জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে বারবার বন্যপ্রাণের হানা নতুন নয়। তবে এবার সেই চিরচেনা দৃশ্যপট বদলাচ্ছে। বনদফতরের সচেতনতা প্রচার এবং প্রশিক্ষণের ফলেই ডুয়ার্সে হাতি-মানুষ সংঘাতে এক নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে। শনিবার রাত থেকে রবিবার বিকেল পর্যন্ত ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকা—চা-বাগান ও শ্রমিক মহল্লাগুলিতে একাধিক হাতির ঢুকে পড়ার ঘটনায় সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হলেও, বড়সড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে গ্রামবাসী ও বনকর্মীদের যৌথ তৎপরতায়।

শনিবার গভীর রাতে আপালচাঁদ জঙ্গল থেকে একটি হাতি চেল নদী পেরিয়ে ঢুকে পড়ে ডামডিম চা-বাগানের নিচু লাইনে। এক শ্রমিক কাইলা তামাংয়ের বাড়ির রান্নাঘরে ঢুকে পড়ে সে। কিছু খাদ্যসামগ্রী খেয়ে ফেলে হাতিটি। যদিও আতঙ্ক ছড়ালেও গ্রামবাসীরা প্রশিক্ষণ অনুযায়ী শব্দ ও পটকার সাহায্যে হাতিটিকে জঙ্গলের দিকে ফেরাতে সক্রিয় হন। খবর পেয়ে মালবাজার থেকে রাজ্য বনদপ্তরের বন্যপ্রাণ শাখার কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে হাতিটিকে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেন। একই রাতে ডায়না জঙ্গল থেকে আরও একটি হাতি ঢুকে পড়ে নাগরাকাটার গ্রাসমোড় চা-বাগানে। কিছু ঘরবাড়ির ক্ষতি হলেও, বনকর্মীদের দ্রুত পদক্ষেপে ওই হাতিটিকেও নিরাপদে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়।

নাগরাকাটার লুকসান এলাকার ভুট্টাবাড়ি বস্তিতে আরও একটি হাতির দাপট দেখা যায়। এখানেও স্থানীয় বাসিন্দা ও বনকর্মীদের যৌথ প্রচেষ্টায় জঙ্গলমুখী করা হয় সেই বন্যপ্রাণীকে। রবিবার সকালে মাল ব্লকের নেপুছাপুর চা-বাগানের ১০ নম্বর সেকশনে এক দলছুট হাতিকে দেখা যায় ঘুরে বেড়াতে। জনসমাগম বাড়তেই মালবাজার বনদফতরের দল মাইকিং করে সবাইকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেন এবং সন্ধ্যার আগেই হাতিটিকে সুরক্ষিতভাবে জঙ্গলের পথে ফেরান।

বারবার হাতি-মানুষ সংঘাতের সাক্ষী থেকেছে ডুয়ার্স অঞ্চল। তবে বনদফতরের পরিশ্রম এবং সচেতনতার বার্তা যে কাজে আসছে, তারই স্পষ্ট নিদর্শন মিলেছে গত ২৪ ঘণ্টায়। প্রশাসন এবং গ্রামবাসীদের সমন্বয়ে বড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে—এটাই এখন নতুন দিশা দেখাচ্ছে গোটা এলাকায়।


আরও পড়ুন – মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্বোধন করা শিয়ালদহ-দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের রজতজয়ন্তী


_
_

_
_
_

_

_

_

_

_