করণ সিং ত্যাগীর ছবি ‘কেশরী চ্যাপ্টার-২’ (Kesari Chapter 2)-তে বাঙালি বিপ্লবীদের নাম পরিবর্তনে ষড়যন্ত্র দেখছে টলিপাড়ার একাংশ। ব্রিটিশ পিরিয়ডে জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে তৈরি অক্ষয় কুমার, আর মাধবন অভিনীত এই বলিউড ছবি সিনেমা হলে না চলায় সম্প্রতি OTT প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে। এরপরই তুমুল সমালোচনা ঝড় উঠেছে। সিনেমায় দেখা যায় মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর পদবি পাল্টে করা হয়েছে ক্ষুদিরাম সিং। বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষের নাম-পদবি বদলে গিয়ে হয়েছে শুধু ‘বারীন্দর কুমার‘। ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের জন্য তাঁদের বোমা বাঁধতে শিখিয়েছিলেন যে হেমচন্দ্র কানুনগো, তাঁর জায়গায় কৃপাল সিং নামে একটি চরিত্র নিয়ে আসা হয়েছে। এরপরই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন অভিনেতা রজতাভ দত্ত (Rajatava Dutta)। তিনি বলেন, অন্যায় করা হয়েছে। অন্য রাজ্যের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটলে ভাঙচুর পর্যন্ত হয়ে যেত। ইতিহাস নিয়ে কাজ করার সময় তাকে বিকৃত করা উচিত নয়। বাংলার স্বাধীনতার সংগ্রামীদের নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে তার প্রতিবাদ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ইতিহাস জানতে হলে এই সিনেমা না দেখে অন্য ছবি দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন এই প্রজন্মের প্রতিভাবান অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় (Ritabrata Mukherjee)।
‘কেশরী চ্যাপ্টার-২’ (Kesari Chapter 2)-তে যা দেখানো হয়েছে তার মধ্যে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছেন রজতাভ। অভিনেতা বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাসে বাংলার গৌরবময় অধ্যায় এবং লড়াইকে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন সেন্সর বোর্ড এর দায় এড়াতে পারে না। পাশাপাশি এর বিরুদ্ধে আইনের মতো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রজতাভ। অভিনেতা ঋতব্রত বলেন, ইতিহাস লেখে জয়ীরা। সেটাই যেন এই ঘটনা প্রমাণ করে দিল। যেভাবে ভোটে জেতার পর কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের ইচ্ছেমতো ইতিহাস মুছে ফেলা, বিকৃত করার চেষ্টা করছে নাম না করে তাকেই কটাক্ষ করলেন অভিনেতা। তিনি সরাসরি বলেন, কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন সেন্সর বোর্ডে যাঁরা আছেন তাঁরা কোন দল বা কোন মানুষের দ্বারা সমর্থিত সেটা দেখলেই বোধহয় বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে। অভিনেতার পরামর্শ, ইতিহাস জানতে হলে এই সিনেমা (কেশরী চ্যাপ্টার-২) দেখার কোনও প্রয়োজনই নেই। বাংলাতেই অনেক ভালো ভালো সিনেমা রয়েছে, যেখানে আমরা আমাদের অতীতের গৌরবময় অধ্যায় সম্পর্কে অনেক বেশি করে জানতে পারবো। এই প্রসঙ্গে অভিনেতা ‘এগারো’ সিনেমার কথাও উল্লেখ করেন। পাশাপাশি ইতিহাস বিস্মৃতির প্রবণতা থেকে দূরে সরে প্রাদেশিক ভাবনা যাতে না চাপিয়ে দেওয়া হয় সেই ব্যাপারেও বাঙালিকে সজাগ থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাকে হেয় করার চক্রান্ত এই প্রথম নয়, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বারবার নানাভাবে বাংলা ও বাঙালির অস্মিতা নিয়ে টানাপোড়েন চালিয়েছে। এবার তা সীমাহীন। অবিলম্বে ছবি সংশোধন করে রি-রিলিজের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–