ভাগীরথী, পদ্মা ও ফুলহার নদীর ভাঙনে মালদা ও মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ২৫ হাজার বিঘা জমি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকারের আর্থিক সহযোগিতার অভাবে রাজ্যের অসহায়তা নিয়ে বিধানসভায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন সেচ ও জলপথ দফতরের মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া।
মন্ত্রী জানান, দীর্ঘদিন ধরেই নদীভাঙন রোধ ও জল প্রকল্পে কেন্দ্র কোনও সাহায্য করছে না। ২০১৩-১৬ অর্থবর্ষে এক টাকাও মেলেনি। পূর্বতন ৭৫:২৫ অনুপাতে অর্থ সাহায্যের নিয়ম প্রথমে ৫০:৫০ এবং পরে ৬০:৪০ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মন্ত্রী আরও বলেন বলেন, “আপনারা চান বাংলা পচে মরুক।” কেন্দ্রের এই মনোভাবের বিরুদ্ধে সরব হয়ে তিনি জানান, ছয়টি প্রকল্পের জন্য ৪৪৪৯ কোটি টাকার পরিকল্পনা পাঠানো হলেও আজ পর্যন্ত কেন্দ্র এক টাকাও দেয়নি। কেন্দ্রের এই অসহযোগিতার ফলে ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলি এখন ধ্বংসের মুখে।
মন্ত্রী বলেন, উত্তরবঙ্গে ভুটান থেকে আসা ৭৬টি নদীর জলপ্রবাহ জনজীবনে বিপর্যয় নামিয়ে আনছে। ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশনের অভাবে সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠেছে। তা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য সরকার সীমিত ক্ষমতায় সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি তাঁর।
ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রী জানান, কেন্দ্র কোনও সাহায্য না করায় রাজ্য বাজেট থেকে ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৫০০ কোটি টাকা দিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ১৫৫০ কোটি টাকার প্রকল্প আমরা বাধ্য হয়ে কমিয়ে ৬১০ কোটি টাকায় এনেছি। বিশ্ব ব্যাঙ্কের ঋণ থাকা সত্ত্বেও অনুমোদন নেই। বাংলাকে শুকিয়ে মারো, বাংলাকে ডুবিয়ে মারো— এটাই এখন কেন্দ্রের নীতি।”
পরিসংখ্যান দিয়ে মন্ত্রী আরও জানান, মালদায় ২১৮টি ও মুর্শিদাবাদে ১৯৫টি গ্রাম নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। ২৩৫৩ বিঘা জমি সম্পূর্ণভাবে ভাঙনের শিকার হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে রাজ্য সরকার ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ঘর দিয়েছে। ২৫৯৯টি পরিবারকে দেওয়া হয়েছে পাট্টা।
আরও পড়ুন – ৭৮ কেজির লাড্ডু কেটে ৭৮ বছরের জন্মদিন পালন লালুর
_
_
_
_
_
_
_
_