টানা বর্ষণ ও জলাধার থেকে হঠাৎ জল ছাড়ায় বিপর্যস্ত পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম। গালুডি জলাধার থেকে এক লক্ষ ৩২ হাজার কিউসেক জল ছাড়ায় বিপজ্জনকভাবে ফুলে উঠেছে সুবর্ণরেখা নদী। নদীর জলস্তর বেড়ে গোপীবল্লভপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লকের একাধিক গ্রামে পাড় ভেঙে পড়েছে। বহু ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে যাওয়ার মুখে। এই পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।
মন্ত্রী অভিযোগ করেন, “ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড সরকার রাজ্যকে না জানিয়ে এবং অনুমতি ছাড়া হঠাৎ বিপুল পরিমাণ জল ছেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বারবার প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, চিঠিও দিয়েছেন। আমি নিজেও অনুরোধ করেছি, কিন্তু কাজ হয়নি। কেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে চলছে। বাংলাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিপাকে ফেলাই এর লক্ষ্য।”
এদিন সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার, এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল, বিডিও-সহ প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন মন্ত্রী। প্রথমে গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের তপসিয়া অঞ্চলের কাতুয়া খাল এলাকায় যান তিনি। সেখানে দেখা যায়, কজওয়ের উপর দিয়ে জল বইছে, ফলে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। এরপর মালিঞ্চা গ্রামে যান, যেখানে সুবর্ণরেখার ভাঙনে বহু ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার মুখে।
মন্ত্রী জানান, অবিলম্বে প্রায় ১,২০০ মিটার নদীপাড়ে বাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন। সেজন্য সেচ দফতরের অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বলেন তিনি। পরে গোপীবল্লভপুর ১ নম্বর ব্লকের বাঘডিহা গ্রাম ও জালবেন্তি ডোমপাড়াও পরিদর্শন করেন। বাঘডিহার প্রায় ৫০০ মিটার রাস্তা ভারী বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত। জালবেন্তি ডোমপাড়ার প্রায় ৩০০–৩৫০ জন মানুষ নদীভাঙনের ফলে বিপন্ন অবস্থায় রয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, “সুবর্ণরেখার পাড়ে মাটি নেই, শুধুই বালি। ফলে জল এলেই বালি ধুয়ে নদীর গতিপথ বদলে যাচ্ছে। বাঁধের নিচে ঘূর্ণি তৈরি হচ্ছে, যা ভয়ঙ্কর বিপদের ইঙ্গিত দিচ্ছে।” পরিদর্শনের শেষে মন্ত্রী জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক করেন। ভাঙন রোধ, পুনর্বাসন ও ত্রাণ বিলি সংক্রান্ত বিষয়ে তৎপর পদক্ষেপের নির্দেশ দেন তিনি। পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক হলেও প্রশাসনের তরফে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন – ২১ জুলাই সমাবেশ সফল করার আহ্বানে কোন্নগরে তৃণমূলের বিশাল মিছিল ও সমাবেশ
_
_
_
_
_
_
_
_
_