Friday, December 5, 2025

মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশে পাঠালো বিএসএফ! অমানবিক মুম্বই পুলিশ

Date:

Share post:

মুম্বইতে পরিযায়ী শ্রমিকের (migrant worker) কাজ করতে যাওয়া যে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার কারণ হবে, কল্পনাও করতে পারেনি মুর্শিদাবাদের মেহবুব শেখ। ধর্মের কারণে কোনও রকম আইনের তোয়াক্কা না করেই মারধরের পরে বাংলাদেশের সীমান্তের ওপারে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিএসএফ-এর (BSF) বিরুদ্ধে। আইন ভেঙে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দাকে বিএসএফ-এর হাতে তুলে দেওয়ার পরে মুম্বই পুলিশ (Mumbai Police) খবর দেয় ভগবানগোলা থানাকে। ততক্ষণে মেহবুবকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে বিএসএফ। এই পরিস্থিতিতে সহায় সম্বল, এমনকি মোবাইলও কাছে না থাকা মেহবুব কীভাবে ঘরে ফিরবেন, ভাবতেই পারছে না ভগবানগোলায় (Bhagabangola police station) তার পরিবার।

মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা থানার মহিশাসথালি পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মেহবুব শেখ মুম্বইতে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিল। সম্প্রতি মুম্বই পুলিশ ধর্মের ভিত্তিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের তল্লাশি ও বাংলাদেশি চিহ্নিতকরণ শুরু করেছিল। সেই সময় মেহবুবকে গ্রেফতার করা হয়। ১০ তারিখ গ্রেফতারির পরে তার বাড়ি থেকে মুম্বই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার সব ধরনের পরিচয়পত্র পাঠানো হয়। এরপরই পঞ্চায়েতের সূত্রে তাঁরা জানতে পারেন শুক্রবার রাতে মুম্বই পুলিশ (Mumbai Police) মেহবুবকে বিএসএফ-এর (BSF) হাতে তুলে দিয়েছে। সেখানেই তাঁদের প্রশ্ন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দাকে মুর্শিদাবাদ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও কেন বিএসএফ-এর হাতে তুলে দেওয়া হবে।

তবে এর থেকেও বড় ধাক্কা অপেক্ষা করছিল মেহবুবের পরিবারের জন্য। শিলিগুড়ি বিএসএফ-এর সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার যোগাযোগ করলে তাঁরা জানায় মুম্বই পুলিশ (Mumbai Police) মেহবুবকে তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছে। কিন্তু বিএসএফ-এর (BSF) হেফাজতে সে নেই। এমনকি কোথায় মেহবুব, তা জানাতেও অস্বীকার করে বিএসএফ। কার্যত দিশাহারা অবস্থায় মেহবুবের পরিবার প্রশ্ন তোলে, কোনও অপরাধ করে থাকলে মুম্বই পুলিশের ভগবানগোলা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত ছিল আগে। বিএসএফ-এর হাতে তুলে দিয়ে ভগবানগোলা থানার সঙ্গে পরে কেন যোগাযোগ করা হয়।

এরপরই বাংলাদেশের একটি নম্বর থেকে মেহবুব পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযোগ করে, বিএসএফ তাকে মারধর করে বাংলাদেশের সীমান্তের ওপারে ফেলে গিয়েছে। বাংলাদেশের (Bangladesh) কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে ও আশ্রয় দেয়। তার কাছে কোনও টাকা পয়সা বা মোবাইল নেই। ফলে তার সঙ্গে আবার কীভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হবে, তাও জানে না তার পরিবার। পরিবার স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বিধায়কের দ্বারস্থ হয়েছে নিরাপদে ঘরের ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে।

এই গোটা ঘটনায় প্রমাণিত যেভাবে বাংলাদেশের অবৈধ নাগরিকদের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি থেকে যে বাংলাদেশের ফেরৎ পাঠানোর কাজ চলছে, তা কতটা আইওয়াশ। আদতে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের বিচার করে নির্বিচারে চলছে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার, যার একটা বড় অংশ বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা (migrant worker)। মেহবুবের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে পুলিশ খোঁজ শুরু করতেই প্রকাশ্যে আসছে আরও একরম বেশ কিছু ঘটনা, যেখানে ভারতের বাসিন্দাদের জোর করে স্রেফ ধর্মের ভিত্তিতে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার কাজ করছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির পুলিশ ও বিএসএফ।

spot_img

Related articles

ঘরে বসে বিশ্বকাপ দেখবেন! জল্পনা বাড়ালেন মেসি

বছর ঘুরলেই ফুটবল বিশ্বকাপ। গতবারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা এবারও নামবে ফেভারিটের তকমা নিয়ে। তবে চর্চায় একজনই তিনি লিও মেসি(Messi)।...

প্রযুক্তিগত সমস্যায় রাজ্যে ওয়াকফ সম্পত্তির ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়ার গতি শ্লথ

কেন্দ্রের ফতোয়ায় সমস্যায় রাজ্যের ওয়াকফ সম্পত্তির ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী ‘উম্মিদ’ পোর্টালে সমস্ত ওয়াকফ সম্পত্তির রেকর্ড...

বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই আনন্দপুরের গুলশন কলোনির রংয়ের গুদাম

ফের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড (Fire) কলকাতার (Kolkata) বাইপাস সংলগ্ন আনন্দপুরের গুলশন কলোনিতে। শুক্রবার সকাল ১০ টা নাগাদ এলাকার একটি...

ফুটবলের মধ্য দিয়েই লক্ষ্য জনসংযোগ বৃদ্ধি, হুমায়ুন উদ্যেগে ডেবরায় এমএলএ কাপ

বাংলায় ফুটবল প্রতিভার অভাব নেই। শহর-গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্রতিভাবান ফুটবলাররা। স্থানীয়  ফুটবল প্রেমীদের উৎসাহ দিতে প্রতি বছরের...