Friday, November 14, 2025

বাংলার চা-শিল্প ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে: প্রধানমন্ত্রীর ডাহা মিথ্যের মুখোশ খুলল তৃণমূল

Date:

Share post:

বাংলার চা-শিল্প এবং চা-শ্রমিকদের বিষয়ে শুধুই মিথ্যাচার করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একের পর এক প্রমাণ দেখিয়ে, যুক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতে বাংলার চা শ্রমিকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীজির (Narendra Modi) মিথ্যাচারের রাজনীতির মুখোশ খুলে দিলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় (Ritabrata Banerjee)।

তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে মাদারিহাটে আদিবাসী সাধনা ময়দানে মিটিং করে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছিলেন, ডানকান (Duncan) গোষ্ঠীর সাতটি রুগ্ন চা বাগান অধিগ্রহণ হবে। তারপর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছিল বীরপাড়া, গ্যারগান্ডা, লঙ্কাপাড়া, ধুনচিপাড়া, মুন্সিপাড়া, হান্টাপাড়া, ডিমডিমা অধিগ্রহণ করে নেবে টি বোর্ড (Tea Board)। এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাদারিহাটে জয়লাভ করার পর বন্ধ হয়েছে, বাগানখোলা (tea garden) তো দূর অস্ত।

ঋতব্রতর কথায়, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগ গ্রহণ করলেন বন্ধু চা বাগানগুলি খোলার। বাংলায় একুশের ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, অসম ও বাংলা চা-বাগানের (tea garden) জন্য হাজার কোটি টাকা উন্নয়ন প্রকল্পে দেওয়ার। বাংলার চা বাগানের একটা পয়সাও আসেনি। আমরা নিশ্চিত, সামনের বছর যেহেতু আবার বাংলা বিধানসভা নির্বাচন, আবার বাজেটে চা বাগান নিয়ে গালভরা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা সংসদে এই বঞ্চনার কথা উল্লেখ করেছিলাম। কেন্দ্রীয় সরকারের সেন্ট্রাল পিএসইউয়ের অধীনে থাকা চারটি বাগান বানারহাট, কারবালা, চুনাভাটি ও নিউ ডুয়ার্সের শ্রমিকদের কেন মজুরি দেওয়া হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছিলাম। কেন্দ্রীয় সরকার তা স্বীকারও করে নেয়। বাগানগুলিতে গত দু’বছরের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকাও জমা পড়ছে না শ্রমিকদের। এমনকী বাগানগুলিতে স্কুলের বাসও (school bus) দেয়নি কেন্দ্র। ট্রাকের মধ্যে চারিদিকে বাঁশ বেঁধে বাচ্চারা প্রাণ হাতে করে স্কুলে যায়। চা বাগানে অনাবৃষ্টির সমস্যা ছিল, নেপালের (Nepal) নকল চা ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করে চা-পাতা তোলার কাজ এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল।

ঋতব্রত আরও বলেন, ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকার চলে যাবার সময় দিন প্রতি চা-শ্রমিকদের মজুরি ছিল ৬৭ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ২৫০ টাকা। এই মজুরি আরও বাড়তে পারত, কিন্তু কেন্দ্রের ঢিলেমিতে তা হয়নি। রাজ্য সরকার চা সুন্দরী প্রকল্পে জমির পাট্টা দেওয়া থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ক্রেস, অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছে। আবার মুখ্যমন্ত্রী বাসের বন্দোবস্তও করেছেন। তার ফলও মিলেছে মাদারিহাটি উপ নির্বাচনে। মাদারিহাটে একশোটি চা বলয়ের বুথের মধ্যে ৫৫টি বিজেপি জিতেছিল, ৪৫ টি জিতেছিল তৃণমূল। উপনির্বাচনে তৃণমূল বেড়ে হয়েছে ৮১, বিজেপি কমে হয়েছে ১৯। মোদির কথা আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের ফারাক মানুষ ধরে ফেলেছে। সেই ভাবেই মানুষ ভোট দেবেন। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে চতুর্থবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন। পর্যুদস্ত হবে বিজেপি।

এদিন ঋতব্রত আরও বলেন, সীমান্ত-পাচারের জন্য কেন্দ্র সর্বাংশে দায়ী। কয়েক বছর আগেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করেই সীমান্ত থেকে ৫০ কিমি পর্যন্ত বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়িয়ে নিয়েছে। সীমান্তরক্ষার দায় কেন্দ্রের। এ বিষয়ে রাজ্য দায় নেবে না।

spot_img

Related articles

পাশে প্রথম স্ত্রী! সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্মেন্দ্রর ভিডিয়ো প্রকাশ্যে, গ্রেফতার হাসপাতাল কর্মী

গত এক সপ্তাহ অভিনেতা ধর্মেন্দ্র-র জন্য উদ্বেগে গোটা দেশ। সোমবার ১১ নভেম্বর হঠাৎ তাঁর অসুস্থ হওয়ার খবরে তোলপাড়...

ওটা বিহারের সমীকরণ, বাংলায় জিতবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন: বিজেপিকে উড়িয়ে জবাব তৃণমূলের

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের (Bihar Assembly Election) এখনও পর্যন্ত ফলে ম্যাজিক ফিগার ছাড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছে NDA। আর এই ফল...

দক্ষিণবঙ্গে শীতের আমেজ চলবে, উষ্ণতা বাড়তে পারে উত্তরে!

পারদ পতনের ট্রেন্ড বজায় রেখে দক্ষিণবঙ্গে (Winter in South Bengal)শীতের আমেজ। শুক্রবার সকালে হিমেল ছোঁয়ায় টুপি সোয়েটার সঙ্গী...

ইডেনে খেলতে এসে ছুটির আবদার! গম্ভীরকে আবেদন কুলদীপের

অবসান ঘটিয়ে ইডেনে প্রথম একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন কুলদীপ যাদব , প্রথম সেশনে একটি উইকেটও তুলে নিয়েছেন। কিন্তু...