মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশে পাঠালো বিএসএফ! অমানবিক মুম্বই পুলিশ

Date:

Share post:

মুম্বইতে পরিযায়ী শ্রমিকের (migrant worker) কাজ করতে যাওয়া যে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার কারণ হবে, কল্পনাও করতে পারেনি মুর্শিদাবাদের মেহবুব শেখ। ধর্মের কারণে কোনও রকম আইনের তোয়াক্কা না করেই মারধরের পরে বাংলাদেশের সীমান্তের ওপারে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিএসএফ-এর (BSF) বিরুদ্ধে। আইন ভেঙে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দাকে বিএসএফ-এর হাতে তুলে দেওয়ার পরে মুম্বই পুলিশ (Mumbai Police) খবর দেয় ভগবানগোলা থানাকে। ততক্ষণে মেহবুবকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে বিএসএফ। এই পরিস্থিতিতে সহায় সম্বল, এমনকি মোবাইলও কাছে না থাকা মেহবুব কীভাবে ঘরে ফিরবেন, ভাবতেই পারছে না ভগবানগোলায় (Bhagabangola police station) তার পরিবার।

মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা থানার মহিশাসথালি পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মেহবুব শেখ মুম্বইতে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিল। সম্প্রতি মুম্বই পুলিশ ধর্মের ভিত্তিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের তল্লাশি ও বাংলাদেশি চিহ্নিতকরণ শুরু করেছিল। সেই সময় মেহবুবকে গ্রেফতার করা হয়। ১০ তারিখ গ্রেফতারির পরে তার বাড়ি থেকে মুম্বই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার সব ধরনের পরিচয়পত্র পাঠানো হয়। এরপরই পঞ্চায়েতের সূত্রে তাঁরা জানতে পারেন শুক্রবার রাতে মুম্বই পুলিশ (Mumbai Police) মেহবুবকে বিএসএফ-এর (BSF) হাতে তুলে দিয়েছে। সেখানেই তাঁদের প্রশ্ন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দাকে মুর্শিদাবাদ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও কেন বিএসএফ-এর হাতে তুলে দেওয়া হবে।

তবে এর থেকেও বড় ধাক্কা অপেক্ষা করছিল মেহবুবের পরিবারের জন্য। শিলিগুড়ি বিএসএফ-এর সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার যোগাযোগ করলে তাঁরা জানায় মুম্বই পুলিশ (Mumbai Police) মেহবুবকে তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছে। কিন্তু বিএসএফ-এর (BSF) হেফাজতে সে নেই। এমনকি কোথায় মেহবুব, তা জানাতেও অস্বীকার করে বিএসএফ। কার্যত দিশাহারা অবস্থায় মেহবুবের পরিবার প্রশ্ন তোলে, কোনও অপরাধ করে থাকলে মুম্বই পুলিশের ভগবানগোলা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত ছিল আগে। বিএসএফ-এর হাতে তুলে দিয়ে ভগবানগোলা থানার সঙ্গে পরে কেন যোগাযোগ করা হয়।

এরপরই বাংলাদেশের একটি নম্বর থেকে মেহবুব পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযোগ করে, বিএসএফ তাকে মারধর করে বাংলাদেশের সীমান্তের ওপারে ফেলে গিয়েছে। বাংলাদেশের (Bangladesh) কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে ও আশ্রয় দেয়। তার কাছে কোনও টাকা পয়সা বা মোবাইল নেই। ফলে তার সঙ্গে আবার কীভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হবে, তাও জানে না তার পরিবার। পরিবার স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বিধায়কের দ্বারস্থ হয়েছে নিরাপদে ঘরের ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে।

এই গোটা ঘটনায় প্রমাণিত যেভাবে বাংলাদেশের অবৈধ নাগরিকদের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি থেকে যে বাংলাদেশের ফেরৎ পাঠানোর কাজ চলছে, তা কতটা আইওয়াশ। আদতে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের বিচার করে নির্বিচারে চলছে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার, যার একটা বড় অংশ বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা (migrant worker)। মেহবুবের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে পুলিশ খোঁজ শুরু করতেই প্রকাশ্যে আসছে আরও একরম বেশ কিছু ঘটনা, যেখানে ভারতের বাসিন্দাদের জোর করে স্রেফ ধর্মের ভিত্তিতে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার কাজ করছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির পুলিশ ও বিএসএফ।

spot_img

Related articles

নির্বিঘ্নে শেষ উচ্চমাধ্যমিকের প্রথমদিনের পরীক্ষা: প্রয়োজনে অতিরিক্ত OMR, জানালেন সংসদ সভাপতি

উচ্চমাধ্যমিকের তৃতীয় সেমিস্টারের প্রথমদিনের পরীক্ষা সম্পূর্ণ নির্বিঘ্নে ও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হল, জানালেন সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব...

এই সম্মান নেই কোনও ভারতীয় পরিচালকের: পরিচালক অনুপর্ণাকে অভিনন্দন মুখ্যমন্ত্রীর

ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা পরিচালকের সম্মান পেয়েছেন বাংলার নবীন পরিচালক অনুপর্ণা রায়। ‘সঙ্গস অফ ফর্গটেন ট্রিস’ (Songs of...

যোগীরাজ্যে বিজেপি সাংসদের বোনকেই মারধর! মারাত্মক অভিযোগ

কী কাণ্ড! বিজেপির ডবল ইঞ্জিন উত্তরপ্রদেশেই বিজেপি সাংসদের বোনকে অত্যাচার। আগেও বারবার অভিযোগ উঠেছে উত্তর প্রদেশে নারী নিরাপত্তা...

ফের সক্রিয় করা হল ইডি-কে: তল্লাশি ২২ জায়গায়

বাংলার উন্নয়নকে স্তব্ধ করতে ও বাংলাকে কালিমালিপ্ত করতে কেন্দ্রের বিজেপির সরকারের সবরকম চেষ্টা জারি রয়েছে। প্রতিবাদের কণ্ঠরোধ করতে...