তৎকাল টিকিট কাটতে হলে চাই আধার-যুক্ত আইআরসিটিসি (IRCTC) ইউজার আইডি—এই নতুন নিয়ম চালু করেছে রেলমন্ত্রক পয়লা জুলাই থেকে। উদ্দেশ্য ছিল অনলাইন টিকিট বুকিংয়ে স্বচ্ছতা ও দুর্নীতি রোখা। কিন্তু নতুন নিয়ম চালুর কয়েকদিনের মধ্যেই উঠে এল এক ভয়ঙ্কর ছবি। অভিযোগ, আধার যাচাই করা ইউজার আইডি বিক্রি হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়! তাও ৩৫০ টাকায়।
নিয়মে কড়াকড়ি বাড়লেও দুর্নীতিতে লাগাম পরেনি, বরং আরও সূক্ষ্ম রূপে মাথাচাড়া দিয়েছে অসাধু চক্র। রেল মন্ত্রকের কর্তাদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে এই নতুন ফাঁকফোকরের অপব্যবহার। তদন্তে উঠে এসেছে, কিছু নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি চক্র, যারা আধার যুক্ত IRCTC অ্যাকাউন্ট তৈরি করে এবং সেটি বিক্রি করছে উচ্চ মূল্যে। তৎকাল টিকিট কাটার জন্য সেই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই জালিয়াতি চলছে।
রেল সূত্রে খবর, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই রেল সুরক্ষা বাহিনী (RPF) ও মন্ত্রকের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নজরদারি চালানো হচ্ছে। এক রেল আধিকারিক জানিয়েছেন, “নতুন নিয়মে আধার সংযুক্তি বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল যাতে দালালচক্রদের দৌরাত্ম্য ঠেকানো যায়। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে এই নিয়ম চালু হয়েছিল, এই ধরনের চক্র সক্রিয় থাকলে তা ব্যর্থ হয়ে যাবে।” শুধু তাই নয়, আতশকাচের তলায় আনা হচ্ছে রেলের নথিভুক্ত এজেন্টদের একাংশকেও। কারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্তও নিতে পারে রেল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তির সাহায্যে অনিয়ম ঠেকাতে গেলে তারই ফাঁক গলে অনুপ্রবেশ রোধ করাটাও সমান জরুরি। না হলে সাধারণ রেলযাত্রীর হয়রানি আরও বাড়বে, এবং তৎকাল বুকিং ব্যবস্থার উপর আস্থা হারাবে মানুষ।রেলমন্ত্রক জানিয়েছে, অভিযুক্তদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সাধারণ যাত্রীদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে—কোনও ব্যক্তিগত তথ্য বা আইডি যেন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার না করা হয়। দুর্নীতি রুখতে আরও একবার বড় চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের রেল ব্যবস্থাপনা।
আরও পড়ুন – সিপিএমের আমলে উত্তরপাড়া কলেজে কারা চাকরি পেয়েছেন! বাম-কংগ্রেসে একতিরে নিশানা কল্যাণের
_
_
_
_
_
_
_
_
_
_