বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে অতীত থেকে বর্তমানে শিল্পক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বেঙ্গল ন্যাশানাল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। একদিকে দায়িত্ব নিয়ে তাঁরা যেমন বাংলার শিল্পকে আজও এগিয়ে নিয়ে চলেছেন, তেমনই বর্তমান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় উৎসাহ পেয়েছেন সেই কাজকে আরও সফল রূপ দিতে। রাজ্যের তরফে তাঁদের প্রতি আরও কীভাবে সহযোগিতা সম্ভব, বিএনসিসিআই-এর (BNCCI) ১৩৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (AGM) সেই বার্তা তুলে ধরলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja)। সেই সঙ্গে বাংলার শিল্পকে তুলে আনতে তাঁদের আরও উদ্যোগী হওয়ার বার্তা দিলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।

কলকাতার অভিজাত হোটেলে সোমবার অনুষ্ঠিত হয় বিএনসিসিআই-এর ১৩৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা। সেখানে সংগঠনের পক্ষ থেকে বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যের সহযোগিতার ও শিল্পে উন্নয়নের বার্তা তুলে ধরা হয়। সেখানেই বিএনসিসিআই-এর ইতিহাস মনে করিয়ে প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ মনে করিয়ে দেন, বিএনসিসিআই স্বদেশীয়ানা ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতার দিক থেকে ব্রিটিশ অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জ করার জমিটা আপনাদের এই বণিকসভার মাটি থেকে আপনারা তৈরি করেছিলেন। ফলে বাংলার বিএনসিসিআই-এর ইতিহাসের সঙ্গে বাংলার শিল্প-বাণিজ্য-অর্থনীতিতে একটা প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে যা পরোক্ষভাবে সামগ্রিক স্বাধীনতা সংগ্রামকে উজ্জীবিত করেছে, পায়ের তলার জমি তৈরি করে দিয়েছে।

বাংলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই শিল্পমহলের চিন্তাধার বাম আমলে থমকে গেলেও বর্তমান সরকারের হাত ধরে তা পুণরায় উজ্জীবিত। রাজ্যের শিল্প বাতাবরণের পালাবদলের সেই বার্তা দিয়ে মন্ত্রী শশী পাঁজা তুলে ধরেন, রাজ্য সরকারের কাজ নীতি ঘোষণা করা যা সহায়ক হিসাবে দাঁড়াবে ব্যবসা বাণিজ্য। সরাসরি রাজ্য ব্যবসার মধ্যে থাকবে না। সরকার বাণিজ্যকে উৎসাহ দেবে। এবং সেই উৎসাহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) দিচ্ছেন। অনেক কুৎসা শুনবেন। কিন্তু ২০১১-র চিত্র আপনাদের মতো প্রতিষ্ঠান ভালো বুঝবে। কী ছিল? জঙ্গি ট্রেড ইউনিয়নিজম। ফ্যাক্টরিগুলোতে তালা পড়া। অনেক বড় প্রতিষ্ঠান কীভাবে হেনস্থা হয়েছে। বনধ, কর্মবিরতি, ধর্মঘট ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এগুলোকে বন্ধ করেছেন। সমস্যা থাকে। সেগুলো আপনারা যখন বলছেন সরাসরি গ্রিভান্স পোর্টালে দিচ্ছেন। আমরা সরাসরি কথা বলে চেষ্টা করছি সেগুলোকে জটিলতামুক্ত করতে।

সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি শিল্প বান্ধব বঙ্গ তৈরির পথ সুগম কীভাবে হয়েছে তা বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলার হ্যান্ডলুম, টেক্সটাইল, হস্তশিল্পের একটা নাম রয়েছে। সেদিন মুখ্যমন্ত্রী শিল্পান্ন উদ্বোধন করলেন। সেখানে এই আউটলেটগুলোই রয়েছে। কোনও মুখ্যমন্ত্রী এভাবে অভিজাত বাড়ি তৈরি করেননি। অভিজাত এরকম বাড়িতে গ্রামে বা ব্লকে তৈরি হওয়া জিনিস শো-কেস করা। এই কাজটা নিঃশব্দে হচ্ছে। জেলাশাসকদের বলা হচ্ছে কর্মতীর্থ তৈরি করুন ও তাদের আগে জায়গা দিন। নির্দিষ্টভাবে শপিং মলে এদের জায়গা দেওয়াহবে। মূলস্রোতে আনার প্রয়াস।

আরও পড়ুন: নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জেরবার দক্ষিণবঙ্গ, সুদিন ফেরার অপেক্ষা উত্তরবঙ্গ

সেই প্রয়াসে বিএনসিসিআই-কে আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী তাঁদের প্রথম তৈরি করা বাণিজ্য মেলার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। সেই সঙ্গে কুণাল ঘোষ এই উদ্যোগে আরও বেশি করে বণিক মহলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গ্রাম থেকে ট্র্যাডিশনাল শিল্পকে আমার আনব। নেতৃত্ব দেবেন আপনারা। বিএনসিসিআই (BNCCI), যারা ১৮৮৭ সাল থেকে বাংলার ট্র্যাডিশনাল শিল্পকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাঁরাই আনবেন।

–

–
–

–

–
–
–
–