বাংলায় সামাজিকতা ও উৎসব চিরকালই পাশাপাশি অবস্থান করে। কখনও উৎসবের মঞ্চে সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনের নজির দেখা যায়, আবার কখনও সামাজিকতার হাত ধরেই উৎসবে মেতে ওঠে মানুষ। এই ধারারই অপূর্ব মিশেল ফোরাম ফর দুর্গোৎসব (Forum for Durgotsab)। দুর্গাপুজোর আগে রক্তদান শিবিরের মাধ্যমে নিজেদের দায়বদ্ধতাকে প্রতিষ্ঠা করলেন তাঁরা। তবে রবিবারের রক্তদান শিবির (blood donation camp) ছাপিয়ে গেল ফোরামের আগের শিবিরের সাফল্যকে। এক নয়, এবারের শিবির আয়োজন হল দুই কেন্দ্রে। সেই সঙ্গে রক্তদাতার সংখ্যা ছাড়ালো চার হাজার।

রাজ্যের দুর্গাপুজো কমিটিগুলি রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় যেভাবে দুর্গোৎসবে মেতে ওঠে, তা থেকেই তাঁরা তাঁদের সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনের উৎসাহও পান। সেই প্রসঙ্গেই রক্তদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) দুর্গোৎসবে প্রত্যেকটি ক্লাবকে পৃষ্ঠপোষকতা করে সরকারি ও প্রশাসনিকভাবে যে জায়গায় গোটা পরিবেশটিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন, এই ফোরাম অত্যন্ত সুন্দরভাবে তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সামাজিক না না কাজকর্ম করছেন। ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে (blood bank) রক্তের ভীষণ চাহিদা। দুর্গাপুজো তো হবে, ভালো করে, হৈ হৈ করে হবে। তার সঙ্গে মানুষের সেবায় বিভিন্ন ক্লাব সারাবছর যা যা কর্মসূচি করেন ফোরাম এখন সেটাকে এক জায়গায় করে একটি ঐতিহাসিক রক্তদান শিবিরে পরিণত করেছে।

রবিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয় নেতাজি ইন্ডোরে। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সাংসদ মালা রায়, বিধায়ক দেবাশিস কুমার, মোহনবাগান ক্লাবের প্রতিনিধি দেবাশিস দত্ত প্রমুখ। আগেও ফোরামের রক্তদান শিবির এখানেই আয়োজন করা হত। তবে এবারের ফোরামের উদ্যোগের সাফল্য নিয়ে কুণাল ঘোষ আরও বলেন, ফোরাম প্রত্যেকবারকে ছাপিয়ে যায়। এবার বলছে ৪ হাজার। একটি জায়গায় ধরছে না। তাই এবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রেও আয়োজন করেছে। সেই সঙ্গে রক্তদান করার জন্য় মানুষের মধ্যে যে প্রতিযোগিতামূলক আচরণ এই শিবিরে দেখা যায়, তা নিয়ে মজার ছবি কুণাল বলেন, এবারেও উত্তর কলকাতার রক্তদাতা ছাপিয়ে যাবে দক্ষিণ কলকাতাকে।

ফোরামের আয়োজন সম্পর্কে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, মায়ের পুজোর আগে মানুষের পুজো করার জন্য তারা সবাই এক হয়েছেন। এখানে মানুষের পুজো হচ্ছে। মনে হয় ভারতের কোথাও নেই যেখানে এক জায়গায় ৪ হাজার মানুষ রক্তদান (blood donation) করছেন। পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়নি। তার আগেই তাঁরা মানুষের প্রস্তুতি শুরু করেছেন।


তারই পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী তথা শহরের পুজো উদ্যোক্তাদের সংঘের সদস্য হিসাবে অরূপ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এই ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তিনি উদ্যোগ না নিলে আমরা এত বড় জায়গা পেতাম না এই বিরাট উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করার জন্য। আমরা চাইব শুধু গিনেস বুক নয়, ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করুক এই রক্তদান শিবির।


–
–

–
–
–

–

–

–

–
