দেশজুড়ে একের পর এক মর্মান্তিক ঘটনার ফলে ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে ভারতের উপর পাক সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি। হারিয়ে যাচ্ছে পহেলগাম হামলার দগদগে স্মৃতি। এর মধ্যেই মোদি সরকারের নীরবতা অসহিষ্ণু করে তুলছে ১৪০ কোটি ভারতীয়কে। ভারতীয়দের যে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর এখনও দিতে অক্ষম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিদেশ সফর থেকে ফিরে সেই পাঁচ প্রশ্ন তুলে ধরলেন তৃণমূল (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সেই প্রশ্নবাণ Retweet করে কেন্দ্রের নীরবতায় সরব তৃণমূল।

নিজের এক্স হ্যান্ডলে অভিষেক লেখেন, “পহেলগাম কাণ্ডের পর ৫৫ দিন পেরিয়ে গেলেও সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে বিরোধী দল— কাউকেই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলি তুলতে দেখা যায়নি। গণতন্ত্রের জন্য তা খুবই উদ্বেগজনক।“ মোদি সরকারের উদ্দেশে পাঁচটি প্রশ্ন এদিন ছুড়ে দেন তিনি।

এর পরিপ্রেক্ষিতেই মাঠে নামলেন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) শীর্ষ নেতৃত্ব। নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে প্রশ্নবাণ Retweet করে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। এদিন ব্রাত্য বসু ক্ষোভ প্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “যদি পেগাসাসকে বিরোধী দল, সাংবাদিক এবং বিচারকদের উপর গুপ্তচরবৃত্তির জন্য ব্যবহার করা যায়, তাহলে সন্ত্রাসীদের দমন করতে কেন এটি ব্যবহার করা হচ্ছে না? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এমন একটি সরকারের ভণ্ডামি উন্মোচন করেছেন যারা রাজনীতির জন্য প্রযুক্তির অপব্যবহার করে কিন্তু জনগণকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়।“

শশী পাঁজা লেখেন, “৫৫ দিন। ২৬ জন সাধারণ নাগরিক নিহত। ৪ জন সন্ত্রাসীর এখনও খোঁজ মেলেনি। পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার জন্য মোদি সরকারের জবাবদিহি কোথায়? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এমন প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন যেগুলোর উত্তর দিতে তারা খুব ভয় পান। গোটা জাতি সত্য জানতে চায়, নীরবতা নয়।“

ডঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এদিন এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “কোথায় মোদি সরকারের পদক্ষেপ? কোথায় পরিকল্পনা? নাকি যুদ্ধবিরতি এবং নীরবে সম্মত হয়ে আবেগকে উস্কে দেওয়ার জন্য এটি কেবল আরেকটি জুমলা ছিল?“

সাকেত গোখেল নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “মোদি সরকার জবাবদিহি কেন করছেন না? কেন দেশকে এখনও পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে অন্ধকারে রাখা হচ্ছে? মোদি সরকারের কাছে কিছু সোজা এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রইল যার উত্তর পাওয়া প্রয়োজন।“

কীর্তি আজাদ এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থাপিত প্রশ্নগুলি খুবই যুক্তিসঙ্গত এবং ভারতের জানা উচিত যে বিশ্বব্যাপী তার অবস্থান সুসংহত করার জন্য সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে? পহেলগাঁওয়ের সন্ত্রাসীরা কোথায়? কেন আইবি প্রধানের মেয়াদ বৃদ্ধি হল? কেন পদত্যাগ করা হচ্ছে না?“

সুস্মিতা দেব সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লেখেন, “পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা গোটা জাতিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল – ৫৫ দিন পরেও এই প্রশ্নগুলির উত্তর এখনও অধরা!“
সংসদ মহুয়া মৈত্র এদিন লেখেন, “ভারত সরকারকে এমন জরুরি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা এবং উত্তর পাওয়া প্রয়োজন। দেশকে সত্য বলার সময় এসেছে। আমাদের জবাব প্রয়োজন।“

কুণাল ঘোষ বলেন, “পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার ৫৫ দিন হয়ে গিয়েছে কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রের কাছে পাঁচটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। সন্ত্রাসবাদীরা কীভাবে সীমান্ত পেরিয়ে পহেলগামে প্রবেশ করে নিরীহ নাগরিকদের হত্যা করেছিল? কেন গোয়েন্দা সংস্থা ব্যর্থ হয়েছিল এবং জবাবদিহিতা দাবি করার পরিবর্তে কেন তার প্রধানের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল? সন্ত্রাসাবদীরা কোথায়? কেন আমরা পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলছি না? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম এই প্রশ্নটি উত্থাপন করেছিলেন। বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর কত দেশ ভারতকে সমর্থন জানিয়েছে?”

–
–
–
–