বিধানসভায় (Assembly) দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের বিজেপি (BJP) সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার, অপরেশন সিন্দুর নিয়ে সেনাকে সম্মান জানিয়ে রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব আনা হয়। সেই সময় বলতে উঠে মোদি সরকারকে ধুয়ে দেন মমতা। তিনি স্পষ্ট জানান, পহেলগামের ঘটনা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার ব্যর্থতার উদাহরণ। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, কেন পাকিস্তান হামলা চালানোর পরেও পুঞ্চে গেলেন না প্রধানমন্ত্রী। এর পরেই তীব্র কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ভোট এলে পুলওয়ামা আসে, এটা যেন না হয়! মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “এই তো একটা সুযোগ ছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে দখল করার।”
এদিন বলতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, “আমরা সন্ত্রাসবাদের সমর্থক নই। সন্ত্রাসবাদের কোনও জাত, ধর্ম থাকে না। পহেলগামে যেভাবে পর্যটকদের খুন করা হয়েছে, শুধু শোকজ্ঞাপন করে প্রতিকার করা সবটা করা সম্ভব নয়। যাঁরা তাঁদের আত্মীয়দের খুইয়েছেন তাঁরা জানেন। প্রত্যেককে সম্মান শ্রদ্ধা জানাই। বাংলার তিনজন মারা গিয়েছেন। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। ওখানে একজন সংখ্যালঘু মানুষ হিন্দুদের বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়েছেন। তাঁকেও শ্রদ্ধা। আমরা ভারত মাতাকে তো প্রণাম জবাবই। কিন্তু বাংলাকে অবহেলা করার কোনও অবকাশ নেই। এখানে অনেকে বাংলায় থেকেও ভুলে যান। দিল্লিতে যখন সেশন হবে তখন বলবেন। সেনাকে সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে বাংলাই একমাত্র রাজ্য প্রথম করল। স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার ভূমিকা অনস্বীকার্য।“
মমতা বলেন, “পাকিস্তানকে একটা শিক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। এয়ারফোর্স-সহ স্থলে, জলে সর্বত্র তারা যেভাবে অ্যাকশন নিয়েছে স্যালুট জানাই। সন্ত্রাসবাদের কোনও ক্ষমা নেই। কয়েকজনকে জড়িয়ে মন্তব্য করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) একজন নেতা বলেছেন, মেয়েরা লড়াই করতে পারেননি ওখানে। পহেলগাম এত সুন্দর জায়গা। যাঁরা মারা গিয়েছেন তাদের পরিবার জিজ্ঞাসা করেছেন, যেসব জঙ্গিরা মেরে চলে গেল কই তাঁদের তো ধরা গেল না? এটাই তো সুযোগ ছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল করে নেওয়ার। কেন করা হল না? এর উত্তর চাইব না? ওখানে যখন বিপদে পড়ে লোকে সাহায্য চাইল একজন পুলিশ কেন ছিল না? ওরা আমেরিকার ঋণ পেল, বিশ্বব্যাংকের ঋণ পেল কী করে! কূটনৈতিক সম্পর্কে কোনও গ্যাপ হচ্ছে না তো? নিজেদের কমিউনিকেশন গ্যাপের জন্য বহিরাগত শক্তি ঢুকে যাচ্ছে না তো?“ ঘটনার এতদিন পরও কেন জঙ্গিদের ধরা গেল না, সেই প্রশ্ন আগেও তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পহেলগাম কাণ্ডের অপরাধীদের এখনও ধরা গেল না কেন? কাশ্মীরে যারা হামলা করল, কবে এসেছিল, কোথায় ছিল, কীভাবে এসেছে, সেগুলো আজও জানা গেল না কেন?” মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, “এই তো একটা সুযোগ ছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে দখল করার।”
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ঘরের ছেলেদের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়তে পাঠিয়েছি। আর আপনি নিজের লড়াই লড়তে পারছেন না। বিদেশমন্ত্রী, আর্মি চিফকে বাইরে পাঠানো উচিত ছিল। যে কাজটা আপনাদের করার কথা ছিল সেটা বিরোধী দল করেছে। পুলোয়ামতে যেভাবে রাজনীতি হয়েছে তা যেন আর না হয়। নির্বাচন আসলেই এসব করতে হয় ! আপনাদের পদত্যাগ করা উচিত।“
আরও খবর: ১৯ তারিখের মধ্য়ে স্নাতকস্তরে অনলাইন পোর্টাল চালু করা যাবে- বিধানসভায় আশা প্রকাশ শিক্ষামন্ত্রীর
সভায় অধিবেশনে থাকা BJP বিধায়কদের তীব্র কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা আমাকে হিন্দু শেখাচ্ছেন। আমিও হিন্দু ঘরের মেয়ে। গান্ধীজি, নেতাজিও হিন্দু ধর্মের। আপনারা ছদ্মবেশী নকল হিন্দু। আগে নিজের মাটিকে সম্মান জানান। তার পর গলা তুলবেন।“
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–