রাজনৈতিক মতবিরোধ থেকে আদর্শগত মত পার্থক্য, দেশের স্বার্থে সব বিবাদকেই দূরে রেখে বিরোধীরা যে কেন্দ্রের সরকারের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত, পহেলগাম হামলার (Pahalgam attack) পরে তা প্রমাণ করে দিয়েছে দেশের সব বিরোধী দল। বিশ্বের একাধিক বৃহৎ দেশে গিয়ে পাক বিরোধী প্রচারে রাজনীতি ভুলে যে একাত্মবোধ দেখিয়েছেন প্রথম সারির রাজনীতিক থেকে চিন্তাবিদরা, তা বিশ্বের কাছে নজিরবিহীন। স্পেনে পৌঁছানো ভারতীয় প্রতিনিধিদলের শীর্ষে থাকা ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি (Kanimozhi) ভারতের রাষ্ট্রভাষা (national language) হিসাবে বিভেদের ঐক্য-কে তুলে ধরে আরও একবার বিরোধীদের রাজনৈতিক চিন্তাধারা স্পষ্ট করে দিলেন। একদিকে যেমন অর্জন করলেন প্রবাসী ভারতীয়দের সম্মান, তেমনই দেশের উপর হিন্দিকে (Hindi) জাতীয় ভাষা হিসাবে চাপিয়ে দেওয়ার কেন্দ্রের রাজনীতির মুখেও কার্যত ঝামা ঘষে দিলেন।

ভারতের জাতীয় ভাষা হিসাবে কোনও স্বীকৃত ভাষা যে নেই, তার কারণ হিসাবে দেশের বিভিন্ন সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে এতটুকু ভুল করেননি ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি। জনসংখ্যা বা কথিত ভাষার লোকসংখ্যা কেন্দ্রের বর্তমান সরকারের আমলে নির্ণয় আরও কঠিন হয়ে গিয়েছে। কারণ ২০১১ সালের পরে মোদি সরকারের জমানায় কোনও জনগণনাই হয়নি। সেখানেই কোনও একটি নির্দিষ্ট ভাষাকে যে জাতীয় ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া পক্ষপাতিত্ব, তা স্পেনে (Spain) স্পষ্ট করে দিলেন কানিমোঝি।

অন্যদিকে কেন্দ্রের মোদি সরকার দীর্ঘদিন ধরে গো-বলয়ের হিন্দি ভাষা দেশের উপর জাতীয় ভাষা হিসাবে চাপিয়ে দেওয়ার রাজনীতিকেও স্পেন থেকে স্পষ্ট বার্তা দিলেন ডিএমকে সাংসদ। কেন্দ্রের সেই নীতির প্রত্যক্ষ প্রতিবাদ করে গোটা দেশে মতামত গঠন করতে মাঠে নেমেছেন ডিএমকে নেতা তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন (M K Stalin)। কোনওভাবেই হিন্দিকে তামিলনাড়ুর উপর চাপিয়ে না দেওয়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ডিএমকে। সেই দলের প্রতিনিধি হিসাবে স্পেনে প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে আলাপচারিতায় যখন কানিমোঝি ঐক্য-কেই (Unity in Diversity) রাষ্ট্রভাষা (national language) হিসাবে তুলে ধরেন, তখন উপস্থিত প্রবাসী ভারতীয়রা হাততালিতে ভরিয়ে দেন গোটা হল। সেখান থেকেই স্পষ্ট দেশে তথা দেশের বাইরেও মোদি সরকারের চাপিয়ে দেওয়া ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে মেনে নিতে প্রস্তুতই নন দেশের মানুষ।

–


–

–
–

–
–

–

–

–

–

–
