অঙ্কিতা ভাণ্ডারী হত্যা মামলায় শুক্রবার উত্তরাখণ্ডের কোটদ্বারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত প্রধান অভিযুক্ত পুলকিত আর্য (Pulakit Arjra)-সহ ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল। এছাড়াও, তিন অভিযুক্তের প্রত্যেককে ৫০,০০০ টাকা করে জরিমানাও ধার্য করা হয়েছে।
২০২২ সালে ১৯ বছর বয়সী রিসেপশনিস্ট অঙ্কিতা ভাণ্ডারী (Ankita Bhandari) বনান্তরা রিসর্টে কর্মরত ছিলেন। ওই রিসোর্টের মালিক ছিলেন তৎকালীন BJP নেতা বিনোদ আর্যের ছেলে পুলকিত। আচমকাই ২০২২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হন আঙ্কিতা। কয়েক দিন পরে নিকটবর্তী চিলা ক্যানাল থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। অভিযোগ ওঠে, রিসোর্টের ভিআইপি অতিথিদের ‘অতিরিক্ত পরিষেবা’ দেওয়ার তথা যৌন মিলনের জন্য চাপ দিচ্ছিল পুলকিত। আর এতে বাধা দেওয়াতেই তাঁকে খুন হতে হয়। সেই সময় ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে শুরু হয় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ। নারীর নিরাপত্তা, রাজনৈতিক প্রভাব এবং বিচারব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। চাপের মুখে বিনোদ আর্যকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিজেপি।
ঘটনার পর থেকেই অভিযোগ ওঠে, পুলিশ প্রথম দিকের তদন্তে গাফিলতি করে। অভিযুক্তের পরিবার রাজনৈতিক প্রভাবশালী হওয়ার ফলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে জনরোষের মুখে পড়ে পরবর্তীতে বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করা হয়। তদন্তশেষে প্রায় ৫০০ পাতার চার্জশিট দাখিল করে, যেখানে ৯৭ জন সাক্ষীর নাম ছিল। তাঁদের মধ্যে ৪৭ জন আদালতে সাক্ষী দেন। ৩ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (বর্তমানে ভারত ন্যায় সংহিতা) ৩০২ ধারা (খুন), ২০১ ধারা (প্রমাণ লোপাট), ৩৫৪এ ধারা (যৌন হেনস্থা), এবং অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (Immoral Traffic (Prevention) Act) ধারায় মামলা হয়।
আরও খবর: জানালা দিয়ে বান্ডিল বান্ডিল নোট ছুড়েও শেষরক্ষা হল না, ২ কোটি নগদ-সহ গ্রেফতার সরকারি ইঞ্জিনিয়ার!
রায় ঘোষণার আগে অঙ্কিতার (Ankita Bhandari) মা আদালতের কাছে ফাঁসির দাবি জানান। তিনি বলেন, “অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক। আমি উত্তরাখণ্ডবাসীর কাছে আবেদন জানাই, তাঁরা যেন আমাদের পাশে থাকেন এবং কোটদ্বারের আদালতে এসে আমাদের মনোবল বাড়ান।” মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–