সমুদ্রতীরবর্তী দিঘা এবার শুধুই পর্যটনকেন্দ্র নয়, হয়ে উঠেছে নতুন তীর্থক্ষেত্র। আর সেই রূপান্তরের সাক্ষী হতে চলেছে ২৭ জুন। কারণ, সেদিনই দিঘা জগন্নাথধাম থেকে প্রথমবারের মতো শুরু হবে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। হাজার হাজার ভক্তের ভিড়ে দেবতা রথে চড়ে পৌঁছবেন তাঁর ‘মাসির বাড়ি’।

দিঘার আদি জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন নবনির্মিত মন্দিরই এখন মাসির বাড়ি। হিডকোর তত্ত্বাবধানে প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গড়ে উঠেছে এই ধর্মীয় পরিকাঠামো। মন্দির সংলগ্ন ঝাউবন, ঘাসের সবুজ গালিচা আর রঙিন কংক্রিট স্তম্ভে ইতিমধ্যেই উৎসবের আবহ তৈরি। রথযাত্রা উপলক্ষে দিঘায় ভক্তদের ঢল নামার সম্ভাবনা প্রবল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছেন, প্রায় দুই লক্ষ মানুষের সমাগম হতে পারে এই প্রথম রথযাত্রায়। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও রথযাত্রার শরিক হবেন বলে জানা গিয়েছে।

মাসির বাড়ি কমিটি জানিয়েছে, ২৮ জুন থেকে ৫ জুলাই ফেরত রথ পর্যন্ত প্রতিদিন জগন্নাথদেবকে ভোগ নিবেদন করার পর দুপুরে অন্নভোগ বিতরণ করা হবে দর্শনার্থীদের মধ্যে। খাবারে থাকবে ভাত, ডাল, সবজি, চাটনি ও পায়েস। বিশেষত ৫ জুলাই, উল্টোরথের দিন প্রায় ১০ হাজার ভক্তের জন্য অন্নভোগের আয়োজন থাকবে। ১৩ জন ব্রাহ্মণ ভোগ প্রস্তুতির দায়িত্বে থাকবেন। ভিড় সামলাতে মন্দিরের থেকে কিছুটা দূরে বসে খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

মন্দিরের সামনে বন দফতরের জমিতে প্রাথমিকভাবে ১০০টি দোকান বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। থাকছে পুণ্যস্মারক, খাবার, হস্তশিল্প ও মেলার আয়োজন। রথযাত্রা সফল করতে ইতিমধ্যেই একাধিক দফায় বৈঠক হয়েছে নবান্নে। মাসির বাড়ি কমিটির সদস্যরাও একাধিক প্রস্তুতি বৈঠক সেরে ফেলেছেন। মূল লক্ষ্য, জগন্নাথদেবের প্রথম দিঘা-রথে কোনও অপূর্ণতা না রাখা। এই প্রথমবারের রথযাত্রা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, দিঘার সংস্কৃতি ও জনজীবনের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় যোগ করবে বলেই মনে করছেন এলাকাবাসী ও প্রশাসন। দিঘার রথের চাকা ঘুরতে না ঘুরতেই বাংলা যেন আরও এক নতুন আস্থার যাত্রাপথে পা রাখছে—সমুদ্রের গর্জনে মিশছে রথের ঘণ্টাধ্বনি।


আরও পড়ুন – ইরান থেকে আর্মেনিয়ায় ভারতীয় পড়ুয়ারা, দিল্লি ফেরার প্রস্তুতি


_
_

_
_
_

_

_

_

_

_