ্তচরদের ধরতে পারেনি গোয়েন্দারা, তাদের এখন এত সহজে কীভাবে ধরা সম্ভব হচ্ছে, তা নিয়ে গোয়েন্দা ব্যর্থতার প্রশ্নও তুলছে স্থানীয়রা।

–
–

–

–

–

–

–

–

–
