IIM-জোকায় ক্যাম্পাসের ভিতরে ধর্ষণ নিয়ে প্রবল ধোঁয়াশা। হরিদেবপুর (Haridevpur) থানায় নিজেই ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন তরুণী-দাবি পুলিশের। সেই মতো গ্রেফতার হয়েছেন অভিযুক্ত মহাবীর তোপ্পান্নাবর ওরফে পরমানন্দ জৈন। এদিকে, নির্যাতিতার বাবা জানাচ্ছেন, ধর্ষণই নাকি হয়নি। তাঁর কন্যা গাড়ি থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, বিষয়টি নিয়ে বিস্তর ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। পুলিশের (Police) পদক্ষেপ নিয়েও বিরোধীদের প্রশ্ন তোলাকেও নিশানা করেছেন কুণাল। ঘটনা সম্পর্কে বিবৃতি দিয়ে আইআইএম-জোকা জানিয়েছে, নারী নির্যাতনের বিষয়টিকে তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এই বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

সোশাল মিডিয়ায় IIM-জোকার দ্বিতীয় বর্ষের অভিযুক্ত ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়ার সঙ্গে আলাপ হয় ওই তরুণীর। অভিযোগ, কাউন্সেলিং করাতে চেয়ে তাঁকে হস্টেলে ডেকে পাঠান ছাত্র। তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ১১.৪৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৩৫মিনিট পর্যন্ত হস্টেলে থাকেন ওই তরুণী। তাঁকে পিৎজা এবং মাদক মেশানো জল খাওয়ানো হয় বলে অভিযোগ। অসুস্থ বোধ করায় শৌচালয়ে যেতে চাইলে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। তরুণীর অভিযোগ, তাঁকে মারধর করেন ওই যুবক। তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। হুঁশ ফেরে রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে। প্রথমে ঠাকুরপুকুর থানায় যান। সেখান থেকে হরিদেবপুরে থানায় গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গতকাল হরিদেবপুর থানায় এক মহিলা অভিযোগ করেছেন যে আইআইএম-সি ক্যাম্পাসের ভিতরে এক ছাত্র তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। মামলা দায়েরের পর, অভিযুক্ত মহাবীর তোপ্পান্নাবর ওরফে পরমানন্দ জৈনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হলে ১৯ তারিখ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নির্যাতিতার বাবার বয়ানে। তিনি বলেন, “রাত ৯.৩৪-এ মেয়ে ফোন করে বলে, গাড়ি থেকে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে যায়। লোকেশনটা বুঝতে পারেনি। আমি খুঁজতে গিয়েছিলাম। রেসকিউ করতে। ওখানে ছিল না। খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারলাম পিজিতে আছে। নিউরোলজি ডিপার্টমেন্ট ওখানে যাই। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি হরিদেবপুর থানার পুলিশ ওকে রেসকিউ করে রেখে দিয়েছে। ওখানে যাই। পুলিশকে বলি। ওরা একটা অভিযোগের কথা বলেছে। মেয়ের সঙ্গে কথা বলে জানলাম এরকম কোনও ঘটনা বলছে ঘটেনি।” তাঁর আরও দাবি, “পুলিশ বলছে এফআইআর করেছি। একটা ছেলেকে অ্যারেস্ট করেছি। আমি মেয়ের সঙ্গে কথা বলে জানলাম মেয়ে বলল না এরকম কিছু হয়নি। আমাকে পুলিশ বলেছিল মেডিক্যালে গিয়ে এই বলবেন। আমি সেগুলো কিছু বলিনি।” ধৃত ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়ার সঙ্গে কী তরুণীর কোনও সম্পর্ক আছে? উত্তরে ‘নির্যাতিতা’র বাবা বলেন, “কোনও সম্পর্ক নেই।”

এই বিষয়ে কুণাল ঘোষ বলনে, কর্নাটক থেকে এই রাজ্যে একটি ছাত্র পড়তে এসেছে। আইআইএম-জোকার ক্যাম্পাসে একটি ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সেটি নিয়ে বিস্তর ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। পুলিশ অভিযোগ শুনে পদক্ষেপ করেছে। এই নিয়েও বিরোধীদের আপত্তি! এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলকে জড়ানোর মানে কী! এটার সঙ্গে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কী সম্পর্ক থাকতে পারে! বিজেপিশাসিত রাজ্যের একের পর এক নারী নির্যাতনের উদাহরণ টেনে কুণাল বলেন, গেরুয়া শিবির আগে এই সবের জবাব দিক।
আরও খবর: দুর্ঘটনার দায় পাইলটদের উপর চাপানো! প্রশ্ন তুলে চিঠি সংগঠনের

এই বিষয় নিয়ে আইআইএম-জোকা কর্তৃপক্ষ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, বিষয়টিকে তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। পুরো ঘটনা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই সম্পর্কে কোনও গুজব ছড়ানোর বিষয়ে সতর্ক থাকার কথাও বলা হয়েছে আইআইএম-জোকার পক্ষ থেকে।

–

–

–
–

–

–
–
–
–
–