বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার সবসময় নারীর ক্ষমতায়নে জোর দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ভাবনা এবং পদক্ষেপের কথা এবার সিনেমার আকারে ধরা দিল। তৈরি হলো বিশেষ শর্ট ফিল্ম ‘পঞ্চায়েতের হাসবেন্ড’। রবিবার কোচবিহারের সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া (Jagadishchandra Barma Basunia) ও বিধায়ক সঙ্গীতা রায় (তিনি নিজেও এই শর্ট ফিল্মে অভিনয় করেছেন) তাঁদের সিতাইয়ের বাসভবনে এর আনুষ্ঠানিকভাবে রিলিজ করেন। শর্ট ফিল্মে বিধায়কের ভূমিকায় দেখা যাবে স্বয়ং বিধায়ককে। পরিচালক ও নির্দেশক পার্থসারথি রায় (Parthasarathi Roy)।

বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়েও পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের ব্রাত্য করে রাখার একটা যে প্রবণতা রয়েছে, এই স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবিতে যেন সেটাকেই তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমার গল্পে দেখানো হয়েছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত একজন পঞ্চায়েত সদস্যা মহিলা জনপ্রতিনিধিকে এলাকায় দিনের পর দিন জনসংযোগে দেখা যায় না। কারণ সেই পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর মাত্রাতিরিক্ত খবরদারি। তিনি তাঁর জনপ্রতিনিধি স্ত্রীর কাজে পুরোপুরি হস্তক্ষেপ করে তাঁকে জনগণের পরিসেবা প্রদান করার কাজ থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন। চরিত্রটি মনে করে, “আমি পঞ্চায়েতের হাসবেন্ড মানে আমিই পঞ্চায়েত”। ভোটারদের মধ্য থেকে এই অব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের পথ খুঁজতে থাকেন অন্যান্য বাসিন্দাদের পাশাপাশি প্রতিবাদী বেলাল মিয়াঁ। গ্রামের আর এক ভোটার লক্ষণের পরামর্শে ‘দিদিকে বলো’ ফোন নম্বরে অভিযোগ জানানো হয়। বাস্তবের মত সিনেমাতেও দেখা যায় এর ফলে কাজ হয়েছে। এরপর ওই পঞ্চায়েত সমস্যার স্বামীর কী পরিণতি হয় বা কীভাবে রাজ্য সরকারের জনকল্যাণমূলক পরিষেবার কথা গোটা সিনেমায় তুলে ধরা হয় তার জন্য অবশ্যই এই শর্ট ফিল্মটি দেখতে হবে। সিতাইয়ের বিধায়ক ছাড়াও ফিল্মটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন কোচবিহার জেলা পরিষদ সদস্যা শ্রাবণী ঝাঁ, দিনহাটা ১ ব্লকের গোসানিমারি ১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মানিক চন্দ্র বর্মন। কেন্দ্রীয় চরিত্রে পঞ্চায়েত প্রতিনিধি হিসেবে মৌলির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন দীপ্তি বর্মন। পঞ্চায়েতের হাসবেন্ড হিসেবে পর্দায় দেখা যাবে স্বয়ং ছবির পরিচালক ও নির্দেশক পার্থসারথি রায়কে। তাঁর কথায়, রাজ্য সরকার যেভাবে নারী অগ্রগতি ও ক্ষমতায়নকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে সেই সম্পর্কে সকলকে অবগত করতেই এই শর্ট ফিল্ম তৈরি করা হয়েছে।

এর আগে পার্থসারথির পরিচালনা ও নির্দেশনায় রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী, রূপশ্রী ইত্যাদি জনমুখী প্রকল্পের প্রচারে নির্মিত শর্ট ফিল্ম ‘ সামাজিক দায়ভার’ সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো সাড়া ফেলেছে। এই শর্ট ফিল্মের প্রসঙ্গে সিতাইয়ের বিধায়ক সঙ্গীতা রায় বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নারী ক্ষমতায়ন বিশ্ব দরবারে বন্দিত। কাজেই সেই বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এই শর্ট ফিল্মে একজন বিধায়ক হিসেবে অভিনয় করতে পেরে আমি গর্বিত। সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া জানান, পঞ্চায়েতে এখনও নারী জনপ্রতিনিধিদের একশো শতাংশকে কাজের ময়দানে দেখা যায় না বলা চলে। সমাজে নারীদেরকে আরও সচেতন হতে হবে। আসন সংরক্ষণের নিরিখে মহিলা জনপ্রতিনিধিদেরও পুরুষদের সমানতালে কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। এই শর্ট ফিল্ম সেক্ষেত্রে বিশেষ বার্তা বহন করবে নিশ্চয়ই।

–

–

–

–

–

–

–
–
–
–
–
–
–
–
–