সোদপুরে নাবালিকা গৃহকর্মীর রহস্যমৃত্যুতে তোলপাড় রাজ্য। ঘটনার মূল অভিযুক্ত হাওড়ার বাঁকড়ার শ্বেতা ও তাঁর ছেলে আরিয়ান খান এখনও পলাতক। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তাঁদের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে এবং অনুমান করা হচ্ছে, দু’জনেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তদন্তে উঠে এসেছে, শ্বেতা এর আগেও একাধিকবার বিদেশ সফর করেছেন, বিশেষ করে ব্যাঙ্ককে গিয়েছেন বহুবার। কেন এবং কার সঙ্গে গিয়েছেন, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তদন্তকারী দল।

এই ঘটনার সূত্র ধরে নতুন বিস্ফোরক তথ্য সামনে এনেছেন হাওড়ারই নাজিরগঞ্জের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মাসুদ আলম খান। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে এবং আরিয়ানের বোন ঈশিকা একসঙ্গে পড়াশোনা করত। ঈশিকা আত্মহত্যা করে। মাসুদের অভিযোগ, ঈশিকাকে খারাপ পথে নামতে বাধ্য করছিল তাঁর মা শ্বেতা ও দাদা আরিয়ান। এই ঘটনার জেরে মাসুদের পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করে শ্বেতা। মাসুদের দাবি, এক কোটি টাকা না দিলে তাঁর ছেলেকে ধর্ষণের মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এমনকি পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে পরে শ্বেতা নিজেই ফোন করে জানায়, টাকা দিলে অভিযোগ তুলে নেবে।

তিনি আরও জানান, শ্বেতার নামে কলকাতায় চারটি অপরাধমূলক মামলা রয়েছে, যার মধ্যে একটি অস্ত্র আইনের অধীনে। অভিযোগ উঠেছে, প্রোডাকশন হাউসের আড়ালে পর্নোগ্রাফি ব্যবসায় জড়িত ছিল এই পরিবার।

সোদপুরের ফকিরপাড়ার প্রতিবেশী সোহেল বলেন, “মেয়েটি কাজ করত, এতটুকুই বলত ওরা। চার মাস আগে শেষবার দেখেছি। আর মেয়েটির মা মাঝরাতে বেরিয়ে যেত। আরিয়ান অত্যাচার করত। অত্যাচারের সময় জোরে মিউজিক চালাত।”


শ্বেতা ও আরিয়ানের বিরুদ্ধে তল্লাশি চালালেও এখনও পর্যন্ত তাঁদের খোঁজ মেলেনি। সূত্রের খবর, তাঁদের পাসপোর্টের ভিসা রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, দ্রুত তাঁদের গ্রেফতারের জন্য আন্তঃরাজ্য ও আন্তর্জাতিক স্তরে নজরদারি চালানো হচ্ছে।

এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও চাপানউতোর শুরু হয়েছে। উঠছে প্রশ্ন—একটি প্রভাবশালী চক্র কি দীর্ঘদিন ধরেই যৌন পাচার ও ব্ল্যাকমেলের চক্র চালিয়ে এসেছে? দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত ও মূল ষড়যন্ত্রকারীদের শাস্তির দাবি তুলেছে নানা মহল।
আরও পড়ুন – বিরোধী দলনেতার কুমন্তব্যের প্রতিবাদ! সন্দেশখালিতে পাল্টা সভার প্রস্তুতি তৃণমূলের

_
_
_

_

_

_

_

_
