এসএসসি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীদের পাশে কোন কোন পথে দাঁড়ানো সম্ভব, তা নিয়ে নিজের পদক্ষেপ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তা সত্ত্বেও বিকাশ ভবন ঘিরে লাগাতার আন্দোলনের পথে গিয়েছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) নিজে একাধিক বৈঠক করে পথ নির্দেশের চেষ্টা করেছেন। তা সত্ত্বেও ঘেরাও আন্দোলনে ফের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক দাবি করেছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের সংগঠন। তবে তাঁদের বৈঠকের কারণ না দেখানো হলে তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি বলে আবারও জানালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

সোমবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা (SSC teachers)। তার প্রেক্ষিতে ব্রাত্য জানান, তিনি একটি চিঠি পেয়েছেন। কিন্তু সেই চিঠিতে কি বিষয়ে বৈঠক তার যথাযথ কারণ লেখা নেই। তাই মন্ত্রী জানিয়েছেন, এই আন্দোলনরত শিক্ষকরা (SSC teachers) যদি যথাযথভাবে চিঠি দেয় তাহলে শিক্ষা দফতর তাদের সঙ্গে অবিলম্বে বৈঠকে বসবে। তবে তিনি বারবার বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে বৈঠক করেছেন এই শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের সঙ্গে। তাই নেতিবাচক কোনওরকম প্ররোচনায় পা না দিয়ে রাজ্যের উপর আস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

এদিন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ আবার দেখা করতে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের (Abhijit Ganguly) সঙ্গে। সেখানে শিক্ষক সমাজের চাকরি খাওয়া প্রাক্তন বিচারপতি আবার দাবি করেন রিভিউ পিটিশন নিরর্থক বলে। পাল্টা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী জানান, মামলার পথে চাকরি খাওয়ার কাজ করেছিলেন যারা, তাঁরা কী আবার পরীক্ষা হলে সেখানেও মামলা করে আটকানোর চেষ্টা করবেন। রাজ্য সরকার আইনের পথেই চলবে যেমন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন। এর মধ্যে কোনও নেতিবাচক মনোভাব রাখা হবে না।

শিক্ষামন্ত্রীর কথায় প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষক সমাজ দেখা করার দাবি যেমন জানিয়েছেন, তেমনই প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষকরা রাজ্যের সিদ্ধান্তের উপর আস্থা রেখে কোনও আন্দোলনে পথে না গিয়ে নিজেদের কাজ করে যাচ্ছেন। সেখানেই বিভেদ তৈরি করা শক্তির দ্বারা প্রভাবিত না হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। একই মত রাজ্য়ের শাসকদল তৃণমূলেরও। শিক্ষকদের অভিজিতের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবি করেন, চাকরিহারাদের চাকরি যাওয়াতে তো উনি (অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) খুশি। যারা চাকরিটা খাওয়ার পক্ষে বা যারা চাকরি গেলে খুশি হন. তাদের কাছে যদি চাকরিহারা শিক্ষকরা যান তাহলে তো কিছু করার নেই।

রবিবার গোলপার্কের বিবেকানন্দ সভাগৃহে বার্ষিক সভা ছিল ওয়েবকুপার (WBCUPA)। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান তথা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংসদ মালা রায়, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিধায়ক দেবাশিস কুমার, কাউন্সিলর বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, কাজরি বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আশীর্বাদ নিয়ে নতুন আঙ্গিকে কাজ করবে অধ্যক্ষদের সংগঠন। রাজ্যের বিভিন্ন কলেজের থেকে প্রায় ৩০০ জন অধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন। এই সংগঠন অধ্যক্ষদের বিভিন্ন সমস্যা ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কাজ করবে। অধ্যক্ষদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তাদের অধিকার আদায়ে সহায়তা করবে। এই সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এছাড়াও সহ উপদেষ্টা করা হয়েছে, ডাঃ দীপক কুমার কর, ডাঃ দেব কুমার মুখোপাধ্যায়, ডাঃ দেবাশীষ পাল, ডাঃ সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, ডাঃ বীর বিক্রম রায়, ডাঃ রুমা ভট্টাচার্য। নতুন এই স্টেট এক্সিকিউটিভ কমিটির প্রেসিডেন্ট হয়েছেন ডাঃ স্বাগতা দাস মহন্ত, সেক্রেটারি ডাঃ মানস কবি।

–

–

–
–

–

–
–
–
–