ভিনরাজ্যে আটক পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ বলে চিহ্নিত করে পুশব্যাক করার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে নবান্ন। এবার কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় বার্তা পাঠাতে চলেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনের শীর্ষ মহলের নির্দেশ, এমন কোনও পদক্ষেপের আগে রাজ্যকে লিখিতভাবে জানানো আবশ্যিক।
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ ও উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক বাসিন্দাকে মহারাষ্ট্র পুলিশ আগরতলায় নিয়ে গিয়ে বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। রাজ্য সরকার এই ঘটনায় সম্পূর্ণ অন্ধকারে ছিল। পরে, ওই ব্যক্তিরা বাংলাদেশের ভিতর থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিষয়টি সামনে আসে। নবান্ন থেকে তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে শুরু হয় তাঁদের ফেরানোর প্রক্রিয়া।
এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা ও প্রশাসনিক স্তর থেকে কেন্দ্র এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ, “বাংলার বৈধ নাগরিকদের জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এটা শুধু বেআইনি নয়, বরং একপ্রকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ।”
নবান্নের কড়া অবস্থান অনুযায়ী, কোনও রাজ্যে বাংলার কেউ আটক হলে বা তাঁর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, তা প্রথমে জানাতে হবে রাজ্য সরকারকে। তারপর রাজ্য সেই ব্যক্তির যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেবে। প্রমাণ সাপেক্ষেই কেবল পুশব্যাকের সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
একজন সিনিয়র আমলা জানান, “রাজ্যের বাসিন্দাদের এভাবে নির্বিচারে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। এবার থেকে রাজ্য সরকার তা কোনওভাবেই বরদাস্ত করবে না। প্রয়োজনে প্রতিটি ঘটনায় আইনি পথে হাঁটা হবে।”
নবান্ন সূত্রে আরও খবর, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো হবে। একইসঙ্গে বিএসএফ ও সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকেও একই বার্তা দেওয়া হবে যে, ভবিষ্যতে কোনও একতরফা পুশব্যাক চালালে কড়া প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই বিষয়ে মানবাধিকার কর্মী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও মুখ খুলেছেন। তাঁদের মতে, “এ ধরনের ঘটনা ভারতীয় সংবিধানের অধীনে নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের সমান। এ নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত ও কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি।” সব মিলিয়ে, বাংলার নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় এবার আরও সক্রিয় ও কড়া অবস্থান নিতে চলেছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন – আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে আদ্যাপীঠে শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্স-এর উদ্যোগে বিশেষ কর্মশালা
_
_
_
_
_
_
_
_